গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
মঙ্গলবার বিজেপির ‘নবান্ন অভিযান’। সেই কর্মসূচি সফল করতে রাজ্য বিজেপি যে গোটা গোটা ট্রেন ভাড়া করে কর্মীদের কলকাতায় আনতে চায়, তা আগেই লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কর্মসূচির আগের দিন সোমবার সকাল পর্যন্ত যা পরিকল্পনা, তাতে মোট সাতটি ট্রেন ভাড়া নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। উত্তরবঙ্গের জন্য তিনটি এবং দক্ষিণবঙ্গের জন্য চারটি। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা দিঘা থেকে সাঁতরাগাছি আসার ট্রেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা থেকে যাতে বড় সংখ্যায় কর্মী, সমর্থক আনা যায় সেই কারণেই এই ট্রেনের ব্যবস্থা। বিজেপির অন্দরে এই ট্রেনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘শুভেন্দু এক্সপ্রেস’।
তবে শুধু শুভেন্দু নন, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের লোকসভা এলাকা বালুরঘাট থেকেও একটি ট্রেন আসবে। আবার সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষও ট্রেন পাচ্ছেন। সেই ট্রেনটি ঝাড়গ্রাম থেকে ছেড়ে মেদিনীপুর হয়ে সাঁতরাগাছি আসবে। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, তাতে সোমবার বিকেল ও সন্ধ্যাতেই বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে ‘নবান্ন অভিযান এক্সপ্রেস’ ছাড়বে। ওই তিনটি ট্রেনেই মালদহ থেকে যাতে কর্মীদের তোলা যায় সেই ব্যবস্থাও থাকছে। সেগুলি মঙ্গলবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছবে। এই ট্রেনে যে যাত্রীরা আসবেন তাঁরা কলেজ স্ট্রিট থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেবেন। সেই মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন দিলীপ।
অন্য দিকে, ঝাড়গ্রাম থেকে এবং দিঘা থেকে আসা ট্রেন দু’টি সাঁতরাগাছি স্টেশনে আসবে। সেই ট্রেনে আগত কর্মীরা সাঁতরাগাছি বাস স্ট্যান্ড থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেবেন। ওই মিছিলটির নেতৃত্বে থাকবেন শুভেন্দু। আরও দু’টি ট্রেন পুরুলিয়া এবং রামপুরহাট থেকে ছেড়ে আসবে হাওড়ায়। এই দু’টি ট্রেনে আসা কর্মীরা হাওড়া ময়দান থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেবেন। সেই মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন সুকান্ত।
ওই ট্রেন ছাড়াও লোকাল ট্রেনে যাঁরা আসবেন তাঁদের সাঁতরাগাছি, হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশনে নামতে বলেছে বিজেপি। সকলেই কাছাকাছির মিছিলগুলিতে অংশ নেবেন। গোটা পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে চালাতে সোমবার থেকেই কন্ট্রোল রুম খুলছে রাজ্য বিজেপি। হেল্পলাইন নম্বরও দিয়ে দেওয়া হবে কর্মীদের। সোমবার সারারাত এবং মঙ্গলবার কর্মসূচি শেষে কর্মীরা নিজের নিজের এলাকায় পৌঁছে যাওয়া পর্যন্ত সক্রিয় থাকবে সেই কন্ট্রোল রুম।
রাজ্য বিজেপি সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী-সমর্থক আনার উপরে। এর মধ্যে আবার শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের উপরে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাসেরও ব্যবস্থা করার পরেও তাই শেষ মুহূর্তে দিঘা থেকে একটি ট্রেন ভাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় দল। রবিবারেই নন্দীগ্রামে সমাবেশ করেছেন শুভেন্দু। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানকার কর্মীদেরও দিঘা থেকে ট্রেন ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই ট্রেনটি ছাড়বে মঙ্গলবার সকালে।
মোট সাতটি ট্রেনের জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হচ্ছে, সে কথা মানলেও কত টাকা রেলকে দেওয়া হচ্ছে তা জানাতে চাননি রাজ্য বিজেপির কোনও নেতাই। যদিও ইতিমধ্যেই নবান্ন অভিযান কর্মসূচির খরচ নিয়ে কটাক্ষ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। এর জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘ট্রেন ভাড়ার জন্য খরচ হচ্ছে এটা তো ঠিক। আর সেটা হচ্ছে দলের নীতি মেনেই। অন্য দলের কর্মীরা বিনাভাড়ায় বৈধ যাত্রীদের উপর অত্যাচার করে আসেন। আমরা সেই সংস্কৃতির বদল চাইছি। সেই কারণেই ট্রেন ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের ক্ষতি করে কোনও কাজ করতে চায় না বিজেপি।’’ প্রস্তুতিপর্ব শেষ হয়ে গেলেও রাজ্য বিজেপিকে এখন ভাবাচ্ছে আবহাওয়া। বৃষ্টির ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে কতটা জমায়েত করা যাবে সেটা নিয়ে অবশ্য কিছুটা চিন্তা রয়েছে রাজ্য নেতাদের। তবে জমায়েত আশানুরূপ হবে বলেই দাবি করছেন সুকান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy