বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। —ফাইল চিত্র ।
রাজ্যে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কবে হবে, তা ঠিক গঠিত কমিটিতে নাম রয়েছে বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গার। কিন্তু ওই সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করলেন তিনি। সম্প্রতি প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ তৈরি হয়েছে। আহ্বায়ক করা হয়েছে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কমিটিতে রয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা। রয়েছেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ-দেওয়া বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এবং মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ।
গত শুক্রবার কমিটির প্রথম বৈঠকের পর কমিটির সদস্যদের নাম জানিয়েছিলেন খোদ স্পিকার। কিন্তু মনোজের দাবি, এই ধরনের কোনও কমিটিতে তিনি আছেন, তা তাঁর জানা নেই। কারণ, কমিটিতে নাম রাখা নিয়ে মনোজের কাছ থেকে সরকার পক্ষের তরফে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।
শুক্রবারের পর সোমবার বিধানসভায় এই কমিটি আবার বৈঠকে বসছে। সেই বৈঠকে কি তিনি যোগদান করবেন? সোমবার সকালে প্রশ্ন করা হলে বিজেপির বিধায়ক মনোজ বলেন, ‘‘প্রথমত, কমিটিতে আমাকে রাখা নিয়েই আমার প্রশ্ন রয়েছে। তার ওপর সেই কমিটির বৈঠক। অথচ আমি কিছুই জানি না! কোনও ফোন, মেসেজ বা ইমেল মারফত কোনও বৈঠকে যোগদানের আমন্ত্রণ আসেনি। তাই বৈঠকে যোগদানের প্রশ্নই আসে না।’’
রাজ্য বিজেপি ২০ জুন দিনটি ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করে। কারণ, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভা ভোটাভুটিতে বাংলা ভাগের বিষয়টি স্থির হয়েছিল। যার ‘কৃতিত্ব’ বিজেপি রাজনৈতিক ভাবে জনসঙঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দেয়। ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পৃথক কোনও দিনকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করলে তাঁদের অবস্থান কী হবে? মনোজ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে অবশ্যই আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান রয়েছে। তাই ওই বৈঠকে ডাক পেলে আমি আমার দলের অবস্থান জেনে তা বৈঠকে জানিয়ে দিতাম। যেহেতু ওই বৈঠকে আমাকে কোনও ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তাই এই প্রশ্ন তোলা এখন অমূলক।’’ সোমবার কমিটির বৈঠকে তিনি যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক।
গত ২০ জুন রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তা নিয়ে নবান্নের সঙ্গে তাঁর সংঘাত বাধে। কারণ, ওই দিনটিকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ মানতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে ফোনে অনুরোধ জানিয়ে এবং পরে চিঠি লিখে রাজ্যপালকে ওই আয়োজন থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থেকে রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন বোস। ঘটনাচক্রে, তার পরেই সরকারের তরফে একটি কমিটি গড়া হয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ নির্ধারণ করার জন্য। সাল-তারিখ বিচার-বিশ্লেষণ করে পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস খতিয়ে দেখছে সুগতের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি। তারা ঠিক করবে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কবে হবে। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, এই তারিখ সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীকালে আলোচনা হবে বিধানসভার অধিবেশনেও। বিধানসভা সূত্রে খবর, শুক্রবারের বৈঠকে সদস্যেরা বিভিন্ন তারিখ নিয়ে তাঁদের যুক্তি পেশ করেছেন। কেউ বলেছেন, পয়লা বৈশাখকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ ঘোষণা করা হোক। কেউ আবার ২৮ মে দিনটির পক্ষে মতামত দিয়েছেন। কারণ, ওইদিন বিধানসভায় পাশ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব। আবার একাংশ ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিনটি ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ ঘোষণার পক্ষপাতী। কিন্তু কেউই বিজেপি বা রাজভবনের মতো ২০ জুন দিনটি ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালনের পক্ষে অভিমত প্রকাশ করেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy