Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Calcutta High Court

বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে কী সম্পর্ক ভোটের? নিয়োগ মামলায় মুখ্যসচিবের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ হাই কোর্টের

এই মামলায় অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানানোর জন্য তৃতীয় বার সময় দিল আদালত।

কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:২৮
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। এই মামলায় অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানানোর জন্য তৃতীয় বার সময় দিল আদালত। আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়ে মুখ্যসচিবকে নিজের অবস্থান জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। মঙ্গলবার আদালতে রাজ্য সরকারের আইনজীবী জানিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনের পরে এই মামলায় অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে অনুমোদন নিয়ে রাজ্যের অবস্থানের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

তখন বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “মুখ্যচিবকে ডেকে পাঠাব? নির্বাচনের সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়ার কী সম্পর্ক? পুলিশ কি এফআইআর করা বন্ধ করেছে? তদন্ত কি বন্ধ আছে?” মুখ্যসচিবকেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। মুখ্যসচিব আইন দফতরের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন, কিন্তু তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে কেন কথা বলছেন না, এই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি। তার পরই বিচারপতি বলেন, “একজন মুখ্যসচিবের এই নিস্তব্ধতায় আদালতের মনে সন্দেহের উদ্রেক হচ্ছে যে, এই অভিযুক্তরা কতটা প্রভাবশালী।” বিচারপতি আরও প্রশ্ন তোলেন, “দেড় বছর ধরে অনুমোদনের অপেক্ষায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। তদন্তকারী সংস্থা বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে তো?”

এর পরই আদালত জানায়, আশা করা হচ্ছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা কোনও ভাবেই মুখ্যসচিবকে প্রভাবিত করতে পারবেন না। তিনি নিরপেক্ষ ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। বিচারপতি বলেন, “মুখ্যসচিবকে এই সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। হয়তো সিদ্ধান্তের কারণে কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে তিনি অপ্রিয় হয়ে যাবেন। কিন্তু তার থেকেও অনেক বড় দায়িত্ব তাঁর উপর ন্যস্ত আছে।”

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের সিদ্ধান্ত জানাতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সে দিনও নির্দেশ পালিত না হলে সশরীরে বিপি গোপালিককে আদালতে হাজিরা দিতে হবে বলেও জানিয়ে দেয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। কিন্তু রাজ্য অনুমোদন না দিলে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। কেন রাজ্য সরকার এত দিন ধরে ওই অনুমোদন দানের প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রেখেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাই কোর্ট।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অশোককুমার সাহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষ এবং শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হা হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত বুধবার শুনানি চলাকালীন এ নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন বিচারপতিরা। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আইনজীবীকে নোটিস দেয়। গত বুধবারই দুপুর ২টোয় তাঁকে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে সরকারি আইনজীবী অনির্বাণ রায় আদালতকে জানান, নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন মুখ্যসচিব। এর পরেই বিচারপতি বাগচীর পর্যবেক্ষণ, গত দেড় বছর ধরে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি মুখ্যসচিব। সম্প্রতি নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে। আর একটা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রিপোর্ট জমা দিতে না পারলে তাঁকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Recruitment Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy