এ রাজ্যে সব পড়ুয়াদের বাংলা পড়তেই হবে। তবে প্রথম ভাষা হিসাবে নয়। পড়ুয়ারা নিজেদের পছন্দ মতো প্রথম ভাষা বেছে নিতে পারবে। মঙ্গলবার সে কথা স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানান, কলকাতায় কোনও পড়ুয়া চাইলে প্রথম ভাষা হিসাবে বাংলা নিতে পারে। দার্জিলিঙে কেউ চাইলে নেপালি নিতে পারে প্রথম ভাষা।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যের শিক্ষানীতিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেই খসড়ায় বাংলা ভাষাকে আরও গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, বাংলা এবং ইংরেজি পড়তেই হবে পড়ুয়াদের। তার পরেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল, তবে কি প্রথম ভাষা হিসাবে বাংলাই নিতে হবে এ রাজ্যে? সেই জল্পনায় ইতি টানলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মঙ্গলবার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে এসে ব্রাত্য বলেন, ‘‘যেখানে যে যেটা প্রথম ভাষা নিতে চায়, সে সেটাই পারবে। কলকাতায় কেউ প্রথম ভাষা বাংলা নিতে চাইলে, তা পারে। দার্জিলিঙে কেউ নেপালি প্রথম ভাষা নিতে চাইলে, নিতে পারে। আবার কেউ যদি উর্দু, অলচিকি বা রাজবংশীকে প্রথম ভাষা করতে চায়, তা হলে সেটাও সে করতে পারে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনজাতির প্যাটার্নের উপর নির্ভর করবে, তারা কী ভাষা নেবে।’’
আরও পড়ুন:
যথেচ্ছ বেতন নিতে পারবে না বেসরকারি স্কুলগুলি, এ ব্যাপারে তাদের নির্দিষ্ট নিয়মে বেঁধে রাখতে একটি কমিশন গড়ার পরিকল্পনা ছিল রাজ্যের। সোমবার এই সংক্রান্ত একটি বিলে সিলমোহর দেয় মন্ত্রিসভা। নতুন বিলের মাধ্যমে কি বেসরকারি স্কুলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইছে রাজ্য? মঙ্গলবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘বেসরকারি স্কুলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখবে সরকার, এমন নয়। বরং বেসরকারি স্কুল নিয়ে অনেক আগে আরও অভিযোগ আসছিল। মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও অনেক অভিযোগ এসেছে। কর্পোরাল শাস্তির বাড়াবাড়ি বা ফি বৃদ্ধির যথেচ্ছাচার। এ সব নামী বেসরকারি স্কুল হুট করে করে না। বহু ইংরেজি মাধ্যমের বেসরকারি স্কুল রয়েছে, যেগুলি যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে, যেগুলি যথেচ্ছাচার করছে। সেগুলিকে দমন করতে চাই না মোটেও। নিয়ন্ত্রণ করতে চাই।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, কোন স্কুলে কত বেতন হবে, তা কখনওই বলবে না কমিশন।
রাজ্যের শিক্ষানীতি কবে থেকে চালু হবে, তার আভাস নিয়েছেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য শিক্ষানীতি স্কুলের ক্ষেত্রে কার্যকর করবে পর্ষদ। আর উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। রাজ্য শিক্ষানীতি নিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন হবে। তার পর বিল করব। বিল পাশের পর ওয়েবসাইটে দিয়ে দেব। তখন তা কী ভাবে কার্যকর করা হবে, তারও একটা রূপরেখা থাকবে।’’