(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী, শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী সম্পর্কে বেনজির কটু শব্দ ব্যবহার করে চাপে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কংগ্রেসের ‘ন্যায় যাত্রা’-য় উপস্থিত রয়েছেন রাহুল। সোমবার সেই যাত্রা বাংলা ছেড়ে বিহারে গিয়েছে। আবার আসার কথা রাজ্যে। এরই মধ্য়ে প্রকাশ্যে কটু শব্দ ব্যবহার করলেন শুভেন্দু। তার পরেই রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন থানায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। দলের নেতা তথা গান্ধী পরিবারের সদস্য সম্পর্কে এমন শব্দ ব্যবহার ‘অসম্মানজনক’ বলেই দাবি কংগ্রেসের। এই ঘটনায় শাসক তৃণমূলও নিন্দায় সরব। তৃণমূলের পক্ষে এই ধরনের শব্দ ব্যবহারকে ‘অপসংস্কৃতি’ বলে উল্লেখ করে শুভেন্দুকে আক্রমণ করা হয়েছে।
সোমবার রাহুলের ন্যায়যাত্রা প্রসঙ্গে নন্দীগ্রামে বসে সুর চড়ান শুভেন্দু। সংবাদমাধ্যমের পক্ষে রাহুলের যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন শুনেই বিরক্ত হয়ে ওঠেন শুভেন্দু। এর পরেই বলেন, ‘‘গত চার দিন ধরে প্রশ্ন করে যাচ্ছেন, রাহুল গান্ধী, রাহুল গান্ধী। কে হরিদাস পাল? একটা…।’’ এর পরেও শুভেন্দু বলেন, ‘‘স্টোভের উপর কয়লা দিয়ে সকালবেলা চা তৈরি হয়। স্টোভের উপরে কয়লা দেওয়া হয় আমি তো দেখিওনি, শুনিওনি। যার এই সেন্স, তাকে কাউন্ট কেন করেন? পশ্চিমবাংলায় তো অপ্রাসঙ্গিক পার্টি। এই পার্টির কোনও অস্তিত্ব নেই।’’ বাংলার রাজনীতিতে কটু কথার অন্ত নেই। তবে সোমবার যে শব্দটি শুভেন্দু ব্যবহার করেছেন সেটিকে ‘অশ্লীল’ বলেই ধরা হয় বাংলা ভাষায়।
রাহুলের যাত্রা নিয়ে প্রথম থেকেই রাজ্যের শাসক তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সংঘাত চলছে। সরকারি অতিথি নিবাসে রাহুলের থাকা, খাওয়া নিয়েও সংঘাত চলছে। তবে শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে রাহুল সম্পর্কে বক্তব্যে শব্দ ব্যবহার নিয়ে আক্রমণাত্মক তৃণমূল। রাহুলের পাশে দাঁড়ানোর থেকে তৃণমূলের নিশানায় বেশি শুভেন্দুই।
নন্দীগ্রামে শুভেন্দু যা বলেছেন তার ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশ করে দেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, “এটা ভাষা? রাহুল গান্ধীকে কী ভাষায় আক্রমণ করছেন গদ্দার? রাজনীতিতে এই ধরনের অসভ্যতা, অপসংস্কৃতি বন্ধ হোক। রাজ্য কংগ্রেস নেতারা বিজেপির দালালি করতে গিয়ে আর কত নীচে নামবেন যে এটাও হজম করছেন? শুভেন্দুর কুৎসিত রাজনীতি বেআব্রু হয়ে পড়ছে। এই অসুস্থ ভাষার তীব্র প্রতিবাদ করছি।’’ একা কুণাল নন, সমাজমাধ্যমে অনেকেই শুভেন্দুর ওই শব্দ ব্যবহার নিয়ে নিন্দা করেছেন। আর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সব জেলায় থানায় থানায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে বিজেপির পক্ষে কোনও নেতাই কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিজেপি আপাতত নীরব থাকলেও সোমবার সন্ধ্যায় দলের রাজ্য দফতরে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে থাকার কথা শুভেন্দুর। সেখানে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। শুভেন্দুর মন্তব্য সম্পর্কে দলের প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “শুভেন্দুর পক্ষে রাহুল গান্ধীর রাজনীতি বোঝা সম্ভব নয়। রাহুল জনতার পাশে দাঁড়িয়ে জনতার সমস্যা দেখেন। শুভেন্দু বা তাঁর দলের নেতারা একটা দূরত্ব থেকে সাধারণ মানুষকে দেখেন এবং বিচার করেন। তাই ওঁরা রাহুল গান্ধীর কেমন মূল্যায়নে কী বলল তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। রাহুল গান্ধী যে ভাবে একের পর এক কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছেন তা বিজেপির নেতারা কোনও দিন ভাবতে পারবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy