কলকাতা শহর জুড়ে একাধিক বহুতল হেলে পড়ার ঘটনার প্রতিবাদে পুরসভার সামনে সভা করে বিধানসভা উত্তাল করার হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে পুর-প্রতিনিধিদের লুকিয়ে রাখা টাকা ‘পাতাল ফুঁড়ে বার’ করে আনার হুঙ্কারও শোনা গেল তাঁর গলায়। তৃণমূল কংগ্রেস যদিও পাল্টা কুম্ভের ঘটনা স্মরণ করিয়ে বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছে।
কলকাতা পুরসভার সামনে শুক্রবার সভা করতে চেয়েছিল বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলা। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না-দেওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। আদালতের নির্দেশে শর্ত মেনে এ দিন সন্ধ্যার সভায় বিরোধী দলনেতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ, বিজেপির দুই পুর-প্রতিনিধি, বর্ষীয়ান নেতা তাপস রায় প্রমুখ। সভায় শুভেন্দুর অভিযোগ, বেআইনি নির্মাণে মদত দিয়ে তৃণমূল নেতারা কোটি কোটি টাকা তুলছেন। তাঁর দাবি, “সব জায়গায় অবৈধ সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। আর রয়েছে নব্য প্রোমোটাররা। তাঁরাই ভোটের সময়ে ভোট লুট করে। পাঁচ হাজার জলাশয় বুজিয়ে বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। যে পুর-প্রতিনিধিরা পয়সা খেয়েছেন, অর্পিতা (মুখোপাধ্যায়), হামিদদের চেয়েও বেশি পয়সা রয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে মাটি ফুঁড়ে হলেও সেই টাকা উদ্ধার হবে!” বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, “আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে অধিবেশনে মেয়রের গ্রেফতারি এবং মুখ্যমন্ত্রীর জবাবদিহির দাবিতে বিধানসভা উত্তাল করে তুলব।’’ শুভেন্দু আরও দাবি করেছেন, “যাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের পুনর্বাসন দিয়ে তার পরে যেন বাড়ি ভাঙা হয়।” শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে জড়িত অসাধু প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করতে হবে, এই দাবি নিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতা পুরসভা ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘কুম্ভের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকারের গাফিলতি সামনে এসে গিয়েছে। তীর্থ করতে গিয়ে এ রাজ্যেরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নিয়ে আলোচনার মধ্যে দিয়ে এই আন্দোলন শুরু করুন শুভেন্দু!’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)