পথকুকুরদের খাওয়ানোর বিষয়ে সময়, স্থান নির্দিষ্ট করে নির্দেশিকা আদালতে জমা দিয়েছে রাজ্য় সরকার। —ফাইল চিত্র।
পথকুকুরদের কখন, কোথায়, কী ভাবে খাওয়াতে হবে, তা নিয়ে একটি নির্দেশিকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে সেই নির্দেশিকা জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, ওই নির্দেশিকা সমস্ত পুরসভায় পাঠিয়ে দিতে হবে।
পথকুকুরদের খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে বচসা এবং মারধরের অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অর্ণব চক্রবর্তী নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক বাসিন্দা। তিনি পশুপ্রেমী। রাস্তার কুকুর এবং বিড়ালদের নিয়মিত খাওয়ান। তাঁর মামলাটি ওঠে হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। পথকুকুরদের খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে সামাজিক সমস্যার বিষয়টি সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করে আদালত। বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই সমস্যার সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করুক রাজ্য। বুধবারের মধ্যে কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।
বুধবার এই মামলাটি আবার বিচারপতি ঘোষের এজলাসে ওঠে। রাজ্যের তরফে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জমা দেন আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত। পথকুকুরদের কোথায় খাওয়ানো হবে, কী ভাবে খাওয়ানো হবে, কী কী খাওয়ানো হবে, নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। খাওয়ানোর সময়ও বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের নির্দেশিকা অনুযায়ী, পুরসভার তরফে প্রতিটি ওয়ার্ডে কয়েকটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। সেখানেই খাওয়ানো যাবে পথকুকুরদের। এমন কোনও জায়গা কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য নির্দিষ্ট করা যাবে না যেখানে মানুষ হেঁটেচলে বেড়ায় বা বাচ্চারা খেলাধূলা করে। এই জায়গার ফলে রাস্তা বা ফুটপাথের প্রস্থ যাতে ছোট না হয়ে যায়, তা-ও মাথায় রাখতে হবে।
পুরসভা নির্ধারিত জায়গায় দিনে দু’বার নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ানো যেতে পারে পথকুকুরদের। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে সকাল ৭টা এবং সন্ধ্যা ৭টা এই কাজের জন্য বরাদ্দ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই দু’ঘণ্টার বেশি সময় নেওয়া যাবে না খাওয়ানোর জন্য। এ ছাড়া, কুকুরদের খাওয়ানোর সময়ে রাস্তা নোংরা করা যাবে না। খাওয়ানো হয়ে গেলে সেই জায়গাটি পরিষ্কার করে দিতে হবে পশুপ্রেমীদের। পুরসভা নির্দিষ্ট জায়গায় না খাইয়ে পথকুকুরদের অন্য কোথাও খাবার দেওয়া হলে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে পশুপ্রেমীদের।
নিয়ম মেনে কুকুরদের খাওয়ালে পশুপ্রেমীদের কেউ কোনও ভাবে হেনস্থা করতে পারবেন না। তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া যাবে না।
কোন কোন খাবার পথকুকুরদের খাওয়ানো যাবে? তা-ও নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে সরকার। বলা হয়েছে, কুকুর অভুক্ত থাকলে তারা যা পায় তা-ই খেয়ে নেয়। কিন্তু যে কোনও খাবার খেয়ে ফেলা তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। কুকুরদের খাওয়ানো যেতে পারে ভাত, রুটি, আলুসিদ্ধ এবং সামান্য তেল বা ঘিয়ের মিশ্রণ। এ ছাড়া, বিভিন্ন মাছ-মাংসের দোকান থেকে ফেলে দেওয়া ছাঁট সংগ্রহ করে উপযুক্ত পদ্ধতিতে তা রান্না করে পথকুকুরদের খাওয়ানো যেতে পারে, বলা হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। ভাতের সঙ্গে ওই মাছ বা মাংসের ছাঁট কুকুরদের জন্য উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এ ছাড়া, কুকুরদের জন্য করা রান্নায় সামান্য হলুদ দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। কেউ চাইলে দোকান থেকে কুকুরদের জন্য নির্দিষ্ট খাবারও কিনে খাওয়াতে পারেন। কুকুরদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় পরিষ্কার পাত্রে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
চকোলেট, তেতো স্বাদের খাবার, দুধ এবং দুগ্ধজাতীয় খাবার, মিষ্টি, মিষ্টি স্বাদের বিস্কুট, পেঁয়াজ-রসুন, মিষ্টি ফল এবং অ্যালকোহল কুকুরদের খেতে না দিতে বলা হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। এই খাবারগুলিকে কুকুরদের জন্য ক্ষতিকারক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy