—ফাইল চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারীর দাদা কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে পুলিশ যে নোটিস পাঠিয়েছিল, তা খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে পুলিশ দাসের মতো কাজ করছে।
কাঁথি পুরসভার গ্রিন সিটি মিশনে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশ। মেচাদা-দিঘা বাইপাসে বাতিস্তম্ভ লাগানোয় দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সাক্ষী হিসাবে নোটিস পাঠানো হয় কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বড় ছেলে কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে। একই মামলায় শিশিরের আর এক ছেলে তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর স্ত্রী সুতপা অধিকারীকেও নোটিস দেয় পুলিশ। এ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কৃষ্ণেন্দু। বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই মামলার শুনানিতে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করা হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সংশ্লিষ্ট মামলায় পুলিশ ঠিক কাজ করেনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এগরার এসডিপিওকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছেন। তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘উর্দিতে যে অশোকস্তম্ভ রয়েছে, তার সম্মানরক্ষা করেননি এসডিপিও। দাসের মতো কাজ করেছে পুলিশ।’’ এখানেই শেষ নয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ ছাড়া সংশ্লিষ্ট মামলায় কৃষ্ণেন্দুকে আর কোনও নোটিস পাঠাতে পারবে না পুলিশ। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করে, তার বিরুদ্ধে আমি পদক্ষেপ করব।’’
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পর শান্তিকুঞ্জের (শুভেন্দু-শিশিরের বাড়ি) সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়ে। বিজেপির অভিযোগ, তার পর থেকেই অধিকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা করা হয়। তেমনই একটি অভিযোগ, এই ‘গ্রিন সিটি মিশন’ প্রকল্পের দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্ত। অভিযোগ উঠেছিল ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন হাই মাস্ট বাতিস্তম্ভ, বাতিস্তম্ভের সৌন্দর্যায়ন এবং প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য সৌন্দর্যায়নের কাজে আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। ওই ঘটনায় সরাসরি নবান্নের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের তদারকিতে জেলাশাসকের নির্দেশে কমিটি গঠনও করা হয়। সেই কমিটিতে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কাঁথির মহকুমাশাসক, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, কাঁথি থানার আইসি-সহ প্রশাসনিক কর্তা এবং কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান। ইতিমধ্যে তদন্তের বেশির ভাগ নথি সংরক্ষণ করা হয়েছে।মামলার তদন্তের জন্য কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বড় ছেলে কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর স্ত্রী সুতপা অধিকারীকে ১৬০-এর নোটিস পাঠান কাঁথি থানার তদন্তকারী অফিসারেরা। অন্য দিকে, বিজেপি অভিযোগ করে ২০১৭-১৮ সালের একটি অভিযোগ নিয়ে হঠাৎই পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বুধবার সরকারের তরফে আদালতে বলা হয়, তদন্তে সহযোগিতা করুন কৃষ্ণেন্দু। তিনি তদন্তকারীদের মুখোমুখি হন। যা নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘উনি হেলিকপ্টারে হাজিরা দেবেন না কি হুইলচেয়ারে যাবেন, সেটা পরের কথা। আগে পুলিশ কী করেছে, আমি সেটা দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy