Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
BJP

১৫ দিনে ২৯৪ বৈঠক, মাঠে গোটা রাজ্য নেতৃত্ব, বড় পরিকল্পনার প্রস্তুতিতে বিজেপি

শনিবার আইসিসিআর-এর সভাকক্ষে বিশেষ সাংগঠনিক পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছিল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়রা তো ছিলেনই। ছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননও। ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ গোটা রাজ্য নেতৃত্ব এবং সাংসদ-বিধায়কদের অধিকাংশই।

আগামী ১৫ দিন ময়দানে পড়ে থাকতে হবে বিজেপির রাজ্য নেতাদের। ফাইল চিত্র

আগামী ১৫ দিন ময়দানে পড়ে থাকতে হবে বিজেপির রাজ্য নেতাদের। ফাইল চিত্র

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:২৩
Share: Save:

জনসমর্থন এবং সাংগঠনিক সক্ষমতা বুঝে নিতে গোটা রাজ্য নেতৃত্বকে মাঠে নামিয়ে দিল বিজেপি। সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক, জেলা সভাপতি, সাংসদ, বিধায়ক— মাঠে নামানো হল অন্তত ৭৮জনকে। ২৬টি কমিটির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হল ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব। আগামী ১৫ দিনে যাবতীয় যোগ-বিয়োগ এবং ভাগাভাগির হিসেব কষে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই ২৬ কমিটিকে। শনিবার আইসিসিআর-এর সভাকক্ষে বিশেষ সাংগঠনিক পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছিল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়রা তো ছিলেনই। ছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননও। ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ গোটা রাজ্য নেতৃত্ব এবং সাংসদ-বিধায়কদের অধিকাংশই।

ওই বৈঠকেই ২৬টি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কমিটিতে আপাতত তিন জন করে সদস্য রয়েছেন। অধিকাংশ কমিটির হাতে দু’টি করে লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলিকে দেওয়া হয়েছে একটি করে আসন।

রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু রয়েছেন একটি কমিটির মাথায়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মহিলা মোর্চার রাজ্য স্তরের নেত্রী শিখা ভট্টাচার্য এবং উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির পর্যবেক্ষক অমিতাভ মৈত্র। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার— এই দু’টি আসনের দায়িত্ব পেয়েছেন সায়ন্তন।

আর এক সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছে ঘাটাল এবং উলুবেড়িয়া আসনের দায়িত্ব। রাজুর সঙ্গে রয়েছেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক এবং বিজেপির রাজ্য স্তরের নেতা মলয় সিংহ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ এসএস অহলুওয়ালিয়া যে কমিটির মাথায় রয়েছেন, সেটির হাতে উত্তর কলকাতা ও দক্ষিণ কলকাতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় পেয়েছেন বালুরঘাটের দায়িত্ব। বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাই তাঁদের উপরে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন:রাজশাহিতে ‘বড় ভাই’এর অস্ত্র শিবির! খোঁজ নেই জেলমুক্ত জঙ্গিদের, ভারতে বড় নাশকতার ছক?

প্রতিটি কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী ১৫ দিনে নিজেদের এলাকার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে আলাদা আলাদা বৈঠক করতে। অর্থাৎ যে সব কমিটির হাতে দু’টি করে লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলিকে আগামী ১৫ দিনে অন্তত ১৪টি করে বিধানসভা কেন্দ্রে কিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করতে হবে। যে সব কমিটির হাতে একটি করে লোকসভা কেন্দ্র, তাদের চাপ একটু কম। ১৫ দিনে সাতটি করে বৈঠকে বসতে হবে তাদের।

শনিবার আইসিসিআর-এর বৈঠক

কিন্তু তড়িঘড়ি রাজ্যের প্রত্যেকটি বিধানসভা কেন্দ্রে পৌঁছে গিয়ে বৈঠকে বসার নির্দেশ কেন? বিশদে মুখ না খুললেও সায়ন্তন বসুর কথায়, ‘‘কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দেওয়া, সরকারের নানা সাফল্যের কথা তুলে ধরা, ৩৭০ ধারা সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া এবং সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা— মূলত এই নিয়েই বৈঠকগুলো হবে।’’

আরও পড়ুন:রাজশাহিতে ‘বড় ভাই’এর অস্ত্র শিবির! খোঁজ নেই জেলমুক্ত জঙ্গিদের, ভারতে বড় নাশকতার ছক?​

কিন্তু ‘অপপ্রচারের’ জবাব দেওয়া বা সরকারের ‘সাফল্য’ প্রচার করার জন্য বৈঠক করে কী হবে? তার জন্য তো জনসভা জরুরি। বিজেপি সূত্রের খবর, এই বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। কিন্তু সে আলোচনা আসলে জনসংযোগের জন্য নয়। এই সব ইস্যুতে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে সাধারণ মানুষ কী ভাবছেন, বিজেপির পক্ষে হাওয়া কেমন, বিপক্ষেই বা কতটা, সে সবই রাজ্য নেতৃত্ব বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করবেন দ্রুত। কোন বিধানসভা কেন্দ্রে সংগঠনের হাল কেমন, কোথায় জনভিত্তি কতটা দৃঢ়, কোথায় দুর্বলতা রয়েছে— সে সবও বুঝে নেওয়া হবে এই ১৫ দিনেই। সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রস্তুতিও সেরে নেওয়া হবে সেই সঙ্গে।

বৈঠকের আলোচ্যসূচি এবং লক্ষ্য জানলেই বোঝা যাচ্ছে, আগামী ১৫ দিন প্রায় নাওয়া-খাওয়া ভুলে ময়দানে পড়ে থাকতে হবে বিজেপির রাজ্য নেতাদের, সাংসদ-বিধায়কদের। পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি আসলে এখন থেকেই শুরু করে দিতে চায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর নেওয়ার জন্য এই মুহূর্ত থেকে ঠিক কী কী করা দরকার, তারই বিশদ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট তৈরি করে নেওয়ার চেষ্টা হবে এই ১৫ দিনে।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Dilip Ghosh BJP State Meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy