Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Uttarkashi tunnel

উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটক দু’জন তাঁর এলাকার, মোদীর কাছে পরিবারের খরচ চাইলেন পদ্ম-বিধায়ক

প্রধানমন্ত্রীর ৭ রেসকোর্স রোডের ঠিকানায় পাঠানো চিঠিতে হুগলির পাঁশকুড়ার বিধায়কের আর্জি, সরাসরি হোক কিংবা প্রশাসনে মাধ্যমে, যে ভাবেই হোক দুই পরিবারকে অর্থ সাহায্য করা হোক!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।— ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।— ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:০৯
Share: Save:

উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া হুগলির দুই শ্রমিকের পরিবারই প্রবল অর্থকষ্টে! ওই দুই পরিবারেরর সংসার চালানোর খরচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চাইলেন বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ। প্রধানমন্ত্রীর ৭ রেসকোর্স রোডের ঠিকানায় পাঠানো চিঠিতে হুগলির পাশকুঁড়ার বিধায়কের আর্জি, সরাসরি কিংবা প্রশাসনের মাধ্যমে, যে ভাবেই হোক দুই পরিবারকে অর্থ সাহায্য করা উচিত! সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদেরও যাতে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়, সেই আর্জিও জানিয়েছেন বিমান। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। মোদীকে আক্রমণ করে তাদের বক্তব্য, ক্রিকেট বিশ্বকাপে মুখ না দেখিয়ে শুরু থেকেই সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর!

আপাতত বিশ বাঁও জলে রয়েছে সিল্কিয়ারা-বারকোট সুড়ঙ্গের উদ্ধারকাজ। সিল্কিয়ারার দিকে গর্ত থেকে ভাঙা অগার মেশিন কেটে বার করে আনার কাজ সোমবারই শেষ হয়েছে। সুড়ঙ্গের ছাদ ফুটো করে খাঁচা নামানোর পথ তৈরির কাজও জারি। কিন্তু সব ঠিকঠাক চললেও আগামী চার-পাঁচ দিনের আগে সুড়ঙ্গে আটক ৪১ শ্রমিকের উদ্ধারের আশা কার্যত নেই। সরকারি আধিকারিকদের একাংশের মত, তার চেয়েও বেশি দিন লেগে যেতে পারে। ফলে ধসের ১৬ দিন পরেও অনিশ্চিৎ আটকে পড়া শ্রমিকদের ভবিষ্যত। একমাত্র আশার কথা, ভাল আছেন বলেই পরিবারকে জানিয়েছেন শ্রমিকেরা। কিন্তু এতেও যে পরিবারগুলির উৎকণ্ঠা কমছে না, প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে তা-ই জানিয়েছেন বিমান।

বিজেপি বিধায়ক চিঠিতে লিখেছেন, উত্তরকাশীর অন্ধকূপে যে ৪১ জন শ্রমিক আটকে পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন শৌভিক পাখিরা এবং জয়দেব প্রামাণিক পাশকুঁড়ার বাসিন্দা। দু’জনেরই পরিবার দারিদ্র সীমার নীচে। শৌভিক এবং জয়দেব যা রোজগার করেন, তাতেই দুই পরিবারের সংসার চলে। এই পরিস্থিতিতে প্রবল অর্থকষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দুই পরিবার। বাচ্চাদের পড়াশোনা আর বাড়ির লোকেদের ওষুধপত্রের খরচ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে তারা। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বিমান লিখেছেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে দুই পরিবারই আপনার কাছে অর্থসাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে। যাতে তারা অন্তত খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে।’’

কিন্তু এ ব্যাপারে নিজের দলকে না জানিয়ে কেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখতে গেলেন বিজেপি বিধায়ক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলের একাংশের মত, দুই শ্রমিকের পরিবার এখন যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাতে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত স্থানীয় প্রশাসনের। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়ে তাঁকে এ ব্যাপারে জড়ানো উচিত হয়নি বিধায়কের। যদিও প্রকাশ্যে বিমানের এই পদক্ষেপের প্রশংসাই করেছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরকাশীর বিপর্যয় একটি জাতীয় বিপর্যয়। বিধায়কের বিধানসভা ক্ষেত্রে আটকে থাকা নাগরিকের পাশে দাঁড়ানো তাঁর সাংবিধানিক কর্তব্য। এই কর্তব্য পালন করে তিনি যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে থাকেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’’ বিতর্ক প্রসঙ্গে বিমানও আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ওই দুই শ্রমিক আমার বিধানসভা কেন্দ্রের নাগরিক। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য। আমি সেটাই করেছি।’’

এ ব্যাপারে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আকাশে হাত না নেড়ে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর। বিধায়কের উচিত ছিল আটকে থাকা নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য আবেদন জানানো। দল হিসেবে তৃণমূল, স্থানীয় প্রশাসন, এমনকি সাধারণ মানুষও আটকে থাকা নাগরিকদের পাশে রয়েছে। ক্রিকেট ম্যাচে মুখ দেখানোর বদলে সুড়ঙ্গের উদ্ধারকাজে হাত লাগানো উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy