ভাঙচুর: নাটাবাড়ির বলরামপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলার পরে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে শুক্রবার নিজের বিধানসভা এলাকায় ঘুরেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তার পর সেই রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। শুক্রবার রাতেই নাটাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুলের অভিযোগ ওঠে। শনিবার সকালে হামলা হয় বলরামপুর-১ ও ২ গ্রাম পঞায়েত এলাকায় থাকা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। সব ক’টি এলাকাই রবীন্দ্রনাথের বিধানসভার মধ্যে পড়ে। বলরামপুরের ঘটনায় পুলিশ এলাকায় পৌঁছলে তাদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের দাবি, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁরা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন। সেই কর্মসূচি বানচাল করতেই বিজেপি হামলা চালাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দলীয় কার্যালয়কে আমরা ধর্মস্থান মনে করি। বলরামপুর এবং নাটাবাড়ি এলাকায় আমাদের তিনটি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে লুটপাট করে বিজেপি।’’ তিনি সাফ বলেন, ‘‘আমরা বিজেপিকে ঘৃণা করি।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘বলরামপুরে পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে। তার পরে যদি পুলিশ লাঠিচার্জ করে থাকে, তা হলে ঠিক করেছে। আরও অনেক কিছুই করা উচিত ছিল পুলিশের।’’
নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির পর্যবেক্ষক পুষ্পেন সরকার পাল্টা বলেন, ‘‘নাটাবাড়ি এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় কেউ ভেঙেছে বলে শুনেছি। ওদের পাশে তো লোক নেই। পরিকল্পনা করে তৃণমূল নিজের দলীয় কার্যালয় নিজেরাই ভাঙছে।’’ বলরামপুর নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে আমাদের মণ্ডল সভাপতি হিতাংশু বর্মণের বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জোট বেঁধে শনিবার প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। তারা সাধারণ জনগণের ওপর লাঠিচার্জ করে। মিথ্যে মামলায় আমাদের পাঁচ কর্মীকে আটকও করেছে।’’
শুক্রবার রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজের বিধানসভার চিলাখানা এলাকায় গিয়েছিলেন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি পালন করতে। এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজও সারেন। রাতেই নাটাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা হয়। ঘটনাস্থলে যায় তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অভিযোগ শনিবার একপ্রকার বন্ধের চেহারা নয় নাটাবাড়ি বাজার এলাকা।
শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ হামলা চলে বলরামপুর ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কোথাও বাড়ির দেওয়াল ভেঙে দেওয়া হয়েছে, কোথাও টিভি, চেয়ার, দরজা-জানলা ভেঙে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে অফিসের বাইরে। দুই জায়গাতেই পুলিশ এবং র্যাফ গিয়েছে। আতঙ্কে স্থানীয় মানুষ ঘর থেকে বার হননি এ দিন। এলাকায় দোকানপাটও বেশির ভাগই বন্ধ ছিল।
বিজেপির অভিযোগ, শুক্রবার রাতে ওই এলাকায় বিজেপির মণ্ডল সভাপতির বাড়িতে দু’টি বোমা ছোড়া হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয় মানুষ এ দিন সকালে মিছিল বার করে। সেই মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং মিথ্যে মামলায় বিজেপির পাঁচ জন কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে।
তুফানগঞ্জ পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার বলরামপুরের ঘটনায় চার জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে নাটাবাড়ি ও বলরামপুরের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তাদের দাবি, কোথাও লাঠিচার্জ করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy