বিস্তার-বাহিনী তৈরি। ছবি: সংগৃহীত।
লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফলের লক্ষ্য প্রতিটি আসন পিছু এক জন করে বিস্তারক নিয়োগ করেছিল রাজ্য বিজেপি। সেটা শুরু হয়ে যায় ছ’মাস আগেই। তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে দফায় দফায়। এ বার বিধানসভা স্তরে বিস্তারক নিয়োগ প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। ৪২ লোকসভা এবং ২৯৪ বিধানসভা আসন পিছু এক জন করে বিস্তারককে নিয়ে কলকাতায় দু’দিনের প্রশিক্ষণ শিবির হল সোম ও মঙ্গলবার। সেখানে সংগঠন শেখানোর বক্তার তালিকায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যেমন ছিলেন তেমনই ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডেরাও। সেই সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কী ভাবে কাজ করতে হবে তা বিস্তারকদের বিস্তারিত ভাবে বোঝান আরএসএসের রাজ্য স্তরের নেতা জিষ্ণু বসু। তিনি এখন সঙ্ঘের দক্ষিণবঙ্গ প্রান্তের কার্যবাহ (সাধারণ সম্পাদক)।
গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮টি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি, কিন্তু তৃতীয় বার কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার গঠনের লক্ষ্যে বাংলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্য নেতৃত্বকে কমপক্ষে ৩৫টি আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিয়েছেন। তাই বাংলার বিস্তারক নির্বাচন থেকে প্রশিক্ষণে সরাসরি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অংশ নিচ্ছেন।
গত মে মাসে এই লক্ষ্যে প্রথম বার রাজ্যে এসেছিলেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ। তারাপীঠে হয় তিন দিনের ‘বিস্তারক প্রশিক্ষণ বর্গ’। তবে সেখানে যোগ দিয়েছিলেন গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে হেরে যাওয়া ২৪টি আসনের জন্য নিযুক্ত বিস্তারকেরা। এর পরে বাকি লোকসভা আসনের জন্যও বিস্তারক নিযুক্ত হয়। গত অক্টোবরে তাঁদের প্রশিক্ষণেও আসেন সন্তোষ। সে বার হয়েছিল কলকাতার বড়বাজার এলাকায়। এ বার সল্টলেকের একটি বিনোদন পার্ক ভাড়া নিয়ে হয় প্রশিক্ষণ পর্ব।
বাংলায় কী ভাবে সংগঠন বৃদ্ধি করতে হবে, সংগঠনের কাঠামো এবং বুথ স্তরে কেমন ভাবে কাজ করতে হবে তা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। এর পরেই বলেন সঙ্ঘের রাজ্য নেতা জিষ্ণু বসু। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনীতির বিষয় নিয়ে জিষ্ণু কিছু বলেননি। তবে সঙ্ঘ-সহ অন্যান্য সমমনোভাবাপন্ন সংগঠনের সঙ্গে কী ভাবে সমন্বয় রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে সে বিষয়ে তিনি দিক্নির্দেশ দেন। কেন্দ্রীয় নেতা তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল বলেন বিজেপির ইতিহাস এবং বিকাশের কাহিনি।
প্রশিক্ষণে শুভেন্দুর বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়ন ও দেশের বিকাশ। তবে এর মধ্যেই তিনি কী ভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে রাজ্য সরকার নিজেদের নামে ব্যবহার করছে তার ব্যাখ্যাও দেন। যেটা তিনি সব সময়েই অভিযোগ করে থাকেন। রাজ্যে বিজেপির অবস্থা সম্পর্কে বলেন সুকান্ত আর সব শেষে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল বাংলায় কেন বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি দরকার এবং কী কী করতে হবে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষে দিশা দেন বিস্তারকদের।
তবে অতীতের প্রশিক্ষণের সঙ্গে এই শিবিরের প্রশিক্ষণে একটি বাড়তি বিষয় ছিল সমাজমাধ্যম ব্যবহার। এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন তুলনায় অল্পবয়সি বিজেপি নেতা জয় মল্লিক। তিনি এখন রাজ্য বিজেপির আইটি সেলের প্রধান। কী ভাবে সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে, কী ভাবে এই মাধ্যমে তৃণমূল-সহ অন্যান্য দলের প্রচারকে প্রতিহত করতে হবে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। একই সঙ্গে কী ভাবে সমাজমাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষিত রাখতে হবে তা-ও বলেন। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টিও ছিল তাঁর প্রশিক্ষণের অঙ্গ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy