দিলীপ ঘোষ (বাঁ দিকে)। লকেট চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বাংলার ৪২ জন প্রার্থীকেই, নিজেদের লোকসভা কেন্দ্রে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিল বিজেপি। জয়ী হোন বা পরাজিত, ওই প্রার্থীরা যে কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়েছিলেন, সেখানে যেতে হবে তাঁদের। নিজেদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট পরবর্তী ‘হিংসায় আক্রান্ত’-দের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষনেতৃত্ব। থাকতে হবে দলীয় কর্মীদের পাশে। এই নির্দেশ থেকে ছাড় পেয়েছেন দু’জন প্রার্থী— সুকান্ত মজুমদার এবং শান্তনু ঠাকুর। তাঁরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন। সোমবার দু’জনেই দিল্লি যাবেন বলে এই ছাড়। বিজেপির দাবি, এক মাত্র বাংলাতেই ভোটের পরে ‘হিংসা’ ছড়িয়েছে। এখন এই ‘হিংসাকেই হাতিয়ার’ করতে চেয়ে সক্রিয় বিজেপি।
শনিবার সল্টলেকে বিজেপির দফতরে বৈঠকে বসে বিজেপির কোর কমিটি। সেখানে হারের কারণ এবং ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ নিয়ে আলোচনা হয়। সেই বৈঠকেই নেতৃত্বের নির্দেশ, নিজেদের কেন্দ্রে যেতে হবে ৪২ জন লোকসভা প্রার্থীকে। তাঁদের মধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের দ্রুত পৌঁছতে হবে নিজের লড়াই করা কেন্দ্রে। সেখানে পৌঁছে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তৈরি করতে হবে ‘আক্রান্ত, ঘরছাড়া’দের তালিকা। সেই তালিকা পাঠাতে হবে শীর্ষনেতাদের। কর্মীদের মনোবল বাড়ানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এই নির্দেশের পরে শনিবার রাতেই পুরুলিয়া চলে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। তিনি ওই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন।
নেতৃত্বের নির্দেশ পেয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ওই কেন্দ্রে হারের পর প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন দিলীপ। নেতৃত্বের দিকে ঠারেঠোরে আঙুল তুলেছিলেন। এ দিকে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি কর্মীদের একাংশ আবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, ভোটের পর দিলীপ সেখানে যাননি বলে। ‘হিংসা’ পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেননি বলে দাবি করেছেন তাঁরা। মনে করা হচ্ছে সমালোচনা থেকে বাঁচতেই এই সিদ্ধান্ত। রবিবার তড়িঘড়ি সেখানে সেখানে রওনা দিয়েছেন দিলীপ। দিলীপ প্রথমে যাবেন বর্ধমানে বিজেপির দলীয় দফতরে। এর পর তাঁর যাওয়ার কথা দুর্গাপুরে বিজেপির দফতরে। সেখানে বসেই তিনি কথা বলবেন ‘ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘরছাড়া এবং আক্রান্তদের’ সঙ্গে।
দিলীপের মতো নিজের কেন্দ্র হুগলির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। মালদহ উত্তরের সদ্য নির্বাচিত সাংসদ খগেন মুর্মু যাবেন চাঁচোল, হরিশ্চন্দ্রপুরে। দু’জায়গায় বিজয় মিছিল করবেন তিনি। তার পর কথা বলবেন ‘আক্রান্ত’-দের সঙ্গে। তবে নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত থেকে ছাড় পেয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি গত কয়েক দিন নিজের কেন্দ্র মেদিনীপুরে ছিলেন। রাজ্যে ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের দেখাশোনার দায়িত্ব তাঁর উপর রয়েছে। ওই দল মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে থাকবেন। ‘ঘরছাড়া, আক্রান্তদের’ সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের সঙ্গে ডায়মন্ড হারবার, সন্দেশখালি, বাসন্তী যাওয়ার কথা অগ্নিমিত্রার।
বিজেপির ৪২ জন প্রার্থীর পাশাপাশি বিভিন্ন মোর্চার নেতাদেরও ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’য় বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে বিজেপির সাতটি মোর্চা রয়েছে। মহিলা, যুব, কিষাণ, সংখ্যালঘু, তফশিলি জাতি, জনজাতি মোর্চার নেতাদেরও যেতে বলা হয়েছে জেলায় জেলায়। মহিলা মোর্চার নেতা ফাল্গুনি পাত্র যাচ্ছেন বারুইপুর। সুকান্ত এবং শান্তনু সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন। তাই তাঁদের নিজের কেন্দ্রে আপাতত যেতে হচ্ছে না। তবে তার আগে রবিবার বারুইপুর এবং ক্যানিংয়ে যাচ্ছেন সুকান্ত। সেখানে ভোট পরবর্তী ‘হিংসায় আক্রান্ত’-দের সঙ্গে কথা বলবেন বালুরঘাটের সাংসদ। শান্তনু রবিবার থাকবেন বনগাঁয়। সেখানে প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের জন্মোৎসব রয়েছে। বড়মা বীণাপাণি দেবীর স্বামী তিনি। প্রমথরঞ্জনের জন্মোৎসবে শামিল হচ্ছেন তিনি। সোমবার যাবেন দিল্লি।
এ দিকে রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্যে আসছে বিজেপির প্রতিনিধি দল। প্রথমে তারা যাবে মাহেশ্বরী ভবনে। সেখানে ‘ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত এবং ঘরছাড়া’-দের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বিজেপির উদ্যোগে। সেখানে ‘আক্রান্ত’-দের সঙ্গে কথা বলবেন প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। সোমবার সকালে প্রতিনিধি দল যাচ্ছে কোচবিহারে। সেখানে তারা কথা বলবে ‘হিংসায় আক্রান্ত’দের সঙ্গে। তার পর রাতে ফিরে আসবে কলকাতায়। পরের দিন, মঙ্গলবার যাবে সন্দেশখালি, বাসন্তী, ডায়মন্ড হারবার। সেখানে ‘আক্রান্ত’-দের সঙ্গে কথা বলবেন সদস্যেরা। এর পর ফিরে যাবেন দিল্লিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy