Advertisement
E-Paper

বৌবাজার কাণ্ডে কি পিছোবে মহড়া দৌড়

পর পর তিন বার বিপর্যয়ের ক্ষত নিয়ে জেগে থাকা পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ কী ভাবে সম্পূর্ণ করে বেরিয়ে আসা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় মেট্রোর প্রযুক্তিবিদদের কপালের ভাঁজ বাড়ছে।

মদন দত্ত লেনের বাড়িতে ফাটল। নিজস্ব চিত্র।

মদন দত্ত লেনের বাড়িতে ফাটল। নিজস্ব চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৪২
Share
Save

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সাম্প্রতিক বিপর্যয়ে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

পর পর তিন বার একই সুড়ঙ্গে বিপর্যয়ের পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে কিনা, প্রশ্ন মূলত তা নিয়েই। এমনকি, উদ্ভূত এই পরিস্থিতির কারণে হাওড়া থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে মেট্রোর মহড়া দৌড় শুরু করা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। ওই কাজ বেশ কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৌবাজার এলাকায় এই প্রথম সংযোগকারী সুড়ঙ্গ তৈরির কাজে হাত দেওয়া হয়েছিল মাটির নীচে মদন দত্ত লেন এবং বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের সংযোগস্থলে। প্রথম থেকেই যে ভাবে বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে তাতে অন্য সুড়ঙ্গগুলি খনন করা নিয়ে আশঙ্কা ঘনীভূত হয়েছে। সেখানে ফের একই প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মেট্রোর প্রযুক্তিবিদরা।

এই অবস্থায় শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার পর্যন্ত সাড়ে আটশ মিটার দূরত্বের মধ্যে আর সংযোগকারী সুড়ঙ্গ তৈরি করার পথে না হাঁটলে তা ভবিষ্যতে যাত্রী সুরক্ষার প্রশ্নে ঝুঁকির হতে পারে বলে মনে করছেন মেট্রোর আধিকারিকরা। কারণ, মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সুড়ঙ্গের মাঝে কোথাও ট্রেন আটকে গেলে যাত্রীদের উদ্ধার করে পাশের সুড়ঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই সংযোগকারী পথ তৈরি করা হচ্ছে। এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে এমন আটটি পথ তৈরি হওয়ার কথা।

পর পর তিন বার বিপর্যয়ের ক্ষত নিয়ে জেগে থাকা পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ কী ভাবে সম্পূর্ণ করে বেরিয়ে আসা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় মেট্রোর প্রযুক্তিবিদদের কপালের ভাঁজ বাড়ছে। ইতিমধ্যে দিল্লি এবং বেঙ্গালুরু মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে পরামর্শ চাওয়ার কথা জানিয়েছেন কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। যদিও, ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের সমস্যা মেটাতে এ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টার কোনও কসুর রাখা হয়নি। তবে ওই দুই শহরে মেট্রো নির্মাণের ক্ষেত্রে এতটা জনবহুল এলাকায় এত জীর্ণ বাড়ির সমস্যা সামলাতে হয়নি। বৌবাজারের মতো মাটির চরিত্র এত জটিল ধাঁধা হয়ে বাধ সাধেনি সেখানে। ফলে, সমাধান কোন পথে তা নিয়ে সংশয় থাকছে। যদিও, জল সরে গিয়ে জমি শুকনো হওয়ার অপেক্ষায় এখনও মাটি কামড়ে পড়ে থাকারই পক্ষপাতী আধিকারিকদের বড় অংশ।

বছর তিনেক আগে ২০১৯-এর ৩১ অগস্ট ওই সুড়ঙ্গ খননের সময় প্রথম বার বৌবাজারে বিপর্যয় ঘটে। সে বার টিবিএম (টানেল বোরিং মেশিন) চণ্ডী সুড়ঙ্গ খননের কাজ করছিল। তখন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল। সেই সঙ্কট সামাল দিয়ে সুড়ঙ্গ খননের কাজ সন্তর্পনে গুটিয়ে আনার পরে ফের চলতি বছরের ১১ মে বিপত্তি ঘটে। এ বার আগের পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের মুখে আটকে থাকা টিবিএম চণ্ডীকে টুকরো টুকরো করে কেটে উদ্ধারের পরে ওই অংশে ঢালাই করে ফের সুড়ঙ্গের মেঝে তৈরি করার সময় বিপত্তি ঘটে। জোড়া টিবিএম উদ্ধারের জন্য তৈরি চৌবাচ্চার পশ্চিম দিকের ৯ মিটার অংশে ওই বিপত্তির কারণে মেট্রোর কাজ সম্পূর্ণ করার নির্ধারিত সময় প্রায় ৬ মাস পিছিয়ে যায়।

এ বার অন্তিম পর্বে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে জোড়া সুড়ঙ্গ তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে পাশাপাশি দুই সুড়ঙ্গের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে সংযোগকারী পথ তৈরির কাজে হাত দিয়েছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ অনেক আগেই সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়াতে ওই সুড়ঙ্গে ট্রেন চলাচলের জন্য লাইন পাতার কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে, আটটি সংযোগকারী সুড়ঙ্গের সবক’টির ক্ষেত্রেই খননের কাজ করতে হচ্ছে বা হবে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ থেকে। মাথাব্যথার সেটাও একটা বড় কারণ। শিয়ালদহের দিক থেকে ওই সংযোগকারী সুড়ঙ্গগুলিকে পর পর এক থেকে সাত পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের কাছে ট্রাম লাইনের নীচে ৫ নম্বর সুড়ঙ্গের দু’টি আলাদা ভাগ রয়েছে ৫-এর এ এবং ৫-এর বি। ওই কারণে মোট সংযোগকারী সুড়ঙ্গের সংখ্যা আটটি। এ ছাড়াও ওই অংশে সুড়ঙ্গে বাতাস চলাচলের জন্য একটি পৃথক পথ খোলা রাখতে হচ্ছে। মোট আটটি সংযোগকারী সুড়ঙ্গের মধ্যে তিনটি মোটামুটি তৈরি। সেগুলি মূলত এসপ্ল্যানেডের দিকে।

Bowbazar Building Cracked Kolkata Metro trial run

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।