—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘‘সঞ্জীব যদি অর্জুন হন, কলতান তবে কৃষ্ণের ভূমিকা পালন করেছেন!’’ কলকাতা হাই কোর্টে এমনই জানালেন রাজ্যের আইনজীবী। অন্য দিকে মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। বৃহস্পতিবারের সুরাহা হল না কলতান-মামলার।রায় ঘোষণা আপাতত স্থগিত রাখল আদালত।
বৃহস্পতিবার শুনানিতে কলতানের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘উনি তো কোনও হামলার নির্দেশ দেননি। একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে হামলার কথা বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, নির্দেশ মতো কাজ করতে। কিন্তু কোনও নির্দেশ তো দেওয়া হয়নি!’’ তখনই রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘‘সঞ্জীব অর্জুনের ভূমিকা পালন করেছেন। উনি বিভ্রান্ত ছিলেন, কী করবেন বুঝতে পারেননি। তখনই কৃষ্ণের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন কলতান!’’ তাঁর আরও যুক্তি, ‘‘গত ১০ মাসে দু’জনের ১৭১ বার ফোনে কথা হয়েছে। অচেনা দুই ব্যক্তির মধ্যে ফোনে এত বার কথা হওয়া অসম্ভব! অর্থাৎ, দু’জন একে অপরকে যথেষ্ট ভাল করেই চিনতেন। উভয়েই পুলিশের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন যে অডিয়োয় তাঁদেরই গলা শোনা যাচ্ছে।’’ এর পরেই বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘‘অডিয়োতে সত্যিই আমার মক্কেলের গলা শোনা যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করব না।’’
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের পর্যবেক্ষণ, ‘‘পেনড্রাইভটি যে ভাবে পাওয়া গিয়েছে তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। সেটি যাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল না কেন?’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘আন্দোলনরত চিকিৎসকদের রক্ষা করা সবার কর্তব্য। ফলে গোটাটাই তদন্ত করা হোক।’’ বিচারপতি ভরদ্বাজের প্রশ্ন, ‘‘যদি হামলার ছক কষা হয়েই থাকে, তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন? পুলিশ কেন কোনও পদক্ষেপ করল না? ১৮-১৯ বছরের ছেলেমেয়েদের তুলে আনা হচ্ছে। ওদেরও ভবিষ্যৎ রয়েছে!’’
প্রসঙ্গত, আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার চক্রান্ত সংক্রান্ত একটি ফোনালাপের অডিয়ো ক্লিপ (যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে প্রথমে জনৈক সঞ্জীব দাস ও পরে বাম যুবনেতা কলতান দাশগুপ্তকে গ্রেফতার করে বিধাননগর পুলিশ। কলতানের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে ও তাঁর জামিনের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা করা হয়। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে বুধবারও ওই মামলার শুনানি হয়েছে। কলতানের আইনজীবী বিকাশরঞ্জনের বক্তব্য ছিল, ‘‘আগে গ্রেফতার করে তার পরে গ্রেফতারির সমর্থনে যুক্তি খোঁজা হয়েছে।’’ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের পাল্টা বক্তব্য ছিল, ‘‘এই অভিযোগ মিথ্যা। বরং, ধৃত সঞ্জীবই পুলিশকে জানিয়েছিলেন কলতানের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই কলতানকে গ্রেফতার করা হয়।’’ দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এ বিষয়ে রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলব করে হাই কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy