ডিসেম্বরের গোড়াতেই রাজভবনে যেতে চান রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জগদীপ ধনখড় উপ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকেই অপেক্ষায় ছিল রাজ্য বিজেপি। লা গণেশনের সঙ্গে কয়েকবার গেরুয়া শিবিরের নেতারা সাক্ষাৎ করলেও অপেক্ষা ছিল স্থায়ী রাজ্যপালের। বুধবার শপথ নিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। আর তার পর থেকেই রাজ্যপালকে রাজ্যের পরিস্থিতি বিস্তারিত জানানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘ডিসেম্বর মাসের গোড়াতেই আমরা রাজ্যপালের কাছে যাব। উনি সবই জানেন। তবু এই রাজ্যে কী ভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে, কী ভাবে দুর্নীতিকে প্রশাসনিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেব।’’ শপথের দিনেই রাজ্যপাল শাসক ও বিরোধীদের সংঘাতের ছবি দেখেছেন। এ নিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো সব সময়ে খেলা হবে বলেন। ডিসেম্বরে রাজ্যের মানুষ আসল খেলা দেখতে পাবেন।’’ তবে কেমন সেই খেলা তা খোলসা করেননি সুকান্ত।
সুকান্ত ডিসেম্বরের জন্য অপেক্ষা করলেও ইতিমধ্যেই অবশ্য রাজ্যপালের কাছে একপ্রস্ত অভিযোগ জমা দিয়ে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আনন্দের শপথে প্রথম সারিতে তাঁর আসন না থাকায় অনুপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু তার পরেই রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সময়ে আনন্দের হাতে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে আসেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভেন্দু রাজ্যপাল আনন্দের জন্য একটি ইংরেজিতে লেখা গীতা নিয়ে গিয়েছিলেন। পুস্পস্তবকের সঙ্গে সেটিও উপহার দেন। রাজ্যপালও শুভেন্দুকে নিজের লেখা বই উপহার দিয়েছেন। এর পরেই বাংলার আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট আনন্দের হাতে তুলে দেন শুভেন্দু। রাজভবন থেকে বেরিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আজ কোনও অভিযোগ জানাতে আসনি।’’ তবে পরে তিনি আরও বলেন, “ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে বইটি প্রকাশ করেছে, সেই বইটি তাঁর অনুমতি নিয়ে তাঁকে উপহার দিয়েছি।’’ এমনটাও বলেন যে তিনি রাজ্যপালকে বুঝিয়েছেন, “পশ্চিমবঙ্গে শাসকের আইন চলে, আইনের শাসন চলে না।”
রাজ্য বিজেপি অবশ্য শুধু শুভেন্দুর দেওয়া রিপোর্টেই ক্ষান্ত হচ্ছে না। সেই সঙ্গে বিজেপির উপরে কবে, কোথায় শাসকদল আক্রমণ চালিয়েছে, ভোটের পরে কেমন সন্ত্রাস হয়েছে সেই সংক্রান্ত অভিযোগও পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত বিজেপি কর্মীদের তালিকা ছাড়াও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ জানাতে চায়। সেই সময় ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট, ছবি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন রাজ্যপালের হাতে তুলে দিতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধনখড় রাজভবনে থাকার সময়ে রাজ্যপালকে নবান্নের অমান্য করার যে সব নজির রয়েছে তা নিয়েও আনন্দকে অবগত করার পরিকল্পনা রয়েছে দলের। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়েও রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরিকল্পনা সুকান্তদের। জানানো হতে পারে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামবদলের অভিযোগও। তবে কবে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত নয়। এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় চলছে বিজেপির পঞ্চায়েত স্তরের কর্মী সম্মেলন। এর পরে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যপালের কাছে সময় চাইবেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy