গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় রাজ্য সরকারের রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
গার্ডেনরিচের পাঁচ তলা বহুতল প্রশাসনের নজর এড়িয়ে গড়ে উঠেছে বলে মনে হয় না। এমনটাই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তার রিপোর্টও চেয়েছে আদালত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে হলফনামা দিয়ে ওই বিষয়ে খুঁটিনাটি জানাতে হবে। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল।
গার্ডেনরিচ এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহ। মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই এলাকায় এমন আরও প্রায় ৫০টি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে। এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মামলাকারী।
বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘শুনলাম বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর উদ্ধারকার্য বন্ধ করে দিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে আর কেউ আটকে থাকলে কী হবে? প্রতিটি পঞ্চায়েত, পুরসভার একটি করে নজরদারি কমিটি থাকা দরকার। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ওই পাঁচ তলা বহুতল গড়ে উঠেছে বলে মনে হয় না।’’
বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ আটকাতে আইন থাকলেই হবে না, তা বলবৎ করার মতো পরিকাঠামোও থাকতে হবে। গুলি ছাড়া বন্দুক দিয়ে সৈন্যদের সীমান্তে যুদ্ধে পাঠিয়ে কী লাভ?’’
পাশাপাশি এই মামলায় প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে অসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, তারা যখন স্কুটার বা জিপে করে কোনও এলাকা পরিদর্শনে যায়, তাদের মারধর করা হয়। পরিকাঠামো না থাকলে তারা কী করবে? মনে করুন, আপনি প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে অর্ধেক লরি ভর্তি বালি, এক লরি ভর্তি ইট নিয়ে এসে নির্মাণস্থলের সামনে রাখলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে কাউন্সিলরের গুপ্তচর চলে আসবেন। আর অনুমতি না থাকলে অনেক সময় কেউ আসেও না।’’
উচ্চ আদালত জানিয়েছে, গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসন নিয়ে সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, হলফনামার আকারে তা জানাতে হবে আদালতকে। সরকারের উদ্দেশে আদালতের পরামর্শ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ছাড়াও আপাতত কয়েক দিন খাবার সরবরাহ, রেশন সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যাঁরা বাড়ি হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য তাঁবুর বন্দোবস্ত করতে বলেছে আদালত। আগামী ৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy