নিজস্ব চিত্র
ছিল ব্লকের দলীয় কার্যালয়। হঠাৎ সেটাই অঞ্চল স্তরের কার্যালয়ে বদলে গেল। বাড়ির দেওয়ালে শুধু ‘ব্লক’ শব্দটি তুলে দিয়ে লেখা হল ‘২’। অর্থাৎ ২ নম্বর অঞ্চল। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে হঠাৎই তৃণমূল কার্যালয়ের এই ‘পদচ্যুতি’ নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ করেছেন দলেরই একাধিক নেতা। এক পক্ষ বলছে, জোর করে অফিস দখল করেছেন অন্য পক্ষের নেতা-কর্মীরা। অভিযোগ যাঁদের দিকে, সেই নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না।
বাম আমলে জামালপুরে তৃণমূলের ব্লক কার্যালয় বলে তেমন কিছু ছিল না। ব্লক তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি মেহেমুদ খাঁ জামালপুর পুলমাথার কাছে তাঁর কাপড়ের দোকানে বসেই তখন দলের কাজকর্ম চালাতেন। ২০১১ সালে জামালপুর বিধানসভাতেও ঘাসফুল ফোটে। বিধায়ক নির্বাচিত হন উজ্জ্বল প্রামাণিক। এর পর ২০১৪ সালে জামালপুর বাসস্ট্যান্ডের গায়ে তৈরি হয় তৃণমূলের একটি কার্যালয়। তখন থেকেই ওই ভবনের দেওয়ালে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়’। বিধায়ক -সহ ব্লক তৃণমূলের তদানীন্তন সভাপতি অরবিন্দ ভট্টাচার্য ও বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের অন্য নেতা-কর্মীরা সেখানে বসেই দলের কাজকর্ম চালাতেন। অন্য দিকে, পুলমাথায় দলীয় পার্টি অফিস গড়ে তুলেছিলেন তৃণমূল নেতা মেহেমুদ।
উজ্জ্বল বিধায়ক হওয়ার কয়েক বছর পর থেকে তাঁর সঙ্গে মেহেমুদের সম্পর্কের তিক্ততা শুরু হয়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দ্বন্দ্বও বাড়ে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুর বিধানসভা আসনে পরাজিত হন উজ্জ্বল। জয়ী হন বাম প্রার্থী সমর হাজরা। এর পর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে দল অরবিন্দকে সরিয়ে যুব সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি শ্রীমন্ত রায়কে ব্লক তৃণমূলের সভাপতি করে। দল এ বার উজ্জ্বলকে আর জামালপুর বিধানসভার প্রার্থী করেনি। পরিবর্তে গলসির বিধায়ক অলোক মাঝিকে জামালপুর বিধানসভার প্রার্থী করে। একেবারে ভোটের মুখে শ্রীমন্তকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে দল সভাপতি করে মেহেমুদকে। প্রার্থী অলোকও বিধায়ক নির্বাচিত হন। এর কিছু দিন পরেই ‘পদচ্যুতি’ ঘটে ব্লক কার্যালয়ের। দেওয়ালের ব্লক শব্দটি মুছে দিয়ে সেখানে ২ লিখে দেওয়া হয়।
এ নিয়ে শাসকদলের দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। ব্লক তৃণমূলের পূর্বতন সভাপতি শ্রীমন্ত অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘ভোটের ফল প্রকাশের কয়েক দিন পর দলেরই একাংশ এই কার্যালয়ের দখল নেয়।’’ অভিযোগ করেছেন জেলার তৃণমূল নেতা প্রদীপ পালও। তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর মেহেমুদ ও ভূতনাথ মালিক দলবল নিয়ে জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ের দখল নেয়। এর পরেই দেওয়াল থেকে লেখা মুছে দিয়েছেন ওঁরা। ঘটনাটি মুখ্যমন্ত্রী-সহ জেলা ও রাজ্য তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। দল এই বিষয়ে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।’’
যদিও অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন মেহমুদ। তিনি বলেন, ‘‘ইচ্ছা করে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ওই পার্টি অফিসে আমরা যাই না। ওখানে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সেই বিষয়ে জানি না।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু জানিয়েছেন, ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। খোঁজ নিয়ে বলতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy