Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Strike

ধর্মঘটে ‘সাড়া’ পেয়ে বাম, কংগ্রেস এ বার মোদী-বিক্ষোভে

দলের পতাকা বা ফেস্টুন ছেড়ে কালো পতাকা নিয়ে মোদীর সফরের দু’দিন ‘গো ব্যাক মোদী’ স্লোগান দিয়ে যুব ও ছাত্র-সহ সকলকে পথে নামতে খোলা আহ্বান জানিয়েছে তারা।

যদবপুরে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র।

যদবপুরে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

কয়েক বছরের নিস্তরঙ্গ অতীতের চেয়ে এ বার ধর্মঘটে অনেক বেশি সাড়া পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করলেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। সাধারণ ধর্মঘটে বুধবারের ছবি দেখে ‘উজ্জীবিত’ বাম ও কংগ্রেসের পরবর্তী লক্ষ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন কলকাতা সফর ঘিরে বড়সড় বিক্ষোভের আয়োজন করা। দলের পতাকা বা ফেস্টুন ছেড়ে কালো পতাকা নিয়ে মোদীর সফরের দু’দিন ‘গো ব্যাক মোদী’ স্লোগান দিয়ে যুব ও ছাত্র-সহ সকলকে পথে নামতে খোলা আহ্বান জানিয়েছে তারা।

বেহাল অর্থনীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং সেই সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতায় সারা দেশে এ দিন সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের পেনশন, ফসলের ন্যায্য দামের দাবিতে গ্রামীণ ভারত ধর্মঘটের ডাক ছিল কৃষক সংগঠনগুলির তরফে। বাংলায় ট্রেড ইউনিয়ন এবং বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব এক সুরেই দাবি করেছেন, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ধর্মঘটে সাড়া দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনকে দিয়ে সেই ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিজেপিরই পাশে দাঁড়িয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, আরএসপি-র দেবাশিস মুখোপাধ্যায়, এসইউসি-র তরুণ নস্কর-সহ বাম নেতা-কর্মীরা। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আবার পাল্টা দাবি, ‘‘বামেদের আগে ঠিক করতে হবে, কার বিরোধিতা ওঁরা করবেন। মুখ্যমন্ত্রীকে বেশি আক্রমণ করতে গিয়ে বিজেপিকেই ওঁরা সাহায্য করছেন!’’

ধর্মঘট মেটার আগেই সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব এক সুরে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী শনি ও রবিবার ‘কালা কানুন’ সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ হবে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘বিজেপি-শাসিত রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও অসমে যেতে পারছেন না মোদী। এখানেও পথে নেমে সকলকে সরব হওয়ার আবেদন জানাচ্ছি। ধর্মঘটের মতো সে দিনও যদি জোর করে বিক্ষোভ সরিয়ে মোদীকে বাঁচাতে যাওয়া হয়, তা হলে ‘গো ব্যাক মুখ্যমন্ত্রী’ স্লোগান দিতেও আমরা বাধ্য হব!’’ বামফ্রন্ট ও সহযোগী মিলে ১৭ দলের তরফে বিমান বসু জানিয়েছেন, ওই দু’দিন রাজ্যের সব জেলায় কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ হবে।

বিমানবাবুরা কংগ্রেসকে ওই কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন এবং কংগ্রেসও তাকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘আমাদের নির্দেশ দেওয়ার আর অপেক্ষা রাখে না। ধর্মের নামে বিভাজন করে, প্রতিবাদীদের উপরে নৃশংস আক্রমণ করে মোদী-শাহেরা যা কাণ্ড করেছেন, তার পরে শুধু কংগ্রেস নয়, সব দল-মতের যুব ও ছাত্রেরাই বিক্ষোভে শামিল হয়ে যাবেন।’’ বামেদের ডাকা ছাত্র ধর্মঘটে রাজ্য ভাল সাড়া মিলেছে বলে দাবি করে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যও সব ছাত্র সংগঠনের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন মোদীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার।

ধর্মঘটে ‘গুন্ডামি’র জন্য বঙ্গ সিপিএমকে তুলোধোনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন মন্তব্য করেছেন, কেরলের সিপিএম ‘ভাল’। তাদের ‘আদর্শ’ আছে। তার জবাবে সেলিমের বক্তব্য, ‘‘হিন্দিতে একটা প্রবাদ আছে— দূর কা শেহনাই সুহানা লাগে! ডোনাল্ড ট্রাম্পেরা যেমন ‘গুড তালিবান, ব্যাড তালিবান’ দেখেন, সে ভাবে উনি এখন ভাল সিপিএম, খারাপ সিপিএম খুঁজছেন! কেরলের সিপিএম ক্ষমতায় থেকেও আন্দোলনে আছে। আর উনি ক্ষমতায় বসে ধর্মঘট ভাঙছেন। এটাই তফাত।’’ তবে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ভাঙচুর বা হিংসাত্মক ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। নির্দিষ্ট অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাঁরা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবেন। সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, এসইউসি নেতৃত্বও ধর্মঘটে সাড়া দেওয়ার জন্য মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই কথা বলে সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু, রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়দের মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথা আর্তনাদের মতো শোনাচ্ছে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Strike CITU INTUC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy