প্রতীকী ছবি।
স্কুল খোলা নিয়ে ‘অযথা’ বিতর্ক নয়— সরাসরি না বলেও বুঝিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এ ব্যাপারে রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া একটি জনস্বার্থ মামলা আদালত শুধু খারিজই করেনি, মামলাকারীকে পাল্টা ভর্ৎসনাও করেছে। ওই মামলাকারী পড়ুয়াদের টিকাকরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে অনলাইন ক্লাস জারি রাখার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। আদালত জানতে চেয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীদর নিয়ে মামলাকারীর চিন্তা কি তাদের অভিভাবকের থেকেও বেশি?
সোমবার হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে ওই মামলা। শুনানি চলাকালীন বেঞ্চ কার্যত মামলাকারীর আইনজীবীকে তুলোধনা করেছে। এমনকি প্রকাশ্যেই মামলাকারীর আইনজীবীকে প্রশ্ন করেছে, মামলাকারীর নিজের সন্তান আছে কি না এবং তারা স্কুলে যায় কি না!
হাই কোর্টে ওই মামলা নিয়ে মামলাকারীর পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী ঋজু ঘোষাল। তিনি আদালতকে বলেন, রাজ্য অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসতে বলেছে ঠিকই, তবে তাদের প্রত্যেকের টিকাকরণ হয়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়। তাঁর যুক্তি ছিল, যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যে সব ছাত্র-ছাত্রীর জন্ম তারা টিকা পাবে না, তাই পড়ুয়াদের অনেককেই টিকা না নিয়ে স্কুলে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এর জবাবেই আদালতের দুই বিচারপতি জানতে চান, ‘‘আপনি কি অভিভাবকদের থেকেও বেশি চিন্তিত?’’ আদালত এর পর আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ‘‘আপনার বাড়ি কোথায়? আপনার সন্তান আছে? তারা স্কুলে যায় না?’’ এমনকি মলাকারীর সমর্থনে অন্য কোনও স্কুল পড়ুয়ার অভিভাবকের বক্তব্য নেই কেন, তা-ও জানতে চেয়েছে আদালত।
প্রধান বিচারপতি এর পর বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দেন মামলাকারীর আইনজীবীকে লক্ষ্য করে। তিনি জানতে চান, ‘‘এই বিষয়ে আপনার এত আগ্রহ কেন?’’ তার পরেই প্রশ্ন করেন, ‘‘কত জন ছাত্রের টিকা হয়নি, তা কি আপনি জানেন?’’ পরক্ষণেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘যদি না জানেন, তবে কীসের ভিত্তিতে মামলা করলেন? আপনার সঙ্গে কোনও অভিভাবক নেই কেন? পর্যাপ্ত তথ্য না নিয়েই বা কেন এসেছেন?’’
পরে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় মামলাটি বাতিল করার অনুরোধ জানান। তিনি এমনও বলেন, ‘‘আমি সরস্বতী পুজোর দিন গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে পুজো কাটানোর সুযোগ হয়েছে। বুঝতে পেরেছি, ভার্চুয়াল বা অনলাইন বা ডিভাইসে ক্লাস হয় না।’’ কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুরও জানান তিনি স্কুল খোলার পক্ষে। এর পরেই মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy