Advertisement
E-Paper

নাবালিকার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করুক মেডিক্যাল বোর্ড, গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে: হাই কোর্ট

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চারটি বিভাগের দক্ষ চিকিৎসকেরা নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করবেন। মেডিক্যাল বোর্ডে রাখতে হবে শিশুরোগ এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে। আগামী সোমবার এই মামলাটি শুনবে আদালত।

Calcutta High Court ordered to form a medical board on a abortion plea of a girl

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ১০:৫১
Share
Save

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া ধর্ষিত নাবালিকার গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের নির্দেশ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চারটি বিভাগের দক্ষ চিকিৎসকেরা নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করবেন। মেডিক্যাল বোর্ডে অবশ্যই রাখতে হবে শিশুরোগ এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে।

বিচারপতি জানান, সোমবার আদালত খুললে প্রথম এই মামলাটি শোনা হবে। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চিফ মেডিক্যাল অফিসার এবং তাম্রলিপ্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে নাবালিকার স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

১১ বছরের মেয়ে ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। জানতে পেরে গর্ভাবস্থার ২৪ সপ্তাহ পরে মেয়ের গর্ভপাত করানোর অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা-মা। ওই নাবালিকা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। কয়েক মাস আগে তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতনের পাশাপাশি গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই নাবালিকার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়টি এত দিন জানতে পারেনি পরিবার। গত মাসে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তারা তা জানতে পারে। নাবালিকার মানসিক এবং শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্টের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। এর পর হাসপাতালের তরফে তাদের জানানো হয়, উচ্চ বা শীর্ষ আদালতের অনুমতি ছাড়া এই গর্ভপাত কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।

আইন অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কোনও মহিলা, নাবালিকা বা নাবালিকার পরিবার ২০ সপ্তাহ সময় পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে চেয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিশেষ পরিস্থিতিতে তা ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ানো যায়। তার পরে গর্ভপাত করাতে গেলে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। বুধবার এই মামলার শুনানিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। নাবালিকার বয়স নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেন তিনি। ওই পরিবারের আইনজীবী প্রতীক ধর তাঁর সওয়ালে জানিয়েছিলেন, মেয়েটি একটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। এখন সন্তান জন্ম দেওয়ার মতো তার মানসিক অবস্থা নেই। ২৪ সপ্তাহের পরে গর্ভপাতের নজির কম। কিন্তু নাবালিকার পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আদালত অনুমতি দিক।

প্রতীকের বক্তব্য ছিল, নাবালিকার পরিবারটি আর্থিক ভাবে খুবই দুর্বল। সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও কম। আইন সম্পর্কে তাঁরা একেবারেই ওয়াকিবহাল নন। সেই কারণেই গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানাতে পর্যন্ত দেরি করেছেন তাঁরা। গত মাসে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের সাহায্যে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। ওই নাবালিকা এখন একটি হোমে রয়েছে। সে মা হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই। আদালতে পরিবারের দাবি, মেয়ে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে শক্ত নয়। একটি ১১ বছরের মেয়ের পক্ষে সন্তানের ভার নেওয়া সম্ভব নয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই নাবালিকার শারীরিক পূর্ণতা আসেনি। মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে, অন্তঃসত্ত্বার বয়স কম হওয়ায় গর্ভস্থ সন্তানের ওজন কম এবং অন্য কিছু সমস্যা রয়েছে।

শুধু সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়াই নয়, এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর কেউ মা হলে সমাজের একাংশ ভাল চোখে দেখে না। নাবালিকার নিজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, সে কী ভাবে সন্তানের দায়িত্ব নেবে? আদালতের কাছে এই প্রশ্ন তোলা হয় পরিবারের তরফে। বুধবার সকালে বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণের পরেই দ্রুত শুনানির আর্জি মঞ্জুর হয়। দুপুর ২টোয় শুনানির সময় বিচারপতি ভট্টাচার্য জানান, মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি আইনের (১৯৭১) ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী ২৪ সপ্তাহ পরে গর্ভপাতের বিষয়ে বাধা রয়েছে। তার পরেও নাবালিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে আদালত চিন্তিত। তাই কোনও সময় নষ্ট না করে বৃহস্পতিবার সকালেই এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হবে।

Calcutta High Court Abortion Minor Girl Medical BOard

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}