Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্যপালকে অভিযোগ জানালেন সুকান্ত, তার পরেই রাজভবনে রাজীব

বিজেপির প্রতিনিধি দল রাজভবন থেকে চলে যাওয়ার পরেই সেখানে যান নতুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে, এ নিয়ে কোনও পক্ষই কিছু জানাননি।

Rajiv Sinha

শনিবার রাজভবনে বিজেপির প্রতিনিধি দল। পরে গিয়েছিলেন রাজীব সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৩ ১৭:১৫
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্বেই রাজ্যে অশান্তি হচ্ছে। ভোট যত এগিয়ে আসবে, সেই ‘সন্ত্রাসের মাত্রা’ আরও বাড়বে। শনিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে এমন অভিযোগই করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের শাসকদলের পাশাপাশি সুকান্তের নিশানায় ছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার রাজীব সিংহ। ঘটনাচক্রে, সুকান্ত রাজভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পরই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রাজীব। তবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে তাঁর কী বিষয়ে কথা হয়েছে তা জানা যায়নি। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দায়িত্ব পাওয়ার পর রাজ্যপালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সারতেই গিয়েছিলেন নতুন কমিশনার।

গত বুধবার রাজভবন থেকে কমিশনার হিসাবে রাজীবের নামে সিলমোহর দেয় রাজভবন। দায়িত্ব পাওয়ার এক দিনের মধ্যেই নতুন কমিশনার রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবারের ওই ঘোষণার পর শুক্রবার থেকে মনোনয়ন পর্ব শুরু হয়। মনোনয়ন পর্বের শুরুতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির অভিযোগ আসতে থাকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলা বিরোধীদের সেই সব অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দিয়েছে শাসকদল। সেই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে শনিবার দুপুরে রাজভবনে এসে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন সুকান্ত। তৃণমূল এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই ভোট ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য যে আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন ছিল তা করা হয়নি। রাজীববাবুর আগে যিনি কমিশনার ছিলেন, তিনি কোনও আলোচনা করেছিলেন কি না জানা নেই। তাঁর আমলের ফাইলগুলিও রাজীববাবু দেখেছেন কি না সন্দেহ!’’

সুকান্তের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রশাসন প্রস্তুত ছিল না। এমনকি, বিডিও অফিসগুলিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ। সুকান্তের কথায়, ‘‘বিডিও অফিসগুলিও প্রস্তুত ছিল না। যে কাগজপত্র বিডিও অফিস থেকে পাওয়ার কথা, সে সব কাগজ আমাদের লোকেরা জোগাড় করে তার পর মনোনয়ন জমা দিয়েছে।’’

সুকান্তের দাবি, রাজ্যপালকে তিনি এই সব অভিযোগের কথা জানিয়েছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘কয়েকটি বিষয়ে আলাদা করে রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। শুক্রবার রাতে এক জন কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছেন মুর্শিদাবাদে। কে কোন দল করেন, এখানে সেটা বিচার্য নয়। আমাদের এক জন সহ-নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। বিডিও অফিসে মনোনয়ন হচ্ছে, অথচ কোথাও পুলিশ নেই। এখনই যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে কয়েক হাজার বুথে নিরাপত্তা দেওয়া রাজ্য পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়।’’ রাজ্যপালের কাছে সুকান্ত দাবি করে এসেছেন, ভোট প্রক্রিয়া থেকে সিভিক পুলিশ থেকে শুরু করে অস্থায়ী কর্মচারীদের বিরত রাখতে হবে। একই সঙ্গে ভোটের দিন সব বুথে এবং গণনার দিন গণনাকেন্দ্রে সিসিটিভি রাখতে হবে।

সুকান্ত রাজভবন থেকে বেরিয়ে এসে জানিয়েছেন, সব অভিযোগ শুনে রাজ্যপাল তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতির দাবি, রাজ্যপাল তাঁকে জানিয়েছেন, সবটা নিয়ে তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রয়োজনে রাজ্যপাল কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও, এমনটাই দাবি সুকান্তের।

সুকান্ত বেরিয়ে যেতেই রাজভবনে এসেছিলেন রাজীব। কিছু ক্ষণ তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে রাজীব প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। রাজভবনও এ নিয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE