Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

হাসপাতাল থেকেই কাজে ব্যস্ত দুই শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তা

এমআর বাঙুর হাসপাতালের তিন এবং চার নম্বর কেবিনে রয়েছেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:২৭
Share: Save:

বেশ কিছু দিন ধরেই অতিমারি পরিস্থিতি নিয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসে রাজ্যের গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি কমিটি। এ দিনেও সেই বৈঠক হয়েছে। তবে সেখানে ‘ওয়ার্ক ফর্ম হোম’ নয়, ‘ওয়ার্ক ফর্ম হাসপাতাল’ করলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। একই ভাবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্যান্য সব বৈঠকেও তাঁরা হাজির থাকলেন অনলাইনে। কারণ, করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দু’জনেই আপাতত হাসপাতালে ভর্তি। তবে সেই অসুস্থতা তাঁদের কর্মতৎপরতার কাঁটা হয়ে উঠতে পারেনি। ফাইল দেখা, সই করা, পরস্পরের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি সময়োচিত নানান নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তাঁরা।

এমআর বাঙুর হাসপাতালের তিন এবং চার নম্বর কেবিনে রয়েছেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। দু’জনেরই খুব মৃদু উপসর্গ ছিল। পরীক্ষা করানোর পরে বুধবার রাতে ওই দুই কর্তারই আরটিপিসিআর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই দুই শীর্ষ কর্তার রক্তচাপ, সুগারের মতো কোমর্বিডিটি বা আনুষঙ্গিক সমস্যা আছে। নিয়মিত ওষুধও খেতে হয় তাঁদের। ফলে দু’জনেই করোনার ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপের মধ্যে রয়েছেন। তাই এ দিন দুপুরে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে অজয়বাবু ও দেবাশিসবাবু ভর্তি হন বাঙুর হাসপাতালে। রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের দুই শীর্ষ কর্তার সংক্রমিত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছুটা হলেও সংশয় দেখা দেয়।

কিন্তু এ দিন দুই কর্তাই বাড়ি থেকে হাসপাতালে আসার সময় ল্যাপটপ ও মোবাইল সঙ্গে এনেছেন। দুপুর থেকে বাঙুর হাসপাতালের ওই দু’টি কেবিনই কার্যত হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য ভবনের দুই শীর্ষ কর্তার ঘর। সেখানে টেবিলে বসেই ল্যাপটপে পরের পর ই-ফাইল দেখা থেকে শুরু করে অনুমোদন দিয়ে সই করে সেগুলি ছাড়ার কাজ করে গিয়েছেন অজয়বাবু ও দেবাশিসবাবু। পরস্পরের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন বিভিন্ন বিষয়ে। পাশাপাশি ফোনে বিভিন্ন জেলা ও মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন সমানে।
কোন জেলায় করোনা কী হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, টিকা ঠিক কত জনকে দেওয়া হল, সেই কোভিড হাসপাতালে বসে সব বিষয়েও খোঁজখবর নেন অজয়বাবু। তিনি গত বারেও আক্রান্ত হয়েছিলেন।

অজয়বাবু এ দিন ফোনে বলেন, “আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি ঠিকই। কিন্তু রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখাটাই সব থেকে জরুরি। রাজ্য প্রশাসন, চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মী— সকলেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন পরিস্থিতির মোকাবিলায়। হাসপাতালের কর্মী ও আধিকারিকেরা আক্রান্ত হয়েও বাড়ি থেকে কাজ করছেন। সেখানে হাসপাতালে বসেই পরিষেবা সচল রাখার কাজ করা আমাদের সকলেরই কর্তব্য।” ওই হাসপাতালের সহকারী সুপার এবং কয়েক জন নার্স করোনা আক্রান্ত হয়ে সেখানেই ভর্তি আছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁদের উপসর্গ খুবই কম, তাঁরা এখনও সামর্থ্য অনুযায়ী পরিষেবা দিয়ে চলেছেন বলেও জানান অজয়বাবু। তাঁর কথায়, “স্বাস্থ্যকর্মীদের এই উৎসাহ সত্যিই দৃষ্টান্তমূলক। সকলে মিলে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করলেই জয়লাভ সম্ভব।”

স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ভিডিয়ো-সম্মেলনে একের পর এক বৈঠক এবং ফাইল সই চলেছে হাসপাতালের কেবিন থেকেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Ajay Chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy