Advertisement
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

বোস দরবারে সুকান্তেরা, ফের ধর্না শুরু বিজেপির

রাজভবন থেকে বেরিয়ে সুকান্ত এ দিন বলেছেন, “রাজ্যপালকে বলেছি, মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তাতে ভবিষ্যতে বাংলায় গৃহযুদ্ধ লাগবে।” তাঁর আশা, রাজ্যপাল রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যবস্থা নেবেন।

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৪ ০৮:০৭
Share: Save:

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছিলেন, তার জেরে বাংলায় গৃহযুদ্ধ লাগতে পারে, এমন আশঙ্কা করে বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর জি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে ধর্মতলায় বিজেপি যে ধর্না-অবস্থান শুরু করেছে, সেখান থেকে ফের মমতার পদত্যাগের দাবি তোলা হয়েছে। শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছে বিজেপি।

দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ বিজেপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ দিন দীর্ঘ সময় বৈঠক হয়েছে রাজ্যপাল বোসের। তার পরে সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছেছেন তিনি। একটি সূত্রের খবর, রাজ্যপালের এই দিল্লি সফর পূর্ব নির্ধারিতই ছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার কথা তাঁর। রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিতে তিনি কী রিপোর্ট দেন, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক শিবিরে।

রাজভবন থেকে বেরিয়ে সুকান্ত এ দিন বলেছেন, “রাজ্যপালকে বলেছি, মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তাতে ভবিষ্যতে বাংলায় গৃহযুদ্ধ লাগবে।” তাঁর আশা, রাজ্যপাল রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যবস্থা নেবেন। এই সূত্রেই তাঁর মন্তব্য, “আজ তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। আশা করি, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।” সেই সঙ্গেই সুকান্তের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন অসমে, ওড়িশায় অশান্তি হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহকে বুধবারই এই বিষয়ে চিঠি দিয়েছিলেন সুকান্ত। তিনি এ দিনও অভিযোগ করেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য দেশদ্রোহের শামিল। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ-বিরোধী আইনে প্রয়োগ করা উচিত!” পাশাপাশি, গত ২৭ অগস্ট ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ যে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল, তাতে পুলিশের দমনপীড়নের অভিযোগ তুলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চিঠি লিখেছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

মমতা যদিও তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কার্যত সেই সুরেই তাঁর দলের নেতা কুণাল ঘোষও সুকান্তদের উদ্দেশে বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিকৃত ব্যাখ্যা করবেন না। রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছেন যান। কিন্তু আগুন নিয়ে খেলবেন না! মুখ্যমন্ত্রী কুৎসা, চক্রান্তের বিরুদ্ধে ফোঁস করতে বলছেন।”

বিজেপি অবশ্য আর জি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে এবং ‘দাবি তুলেছে জনতা, পদ ছাড়ুন মমতা’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে এ দিন থেকে সপ্তাহভর ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে ধর্না-অবস্থান শুরু করেছে। তবে কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি সত্ত্বেও বুধবার রাতে পুলিশ তাদের মঞ্চ বাঁধতে বাধা দিয়ে ওয়াই চ্যানেলে সরে যাওয়ার জন্য চাপ দেয় বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। শেষমেশ রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ সুকান্ত পৌঁছলে ডোরিনা ক্রসিংয়েই মঞ্চ বাঁধে বিজেপি। ওই মঞ্চে এ দিন ছিলেন বিজেপি নেতা সুকান্ত, দিলীপ, রাহুল সিংহ, দেবশ্রী চৌধুরী, লকেট চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। আর জি কর-কাণ্ডে রাজনৈতিক কর্মসূচির গুরুত্বের কথা শোনা গিয়েছে দিলীপের মুখে। তিনি বলেছেন, “এমন অপরাধে, যেখানে সরকার যুক্ত, তাতে বিচার পেতে গেলে কোনও সংগঠনকে দায়িত্ব নিতে হয়। সাধারণ সমাজ ক্ষুব্ধ, তা মানুষ নেমে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা সরকার বা পুলিশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পিছিয়ে আসেন। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দায়িত্বটা আমরা নিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE