বেসরকারি স্কুলের বেতন নিয়ে বিরোধীদের জবাব দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বেসরকারি স্কুলগুলির লাগামছাড়া বেতন বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যকে চাপে ফেলতে চেয়েছিল বিরোধী বিজেপি। কিন্তু দেখা গেল, নিজেদের প্রশ্নে পাল্টা চাপে পড়ে গেল তারাই। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য তাঁদের জানালেন, এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এ সংক্রান্ত পদক্ষেপের জন্য বিধানসভায় একটি বিল পাশ করানোও হবে। সরকারের আশা, বিরোধীরা সে সময় ওই বিলকে বিনা বাক্যব্যয়ে সমর্থন করবেন।
রাজ্যে বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধির উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে সম্প্রতিই একটি বিলে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ ব্যাপারে নজরদারির জন্য একটি শিক্ষা কমিশন গঠনের প্রস্তাব ছিল বিলে। গত ৭ অগস্ট যা অনুমোদন পায় মন্ত্রিসভার। নতুন বিলের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বেসরকারি স্কুলের বেতন কাঠামো বেঁধে দেওয়ার জন্য তৈরি হবে একটি কমিশন। ওই কমিশনই পরবর্তী কালে ঠিক করে দেবে ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে সর্বোচ্চ কত বেতন নিতে পারবে বেসরকারি স্কুলগুলি। এমনকি, বেসরকারি স্কুল নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের অভাব-অভিযোগও শুনবে ওই কমিশনই। তবে বিলটি এখনও বিধানসভায় পাশ হয়নি। বিল পাশ হলে সেই বিল রাজ্যপালের কাছে যাবে অনুমোদনের জন্য তার পর সেটি আইনে পরিণত হবে। কার্যকর হবে শিক্ষা কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া। বিরোধী দল হিসাবে বিজেপির সে কথা না জানার কথা নয়। তবু সম্ভবত রাজ্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করতেই বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ মঙ্গলবার বিধানসভায় এই প্রসঙ্গ তোলেন। তারই জবাবে শিক্ষা কমিশন গঠনের কথা জানিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘‘আশা করব, সেই বিল পাশ করার সময় বিধানসভায় আপনাদের সমর্থন আমরা পাব।’’
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ওই কমিশনের নাম হবে ‘শিক্ষা কমিশন’। তবে এই কমিশন গড়ার বিলটির নাম, ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন বিল ২০২৩’। ওই বিলে বলা হয়েছে, এই কমিশনের মাথায় থাকবেন হাই কোর্টের এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। যাঁকে নিয়োগ করবে খোদ রাজ্য সরকার। তাঁরই নেতৃত্বে ওই কমিশন কাজ করবে। তিনি ছাড়া ওই কমিশনের বাকি সদস্যদের মধ্যে থাকবেন রাজ্যের স্কুল শিক্ষা কমিশনার, রাজ্যের শিক্ষা সংক্রান্ত গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ পরিষদ এসসিইআরটির অধিকর্তা, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি, মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি এবং দু’জন শিক্ষাবিদ।
বিলে বলা হয়েছে, কমিশন বেসরকারি স্কুলগুলির নেওয়া স্কুল ফিজ় বা বেতনের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেবে। একই সঙ্গে ওই অর্থের অঙ্ক সরকারকেও জানাবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত বেতন নেওয়া নিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে অভিভাবকদের অভিযোগও শুনবে এই কমিশন। সর্বোপরি, ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের অনুমতিক্রমে প্রয়োজনে অভিযুক্ত স্কুলগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করতে পারবে কমিশন।
বেসরকারি স্কুলগুলিতে ভর্তির জন্য মাত্রাছাড়া অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। এই বিল আইনে পরিণত হলে বেসরকারি স্কুলের বেতন নিয়ে অভিভাবকদের দীর্ঘ অভিযোগের সমাধান হতে পারে বলে অনুমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy