বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্যে করোনার প্রকোপ নেই বলে দাবি করলেন দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর আরও অভিযোগ, বিজেপি বিরোধী রাজ্যে পরিকল্পনা করে করোনা বাড়ানো হচ্ছে। বিরোধী তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস—তিন পক্ষই অবশ্য দিলীপের এই মন্তব্যকে ‘প্রলাপ’ বলে কটাক্ষ করেছে।
করোনা পরিস্থিতির জন্য পশ্চিবঙ্গে আসন্ন পুরভোট অন্তত এক মাস পিছনোর দাবি তুলেছে বিজেপি। সেই সূত্রেই পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গে শনিবার কলকাতায় দলের রাজ্য দফতরে দিলীপ বলেন, ‘‘বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্যে করোনার প্রকোপ নেই। বিধানসভা ভোট সেই সব রাজ্যে হচ্ছে। যতগুলি রাজ্যে করোনা বাড়ছে, সব বিজেপি বিরোধী শাসিত রাজ্য। আমার মনে হয়, বিরোধীরা বুঝতে পেরে গিয়েছে, বিজেপির সঙ্গে পারবে না, হারবে। তাই ভোট স্থগিত করার জন্য নিজেদের রাজ্যে করোনা বাড়াচ্ছে। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে হোক, আর চক্রান্ত করে হোক, বিজেপি শাসিত রাজ্যে করোনা বাড়াতে পারা যাচ্ছে না। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীরা যোগ্যতার সঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণ করেছেন।’’
দিলীপের এই দাবি নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই সব মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজনীতিক থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক—অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী হারে উদ্বেগের জায়গায় থাকা রাজ্যের তালিকায় ছ’নম্বরে রয়েছে কর্নাটক এবং আট নম্বরে রয়েছে গুজরাত। দু’টিই বিজেপি শাসিত রাজ্য।
উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, গোয়া, মণিপুর—এই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট আসন্ন। এই রাজ্যগুলির মধ্যে পঞ্জাব ছাড়া বাকি চারটিই বিজেপি শাসিত রাজ্য। রাজনীতিক এবং সাধারণ নাগরিকদের প্রশ্ন, ওই চার রাজ্যে কোনও করোনা রোগী নেই, এমন প্রমাণ দিলীপ কোথা থেকে পেলেন? তাঁদের আরও বক্তব্য, মণিপুরে করোনার প্রথম ডোজ় টিকাকরণের হার খুব কম হওয়ার জন্য সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন তাদের সতর্ক করেছে।
দিলীপ অবশ্য উত্তরপ্রদেশকে উদাহরণ হিসাবে পেশ করে বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, উত্তরপ্রদেশে এক জন রোগীও বোধ হয় হাসপাতালে নেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, দিল্লিতে করোনা বাড়ছে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বইতে এক এক দিনে ১৫ হাজার, ২০ হাজার মানুষের সংক্রমণ হচ্ছে। অথচ, পশ্চিমবঙ্গে পুরভোটের প্রক্রিয়া চলছে। আর উত্তরপ্রদেশে রোগী নেই। সেখানে ভোট বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।’’
দিলীপের এই সব মন্তব্য নিয়ে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পাগলে কী না বলে! কোনও পরিসংখ্যান যাঁরা মানেনও না, জানেনও না, যাঁরা গোমূত্র খেয়ে করোনা দূর করার চেষ্টা করেন, তাঁদের কাছ থেকে আর কী আশা করা যায়?’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘যুক্তিহীন, উল্টোপাল্টা কথা বলাই দিলীপ ঘোষের স্বভাব। আমরা মনে করি না, ওঁর দাবি সত্য। তবে যদি ওঁর এই কথা মেনেই নিতে হয়, তা হলে সেই যুক্তিতেই পাল্টা প্রশ্ন তোলা যায়, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সরকার করোনার প্রকোপ কমিয়ে দেখানোর জন্য বা বিরোধী রাজ্যগুলিতে করোনা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কোনও চাল চেলেছে কি?’’
কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ সব অবাস্তব, অর্থহীন প্রলাপ। আমাদের মনে হয় না, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক আছে। অতিমারি মোকাবিলায় কোনও সরকার ঠিকমতো পদক্ষেপ করছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক বা আলোচনা হতে পারে। কিন্তু রোগ বাড়া বা কমার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক টানা ঠিক নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy