বিপজ্জনক: মাটি ক্ষয়ে কোনও রকমে দাঁড়িয়ে আছে গাছ। মঙ্গলবার, বটানিক্যাল গার্ডেনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
গঙ্গার ভয়াবহ ভাঙনে ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেন। সেখানকার বহু গাছগাছালি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, গঙ্গা যে ভাবে পশ্চিম তীর ভাঙতে ভাঙতে এগোচ্ছে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কয়েক দশকের মধ্যে ওই উদ্যান এবং সংলগ্ন বসতি তলিয়ে যাবে। মঙ্গলবার ভাঙনের পরিস্থিতি দেখতে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল লঞ্চে গঙ্গার ধার বরাবর পরিদর্শন করে।
এ দিন বটানিক্যাল গার্ডেনের ১ নম্বর জেটিঘাটের কাছে গিয়ে সেই ভাঙন প্রত্যক্ষ করা গেল। গঙ্গা থেকে ১৫ ফুটের যে খাল স্বর্ণময়ী রোডের দিকে গিয়েছে, তার দু’পাশ ভাঙতে ভাঙতে গঙ্গা এগিয়ে গিয়েছে প্রায় আধ কিলোমিটার। জেটিঘাটের কাছে বন্দরের জমিও গাছপালা সমেত প্রায় ৫০০ মিটার তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙন যে বটানিক্যাল গার্ডেনের দিক থেকে হচ্ছে, তা উদ্যান কর্তৃপক্ষ ও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে স্থানীয়েরা বার বার জানিয়েছেন বলেও তাঁদের দাবি।
১ নম্বর জেটিঘাট এলাকার পুরনো বাসিন্দা হীরা দেবীর দাবি, ‘‘এই ঘাট থেকে গার্ডেনের প্রায় ৫০০ মিটার অংশের গাছ তলিয়ে গিয়েছে। জোয়ার-ভাটার ভাঙন তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে বড় বান এলে ভাঙন আরও ভয়াবহ আকার নেয়।’’
এ দিন লঞ্চ থেকে দেখা গেল, গঙ্গার ধারে বটানিক্যাল গার্ডেনের যে অংশ ঘেরা নেই, সেখানে অনেক গাছ হেলে রয়েছে। কোথাও মাটি ক্ষয়ে শিকড় বেরিয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বহু গাছ ইতিমধ্যেই তলিয়ে গিয়েছে। এমনকি, ওই উদ্যানের গঙ্গার ধারের যে অংশে কংক্রিটের ফেন্সিং রয়েছে, সেখানেও অনেক জায়গা ভেঙে গিয়েছে। ভাঙনের প্রকৃতি দেখে আশঙ্কা সত্যি বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদেরা।
এ দিনের পরিদর্শক-দলে ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ্যার অধ্যাপক জয়ন্ত বসু। দলের আর এক সদস্য, পরিবেশবিজ্ঞানী তথা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন আধিকারিক উজ্জ্বলকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যা হয়েছে, তা সামাল দিতে বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ, উপকূলরক্ষী বাহিনী ও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। বোঝাই যাচ্ছে বটানিক্যাল গার্ডেনের দিকে ভাঙনের আশঙ্কা বুঝেই কর্তৃপক্ষ গঙ্গাতীরের একাংশে কংক্রিটের বাঁধ দিয়েছিলেন।’’ সুভাষবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে ভাঙন চলছে, তা আরও ২০ থেকে ২৫ বছর চললে বটানিক্যাল গার্ডেন-সহ আশপাশের এলাকা পুরোটাই তলিয়ে যাবে। ভাঙন থেকে বাঁচাতে উদ্যান কর্তৃপক্ষকে কংক্রিটের ফেন্সিং করতে হবে। কর্তৃপক্ষ তা না করলে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy