ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ডাক্তারদের ধর্নায় আদালতে আপত্তি করেছিল রাজ্য সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলেই ধর্না দিতে পারবেন চিকিৎসকেরা। এ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার যে আপত্তি তুলেছিল, তা মানল না কলকাতা হাই কোর্ট। ধর্নার অনুমতি দেওয়া হয়েছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্সকে। তবে সেই সঙ্গে বেশ কিছু শর্তও তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং থেকে অন্তত ৫০ ফুট ছেড়ে ধর্নায় বসতে পারবেন চিকিৎসকেরা। একসঙ্গে ২০০-২৫০ জনের বেশি মানুষ সেখানে জমায়েত করতে পারবেন না। ধর্না চলবে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আদালত বৃহস্পতিবারই মৌখিক ভাবে ধর্মতলায় ডাক্তারদের ধর্নার অনুমতি দিয়ে দিয়েছিল। তবে বলা হয়েছিল, রাজ্যের বক্তব্য বিবেচনা করে ধর্নার প্রয়োজনীয় শর্ত নির্দিষ্ট করা হবে শুক্রবার। উচ্চ আদালতের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সেই মামলার শুনানি ছিল। শুক্রবার আদালত জানিয়েছে, ধর্না চলাকালীন ২০০-২৫০ জনের বেশি লোকের জমায়েত হয়ে গেলে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে ডাক্তারদের। ধর্নামঞ্চ থেকে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা যাবে না। উৎসবের মরশুমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, এমন কিছু করা যাবে না।
মেট্রো চ্যানেলে ধর্নার জন্য ৪০ ফুট লম্বা মঞ্চ তৈরি করতে হবে, জানিয়েছে আদালত। সেই মঞ্চ অন্তত ২৩ ফুট চওড়া হবে।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং কর্তব্যে গাফিলতি মামলায় ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। বিচারের দাবিতে নতুন করে আবার পথে নেমেছেন চিকিৎসকেরা। সিবিআই চার্জশিট দিতে না-পারায় এই মামলায় ধৃত আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এরই প্রতিবাদে ধর্মতলায় ধর্না কর্মসূচি করতে চেয়েছিলেন প্রতিবাদী চিকিৎসকদের একাংশ। পুলিশের অনুমতি না-পেয়ে তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালত তাঁদের ধর্নার অনুমতি দিল। ডাক্তারদের সংগঠনের হয়ে মামলাটি লড়েছেন আইনজীবী শামিম আহমেদ।
বৃহস্পতিবার আদালত মৌখিক ভাবে ডাক্তারদের ধর্নার অনুমতি দিলেও শুক্রবার সকালে আবার তাতে আপত্তি তোলে রাজ্য। ফলে ধর্না নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। রাজ্যের বক্তব্য, ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে ধর্মতলা এলাকায় ভিড় থাকে। তার মাঝে মেট্রো চ্যানেলে ডাক্তারেরা ধর্নায় বসলে সমস্যা হবে। বিকল্প হিসাবে ওয়াই চ্যানেলে ধর্নার প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘‘২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর বাদ রেখে কর্মসূচি করা হোক। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এই কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ২০০ লোক নিয়ে কর্মসূচি বলা হলেও বেশি লোক হলে কেউ আটকাতে পারবে না। এই কর্মসূচিতে ভিড় কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। না হলে ওয়াই চ্যানেলে কর্মসূচি করা হোক। সেখানে এক হাজার লোকের জমায়েত হতে পারে।’’
এর পরেই বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, ‘‘গতকাল আমি কর্মসূচির অনুমতি দিয়েছিলাম। কর্মসূচির জন্য চিকিৎসকরা মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই অবস্থায় রাজ্যের আপত্তি ঠিক নয়। সাত ফুট উঁচু গার্ডরেল করে দিন। তার মধ্যে সকলে থাকবেন। বাইরের কাউকে সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না।’’ ২৪ এবং ২৫ তারিখ বাইরের কাউকে ধর্নাস্থলে যেতে নিষেধ করা হোক, জানিয়েছেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, শুক্রবার থেকেই ধর্মতলায় ধর্নায় বসছে ডাক্তারদের সংগঠন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy