Advertisement
E-Paper

অবশেষে কাশ্মীরে নিহত সেনা জওয়ান ঝন্টু শেখের বাড়ির পথে বিজেপি নেতা শুভেন্দু, তৃণমূল বলছে ‘বিলম্বিত বোধোদয়’!

নিহত সেনা জওয়ান ঝন্টু শেখের দেহ তাঁর তেহট্টের বাড়িতে পৌঁছোনোর পরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র-সহ দলের নেতারা। সিপিএমের প্রতিনিধিদলও তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল। কিন্তু বিজেপির কেউ যাননি। তা নিয়ে তাদের কটাক্ষের মুখেও পড়তে হয়েছিল।

BJP leader Suvendu Adhikari visits the house of the jawan killed in Tehtta

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৩২
Share
Save

জম্মুর উধমপুরে নিহত সেনা কমান্ডো ঝন্টু আলি শেখকে শ্রদ্ধা জানাতে অবশেষে তাঁর বাড়ির পথে বিজেপি নেতা তথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঝন্টুর মৃত্যুর পরে নদিয়ার তেহট্টে তাঁর বাড়িতে বিজেপি নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি। কেন যায়নি, সেই প্রশ্ন তুলে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেছিল শাসক তৃণমূল থেকে শুরু করে সিপিএম এবং কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য ছিল, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়েছেন বিজেপির নেতারা। কিন্তু ঝন্টু ধর্মে মুসলমান। তাই তাঁর বাড়িতে বিজেপির কেউ যাননি। জেনেবুঝেই তাঁরা ঝন্টুর পরিবারকে এড়িয়ে গিয়েছেন।

অবশেষে মঙ্গলবার শুভেন্দু বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধিদল নিয়ে তেহট্টে গিয়েছেন। বিরোধী দলনেতার এই উদ্যোগকে ‘বিলম্বিত বোধোদয়’ বলছেন শাসক তৃণমূলের নেতারা। শাসক শিবিরের মতে, সমবেত কটাক্ষের মুখে পড়েই ‘ক্ষত মেরামত’ করতে শুভেন্দুর এই সফর। ঝন্টুর দেহ তাঁর তেহট্টের বাড়িতে পৌঁছোনোর পর অন্তিম শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে গিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র-সহ দলের নেতারা। সিপিএমের প্রতিনিধিদলও তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল। কলকাতা বিমানবন্দরে এবং তেহট্টে ঝন্টুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতারাও। তাতে ‘চাপ’ বেড়েছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের উপর। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ তথা রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছিলেন, “দলের স্থানীয় নেতৃত্ব তেহট্টে গিয়েছিলেন। খুব দ্রুত শীর্ষনেতারাও যাবেন। শহিদের কোনও ধর্ম হয় না।”

তার পরেই শুভেন্দুর সদলে তেহট্ট সফর। নিহত ঝন্টুর আত্মীয়-পরিজনেদের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি দলের তরফে আর্থিক সাহায্যও তুলে দিতে পারেন তিনি। ঝন্টু বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী ঝুমা এবং তাঁদের দুই সন্তান তনভির এবং রেহানা থাকতেন উত্তরপ্রদেশের আগরার সেনা ক্যান্টনমেন্টে। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে সেখান থেকে তাঁরা দিল্লি যান। তাঁরাও এসেছেন তেহট্টের গ্রামের বাড়িতে। তাঁদের সঙ্গেও বিরোধী দলনেতা দেখা করতে চান।

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনার পর পরই উধমপুরে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ হয়। সেখানে ছিলেন ঝন্টুও। জঙ্গিদের গুলিতে আহত হন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ঝন্টুর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝন্টুর দাদা নাজিম শেখকেও তিনি পাশে থাকার বার্তা দেন। সেই আবহে নদিয়া জেলা বিজেপির দুই নেতার কথোপকথনের অডিয়ো ভাইরাল হয়। যেখানে ঝন্টুর ধর্মীয় পরিচয় নিয়েও আলোচনা করতে শোনা যায় (যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। তার পরেই ‘চাপ’ তৈরি হয় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের উপর। শুভেন্দু নিহত জওয়ানের বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সেই চাপ খানিকটা কমবে বলেই আশা পদ্মশিবিরের। মঙ্গলবার নদিয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা তৃণমূলের প্রবীণ নেতা বাণী রায় বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলে স্লোগান দেন। আর যাঁরা দেশমাতৃকাকে রক্ষা করার জন্য প্রাণ দেন, তাঁদের ওরা সম্মান করে না। বিজেপির নদিয়ার নেতাদের যে অডিয়োটি ভাইরাল হয়েছিল, তাতে শোনা গিয়েছিল যে ওই বাড়িতে গেলে আমাদের একটাও ভোট বাড়বে না। তাই ওঁরা ঝন্টুর কফন-দফনের সময় আসেননি। অথচ রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে আমাদের সঙ্গে কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতারা এসেছিলেন। যাক, দেরিতে হলেও ওঁদের বিলম্বিত বোধোদয় হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা কী করতে যাচ্ছেন আমরা জানি না। ওঁরা যে ভেদাভেদের রাজনীতি করেন, তা দেশের মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঝন্টুকে সমাধিস্থ করার দিনে ওর সৈনিক দাদা একটি কথা বলেছিলেন, ‘আমরা সৈনিক। তাই আমাদের কোনও জাত হয় না।’ বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি বিধায়করা যদি ওঁদের বাড়ি গিয়ে এই মানবতার কথা শিখে আসতে পারেন, তা হলে ওঁদেরই মঙ্গল।’’

শুভেন্দুর সফরসঙ্গী এক বিজেপির নেতার কথায়, ‘‘আমরা কোন নিহত সেনা জওয়ানের বাড়িতে কবে যাব, তার কৈফিয়ত আমরা তৃণমূল, কংগ্রেস বা সিপিএমকে দেব না। মুর্শিদাবাদে যে সব মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, তাঁদের দিকেও আমাদের নজর দিতে হয়েছে। কারণ, সে সব মানুষের খোঁজ ওরা নেয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা ওই ঘরছাড়াদের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই সেই দায়িত্ব ঠিকঠাক ভাবে পালন করা হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্বও তাঁর। সেই কাজ ঠিকঠাক করে দিয়েই তিনি তেহট্ট যেতে চেয়েছিলেন। পরিস্থিতি-পরিবেশ বুঝেই তিনি নিহত জওয়ানের বাড়িতে যাচ্ছেন। এর সঙ্গে তৃণমূল, সিপিএম বা কংগ্রেসের মতো সঙ্কীর্ণ ভোট রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’

Pahalgam Terror Attack Kashmir Terror Attack Suvendu Adhikari

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।