কেমন হবে সাক্ষাৎ-পর্ব! কৌতূহল গেরুয়া শিবিরে। ফাইল চিত্র
মঙ্গলবার জেপি নড্ডা আসছেন কলকাতায়। থাকবেন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। আর এই সময়েই দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক বসতে পারেন তিনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নড্ডার সফরে যা কর্মসূচি রয়েছে তাতে যেমন দিলীপের থাকার কথা, তেমনই হোটেলে আলাদা করে বৈঠক হতে পারে সর্বভারতীয় সভাপতি ও সহ-সভাপতির মধ্যে। সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে ঠাসা কর্মসূচিতে ভরা নড্ডার সফরের কখন সেই বৈঠক হবে, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে মুখবন্ধ রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চিঠি দেওয়ার পরে মঙ্গলবার রাতেই প্রথম বার নড্ডার মুখোমুখি হতে পারেন দিলীপ। দিল্লিরই নির্দেশে এখন সিকিম সফরে থাকা দিলীপ জানিয়েছেন, মঙ্গলবারই তিনি কলকাতায় ফিরে আসছেন। নড্ডার সফর শেষ হলে ফের তাঁর দায়িত্বে থাকা অন্য রাজ্যে যাবেন।
বিভিন্ন সময়ে নানা মন্তব্যের কারণে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অনেক ধমক খেয়েছেন দিলীপ। সম্প্রতি সুকান্তর অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরেও দিলীপের সঙ্গে কথা বলেন নড্ডা। সেই সময় নড্ডাকে সত্যিটা বোঝাতে পেরেছিলেন বলেই দাবি করেন দিলীপ। তবে এখন পরিস্থিতি অন্য রকম। কারণ, এ বার দিলীপের বিরুদ্ধে দলবিরোধী বক্তব্যের অভিযোগ ওঠার পরে নড্ডা নিজে না কথা বলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহকে চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দেন। দিলীপকে দেওয়া চিঠিতে সে কথা স্পষ্ট করে বলাও ছিল। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য ছিল, বার বার কথা বলেও দিলীপের মুখবন্ধ করতে না পেরে রুষ্ট নড্ডা। সে কারণেই নিজে কথা না বলে চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এই চিঠি পাওয়ার পরে দিলীপ যে সতর্ক, তা বোঝা গিয়েছে গত কয়েক দিনে। গত মঙ্গলবার চিঠি পান দিলীপ। এর পর থেকে রাজ্য নেতৃত্বের কোনও সমালোচনা তাঁর মুখে শোনা যায়নি। এমনকি ওই চিঠি নিয়েও সে ভাবে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। মনে করা হচ্ছে, এখন থেকে কী ভাবে দিলীপ রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাল রেখে চলতে পারেন, তার পরামর্শ এই সফরের মধ্যেই দিতে পারেন নড্ডা। একই সঙ্গে রাজ্য বিজেপি কী ভাবে সংগঠন শক্তিশালী করতে দিলীপকে ব্যবহার করবে, তার পরামর্শও মিলতে পারে নড্ডার সঙ্গে বৈঠকে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় এলেও রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা ছাড়া বিশেষ কোনও কর্মসূচি নেই নড্ডার। বুধবার সকালে প্রথমে চুঁচুড়ায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত বন্দেমাতরম্ ভবনে ও পরে চন্দননগরে রাসবিহারী বসুর পৈতৃক বাড়িতে যাওয়ার কথা। ফিরে কলকাতায় জাতীয় গ্রন্থাগারে বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে থাকবেন। সেখানে বাকিদের সঙ্গে দিলীপেরও থাকার কথা। বুথ স্তরে শক্তি বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠকের শেষে নিউ টাউনের হোটেলে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে বেলুড় মঠে যাওয়ার কথা নড্ডার। কলকাতায় ফিরে সায়েন্স সিটির প্রেক্ষাগৃহে বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক। সেখানেও বিষয় বুথের শক্তি বাড়ানো। পরে কলামন্দিরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আট বছর পূর্তি নিয়ে একটি সভায় বক্তৃতা করবেন নড্ডা। বৃহস্পতিবার রাতেই দিল্লি উড়ে যাওয়ার কথা তাঁর।
মে মাসের গোড়াতেই রাজ্যে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সময়ে গোটা সফরে অমিত সঙ্গী করেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। কোনও একান্ত বৈঠকেও ডাক পাননি দিলীপ। নড্ডার সফরেও কি তেমন ছবিই দেখা যাবে, না কি সভাপতির পাশেপাশেই থাকবেন সহ-সভাপতি? প্রশ্ন গেরুয়া শিবিরের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy