কালিয়াগঞ্জের ঘটনার রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে চিন্তিত কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে সরগরম হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। এ বার এই ঘটনার রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে নিজেদের চিন্তার কথা জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার এই প্রসঙ্গে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার মন্তব্য, “আদালত চায় না গোটা ঘটনাক্রমে রাজনৈতিক রং লাগুক।” এই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন তাদের রিপোর্টে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করবে না বলে আশা করে আদালত।”
গত ২১ এপ্রিল উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার গঙ্গোয়ার পালইবাড়ি এলাকায় এক কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পর অভিযোগ ওঠে, ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুন করেছেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক যুবক ও তাঁর ৪-৫ জন সঙ্গী। অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে মৃতার দেহ নিয়ে রাজ্য সড়কে অবরোধ, বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করা ছাড়াও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। অন্য দিকে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। অবরোধকারীরা দাবি করেছিলেন, কিশোরীর দেহ পরিবারের কাউকে না দিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই শনিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়কে চিঠি লেখেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের নিশ্চিত করতে ওই পুলিশকর্তাকে চিঠিতে লিখেছে কমিশন।
নাবালিকার মৃত্যু ও পুলিশের বিরুদ্ধে অমানবিক ভাবে তার দেহ উদ্ধার নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় পরেই জাতীয় তফসিলি জাতি কমিশনের উপাধ্যক্ষ অরুণ হালদার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। পরে দিল্লিতে তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা অসহযোগিতা করেছেন। জেলাশাসক, এসপি তো দূরের কথা, তদন্তকারী অফিসারও তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। তাঁরা যে ব্যাখ্যা ঘটনাস্থলেই দিতে পারতেন, তা না করায় এখন দিল্লিতে এসে ব্যাখ্যা দিতে হবে। অরুণ বলেন, ‘‘নোটিসে সাড়া দিয়ে না এলে, সমন পাঠানো এবং প্রয়োজনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে।’’
এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছিলেন, রাজ্যে কিছু ঘটনা ঘটলেই কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তাব্যক্তিরা রাজ্যে হাজির হচ্ছেন। সে প্রসঙ্গে অরুণ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এর পিছনে রাজনীতি দেখছেন। কিন্তু প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের বোঝা উচিত, কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা না করলে তাঁদের বিপদ হতে পারে।” কালিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে যে ভাবে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতে হাই কোর্টের এই পর্যবেক্ষণকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy