Advertisement
E-Paper

কী লুকোতে চাইছেন? এসএসসির চেয়ারম্যানকে ভরা এজলাসে ভর্ৎসনা হাই কোর্টের বিচারপতির

শুক্রবার এসএসসি বোর্ডের সমস্ত সদস্যকে তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।

এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার (বাঁ দিকে) এবং বিচারপতি দেবাংশু বসাক।

এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার (বাঁ দিকে) এবং বিচারপতি দেবাংশু বসাক। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৫
Share
Save

কলকাতা হাই কোর্টে ভরা এজলাসে বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। বিচারপতি কিছুটা উচ্চ স্বরেই তাদের কাছে জানতে চাইলেন, ‘‘আপনারা কী লুকোতে চাইছেন? কেন লুকোতে চাইছেন?’’ বিচারপতির ওই প্রশ্নের কোনও জবাব দিতে পারেনি এসএসসি। তবে একদিকে যখন এসএসসির চেয়ারম্যান বিচারপতিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উত্তর জেনে আসার, তখন এসএসসির আইনজীবী আদালতকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি আর এসএসসির আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করতে চান না!

শুক্রবার এসএসসি বোর্ডের সমস্ত সদস্যকে তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে এসএসসির বোর্ডের সদস্যদের হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেই নির্দেশানুসারে হাই কোর্টে যথা সময়ে এসে উপস্থিত হন এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এবং আরও দুই সদস্য। বেঞ্চ তাদের প্রশ্ন করে এসএসসির ওএমআর শিট মূল্যায়ন সংক্রান্ত একটি সংস্থা ডেটা স্ক্যানটেকের বিষয়ে। সম্প্রতি বিচারপতি বসাকের বেঞ্চে এ সংক্রান্ত একটি হলফনামা পেশ করে সিবিআই জানিয়েছিল এসএসসির ওএমআর শিট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এই সংস্থার ভূমিকা রয়েছে। এর পরেই এসএসসির বোর্ডের সদস্যদের ডেকে পাঠান বিচারপতি।

শুক্রবার হাই কোর্টে উপস্থিত ছিলেন এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্রও। তাঁকেই প্রথম প্রশ্ন করেন বিচারপতি। তার পরে চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থের কাছে তিনি জানতে চান, ডেটা স্ক্যানটেকের বিষয়ে।

বিচারপতি বলেন— সিবিআইয়ের হলফনামা আপনি পড়েছেন? ডেটা স্ক্যানটেকের ব্যাপারে জানেন?

সিদ্ধার্থ— এই নাম আমি প্রথম বার শুনছি।

বিচারপতি— প্রথম বার শুনছেন মানে? ফেব্রুয়ারি মাস থেকে একটি হলফনামা এসে পড়ে আছে আপনার কাছে। আর আপনি সেটা পড়ে দেখার সময় পাননি। আপনি জানেন না এই মামলার সঙ্গে কত মানুষের জীবন জড়িয়ে আছে?

সিদ্ধার্থ— আমাকে আগামী সোমবার পর্যন্ত সময় দিন আমি সব উত্তর জেনে আসব।

এত দিন বলা হয়ে এসেছে, এসএসসির পরীক্ষার খাতা বা ওএমআর শিট মূল্যায়নের কাজ করেছে এনওয়াইএসএ নামের একটি ওএমআর মূল্যায়ন সংস্থা। কিন্তু সিবিআইয়ের হলফনামায় নতুন নাম উঠে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই এসএসসির দেওয়া তথ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আদালত জানতে চেয়েছে তবে কি এসএসসি তথ্য গোপন করে যাচ্ছে? এ ব্যাপারে শুক্রবার এসএসসির আইনজীবী সুতনুকেও প্রশ্ন করেন বিচারপতি। কিন্তু তিনিও সে প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি। উল্টে এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিচারপতির সংক্ষিপ্ত বাদানুবাদ হয়। যার জেরে সুতনু এসএসসির আইনজীবী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।

বিচারপতি সুতনুকে প্রশ্ন করেছিলেন ওএমআর মূল্যায়ন সংস্থা এনওয়াইএসএ নিয়ে। জবাবে সুতনু বলেন— আজই এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কমিশনের কাছ থেকে উত্তর জেনে তবেই জানানো যাবে।

বিচারপতির সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বাদানুবাদ হয়। যার জেরে সুতনু এসএসসির আইনজীবী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।

বিচারপতি— এ ভাবে শুনানি বন্ধ করা যায় না। যখনই কোনও প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হবে তখনই সময় চাইলে মামলা এগোবে কী করে ?

সুতনু— এই এজলাসে কী ভাবে শুনানি হয় দেখছেন? ভাল ভাবে দাঁড়ানোর জায়গাটুকু থাকে না। শেষ চার-পাঁচ দিনে বসার জায়গাও পাওয়া যায়নি। আদালত কী প্রশ্ন করছে বা বাকিরা তার কী জবাব দিচ্ছে সেটা লিখব কী করে? যে জবাব দেব!

বিচারপতি— কী আর করব বলুন? আমরা জানি, এই এজলাস ছোট। এসএসসির মতো একের পর এক বড় বড় বাড়ি আমাদের নেই। যে এক বাড়ি থেকে সুপারিশপত্র দেওয়া হবে, আর এক বাড়ি থেকে পাঠানো হবে চাকরির এসএমএস।

উল্লেখ্য এসএসসির চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীরা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের অন্য একটি বাড়িতে ইন্টারভিউ এবং মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁদের এসএমএস পাঠিয়ে চাকরি পাওয়ার কথা জানানোও হয়। যা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সেই ঘটনাকেই কটাক্ষ করেছেন কি না স্পষ্ট নয়। তবে এসএসসির আইনজীবী শুক্রবার বিচারপতিকে শুনানি চলাকালীনই জানিয়ে দেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চান। জবাবে বিচারপতি তাঁকে জানিয়ে দেন, ‘‘সেই সিদ্ধান্ত আদালতে নয়, কমিশনের বোর্ড মেম্বারদের উপস্থিতিতে ঠিক করবেন।’’

আপাতত সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি বলে জানিয়েছে আদালত।

Calcutta High Court Bengal SSC Recruitment Case

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।