সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে বামপন্থীদের পুনরুত্থানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে সেই কারণেই বিজেপি শিবির বামেদের ‘তৃণমূলের সঙ্গী’ এবং তৃণমূল আবার ‘রাম-বাম জোটে’র কথা বলে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছে বলে দাবি করল সিপিএম। তাদের মতে, বামেদের স্বাধীন পরিসর দিতে চায় না বলেই কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দল ওই কৌশল নিয়েছে। কিন্তু বিজেপির সাম্প্রদায়িক নীতি এবং তৃণমূলের দুর্নীতি ও অপশাসনের বিরুদ্ধে বামেদের লড়াই এর ফলে থেমে যাবে না বলেও সিপিএম নেতৃত্বের ঘোষণা।
পটনায় অ-বিজেপি দলগুলির মহা-বৈঠকের পরেই বাংলায় বিজেপি প্রচার শুরু করছে, পঞ্চায়েতে বাম ও কংগ্রেসের নিচু তলার কর্মীরা যখন শাসক দলের হাতে মার খাচ্ছেন, সেই সময়ে ওই তিন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অন্য রাজ্যে বসে ‘সেটিং’ করছেন! আবার পঞ্চায়েতের প্রচারে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন, কেন্দ্রে মহাজোট হবে। কিন্তু রাজ্যে বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের ‘মহাঘোঁট’ তিনি ভেঙে দেবেন। এই প্রেক্ষিতেই বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘পটনার বৈঠক দেখিয়ে এক দল প্রচার করছে যে, তৃণমূলের সঙ্গে বামেদের জোট হয়ে গিয়েছে! আর এক দল রাম-বাম জোট বলে বিজেপির মিছিলে লাল ঝান্ডা খুঁজছে! রাজনীতিতে বামপন্থীদের কোনও স্বাধীন পরিসর দিতে চাইছে না বিজেপি এবং তৃণমূল।’’
সেলিমের দাবি, বাংলার মানুষ তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা হচ্ছেন। সেই জন্যই বামপন্থীদের পুনরুত্থান ঘটছে এবং দুই শাসক দল ‘ভয়’ পাচ্ছে। সুষ্ঠু ভাবে মানুষ ভোট দিতে পারলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের পুনরুত্থানের ছবি দেখা যাবে বলেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দাবি। বিজেপি এবং তৃণমূল অবশ্য তাদের প্রচার থেকে সরেনি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাম ও কংগ্রেসের লড়াইকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ এবং বিজেপির লড়াইকেই ‘আসল’ বলে দাবি করেছেন। আবার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ-সহ শাসক দলের নেতাদের দাবি, গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে যে ভাবে বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের, কোথাও কংগ্রেসের প্রার্থীর একত্র প্রচার দেখা যাচ্ছে, তাতেই তিন বিরোধী দলের ‘সমঝোতা’ পরিষ্কার!
লোকসভা নির্বাচনে দেশে কোনও বিরোধী ফ্রন্ট গড়ে উঠছে না বলে আগেই ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। প্রেস ক্লাবে এ দিন সেলিমও বলেছেন, ‘পটনায় বিরোধী দলগুলির বৈঠক হয়েছে। এর পরে শিমলাতেও হবে। কিন্তু পটনায় কোনও মহাজোট বা ফ্রন্টের কথা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে রাজ্যে বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী বিজেপির ফ্যাসিবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে, জনজীবনের দুর্দশা নিয়ে লড়াই হবে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে, ভবিষ্যতেও তা-ই হবে। এ রাজ্যে নবান্নের দুর্নীতি, দুষ্কৃতীরাজ থেকে ৫৬ ইঞ্চি এসে মানুষকে বাঁচাবে না!’’ রাজ্যভিত্তিক পরিস্থিতি অনুযায়ী আসন সমঝোতার কৌশল এবং অভিন্ন কোনও রাজনৈতিক ফ্রন্ট না করার সিদ্ধান্ত গত বছর কান্নুরে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসেই হয়েছিল বলে সেলিম স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy