ফাইল ছবি
কিছু দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভামঞ্চ থেকে বাংলা ভাগের দাবি তুলেছিলেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ। উত্তরবঙ্গে কী ধরনের ‘কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ’ প্রয়োজন, তা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব এ বারে দলের বিধায়ক-সাংসদদের কাছ থেকে লিখিত ভাবে মতামত চাইলেন। একই সঙ্গে বিমল গুরুং, অনন্ত মহারাজ এবং জঙ্গি নেতা জীবন সিংহের কাছ থেকেও বিজেপি একই মতামত চেয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রশ্ন উঠেছে, এর ফলে কি গুরুং, অনন্ত মহারাজ এবং জঙ্গি নেতা জীবন সিংহকে নিজের দলের বিধায়ক-সাংসদদের সঙ্গে একই পঙ্ক্তিতে বসিয়ে দিলেন না শীর্ষ নেতৃত্ব? মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের মন্তব্য, “বঞ্চনার কথা বলে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করা নিয়ে জীবন সিংহের যুক্তির আমি পরিপন্থী নই। ওঁর যুক্তির সঙ্গে আমার যুক্তির বিরোধ নেই।”
রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের অবশ্য মত, এই ভাবে বাংলা ভাগের প্রসঙ্গটি জিইয়ে রাখতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির উত্তরবঙ্গের কয়েক জন নেতাও একই কথা বলছেন। তাঁদের ব্যাখ্যা, দু’বছর পরে যেখানে লোকসভা ভোট, সেখানে উত্তরে নিজেদের পুরনো ফল ধরে রাখতে গেলে ‘উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত’ এবং ‘বঙ্গভঙ্গ’ ভাবনাগুলি চাগিয়ে রাখতেই হবে। তাই জন বার্লাকে যেমন ভিডিয়ো বার্তার মাধ্যমে সমর্থন করেন জীবন সিংহ, সেই ভাবে জীবনের ‘যুক্তিকে’ নীতিগত ভাবে সমর্থন করেন জয়ন্ত রায়। যদিও জীবনের সঙ্গে একসঙ্গে নামউল্লেখ করলে অনন্ত মহারাজের ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে, তবু বিজেপি এ ক্ষেত্রে এই দু’জনকেও এক পঙ্ক্তিতে রেখেছে।
কী জানতে চেয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব? দল সূত্রের খবর, রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, নাকি বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন অঞ্চল— তাঁরা কোনটা চাইছেন, সেটাই জানতে চেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের দাবি, বিজেপির বেশিরভাগ সাংসদ-বিধায়ক এবং জেলা সভাপতিরা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পক্ষে মত দিয়েছেন। জয়ন্ত রায় বলেন, “উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করা, বা কেন্দ্রশাসিতও হতে পারে। আমাদের মত আমরা যথাস্থানে জানিয়েছি।”
ঘটনাচক্রে এ দিনই আলিপুরদুয়ারের কর্মিসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী বার্তা দিয়েছেন, ‘‘রক্ত দেব, কিন্তু বাংলাকে ভাগ হতে দেব না।’’ তৃণমূলের একটি সূত্রের মতে, উত্তরবঙ্গের ৫৪ জন বিধায়কের মধ্যে বিজেপির দিকে এখন রয়েছেন অর্ধেক (২৭ জন) বিধায়ক। অর্থাৎ বাকি অর্ধেক বিজেপির বিরুদ্ধে। তাই তাঁরা যে মত নিচ্ছেন, তাতে উত্তরবঙ্গের সংখ্যাগরিষ্ঠের মত প্রতিফলিত হচ্ছে না।
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত, অবহেলিত। যে বা যারা এই বঞ্চনা অবং অবহেলা ঘোচানোর দাবিতে আন্দোলন করবে, তাঁদের সঙ্গে আছি।” জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়াগোপ বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে ফের বাংলা ভাগ প্রসঙ্গ তুলে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু এ দিন বলে দিয়েছেন, বঙ্গভঙ্গ তিনি ঠেকাবেন।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy