Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta High Court

২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা নয়ছয়ের মামলায় নয়া মোড়, রাজ্যকে সময় বেঁধে দিতে চায় আদালত

জনস্বার্থ মামলায় ক্যাগের রিপোর্টের ভিত্তিতে হাই কোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে। সিবিআই তদন্ত চেয়ে আবেদনে অভিযোগ, জনগণের স্বার্থে কেন্দ্রের পাঠানো টাকা লুট করা হয়েছে।

Calcutta high Court asks view of West Bengal Government to a PIL seeking CBI probe on the allegation of corruption in distribution of central fund

রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ এনে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫৭
Share: Save:

কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবির বিরোধিতা করল রাজ্য। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ক্যাগের রিপোর্ট রাজ্যপালের কাছে যায়। সেখান থেকে যায় বিধানসভায়। তার পর তা আলোচনা হয় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-তে। খরচ নিয়ে সেখানেই এখন বিষয়টি আলোচনার স্তরে রয়েছে। ফলে এ নিয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

পাল্টা প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব রাজ্যের কাছে জানতে চান, পিএসিতে কী হয় তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে? না কি, সরাসরি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সেখান থেকে রিপোর্ট চাইবে আদালত? অন্য দিকে, এই মামলায় আদালত নির্দেশ দিলে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে কি না তার তদন্ত করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে সিবিআই। আগামী সপ্তাহে আবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার হিসাব দিতে পারছে না বলে অভিযোগ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। ক্যাগের রিপোর্টকে ভিত্তি করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। তাতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ৩১ মার্চ ক্যাগের রিপোর্টে ওই অসঙ্গতির কথা রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের আবেদনও জানানো হয়েছে।

ওই জনস্বার্থ মামলায় অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়াও মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী সুমনশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী ঋত্বিক পাল।মামলাকারীদের দাবি, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অর্থ খরচের কোনও ব্যবহারিক শংসাপত্র (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) প্রকাশ করেনি রাজ্য। পরের বছরগুলির শংসাপত্র ২০২২ সালের মার্চ মাসে এক সঙ্গে প্রকাশ করা হয়। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি আর্থিক বছরে ব্যবহারিক শংসাপত্র প্রকাশ করা উচিত।

মঙ্গলবার এই মামলায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সওয়াল, ২০১১ সালের আগেরও শংসাপত্র নেই। ২০০২ সাল থেকে এটা চলছিল। এই মামলা ২০২০-২১ সালের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে করা। সেখানে বিগত বছরগুলির প্রসঙ্গ টানার প্রয়োজন নেই। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের প্রশ্ন, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কেন প্রকাশ করা হয়নি? সেই অর্থের খরচ কী ভাবে হয়েছে? পিএসি-র এ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত?

উত্তরে এজি বলেন, ‘‘এই মামলাটি অন্য বছরের। আগে কেন প্রকাশ করা হয়নি তা নিয়ে কোনও নির্দেশ আমার কাছে নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিধানসভার দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমতাবস্থায় আদালত চাইলে বিধানসভাকে মামলায় যুক্ত করতে পারে।’’

অন্য দিকে, এই জনস্বার্থ মামলাটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ক্যাগ রাজ্যের কাছে রিপোর্ট জমা দেয় না! ক্যাগের রিপোর্ট যায় রাজভবনে। সেখান থেকে আসে বিধানসভায়। তার পর কোন খাতে কত খরচ হয়েছে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-তে তা নিয়ে আলোচনা হয়। ২০২০-২১ সালের ক্যাগের রিপোর্ট এখন বিধানসভার পিএসি রয়েছে। এটা এখন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে চলছে। আদালতের এখন হস্তক্ষেপ করার দরকার নেই।

পাল্টা মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, কোনও অনিয়ম হয়ে থাকলে আদালত হস্তক্ষেপ করতেই পারে। তখন রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘তা হলে কী এই মামলার শুনানি বন্ধ রাখব? না কি পিএসি থেকে কখন রিপোর্ট আসবে তার জন্য বসে থাকব?’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy