কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা সভা করতে চান শুভেন্দু অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।
এ বার কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পাল্টা সভা’ করতে চান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য বিজেপি সূত্রে তেমনই জানা যাচ্ছে সোমবার। গত শনিবার কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজের মাঠে বিশাল সভা করে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শুভেন্দুকে নিশানা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ছুড়েছিলেন চ্যালেঞ্জও। সেই আবহে কাঁথিতে শুভেন্দুর ‘পাল্টা সভা’ করার ইচ্ছাপ্রকাশ সেই লড়াইকে নতুন মাত্রা দিল।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২১ ডিসেম্বর কাঁথিতে ওই সভা করতে চান শুভেন্দু। এ নিয়ে একপ্রস্ত বৈঠকও করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি নেতারা। যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেই বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও ঘোষণা রাজ্য বিজেপির তরফে করা হয়নি। তবে শুভেন্দু কাঁথিতে অভিষেকের পাল্টা জনসভা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করায় অভিষেক-শুভেন্দু দ্বৈরথে নতুন পর্ব যোগ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সভা বাস্তবে রূপ পেলে তা দুই শিবিরের দুই যুযুধানের লড়াইকে আরও ধারালো করে তুলবে।
কেন কাঁথিতে সভা করতে চাইছেন শুভেন্দু? প্রথমত, তিনি কাঁথির বাসিন্দা। সেখানে সভা করে গত শনিবার অভিষেক শুভেন্দু-সহ গোটা অধিকারী পরিবারকে কড়া আক্রমণ করেছেন। শুভেন্দু তার জবাব দিতে চান। পাশাপাশিই, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ওই মঞ্চ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের বার্তাও দেওয়া হবে।
প্রত্যাশিত ভাবেই শনিবার অভিষেকের ঘণ্টা দেড়েকের বক্তব্যের অধিকাংশই জুড়ে ছিলেন শুভেন্দু। দুর্নীতি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার একের পর এক আক্রমণের জবাব দিয়েছিলেন অভিষেক। চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, ‘‘১৫ দিন সময় দিয়ে গেলাম! এই কলেজের মাঠে তুমি তোমার খাতা নিয়ে এসো। আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। লোকের সামনে যদি উলঙ্গ করতে না পারি, রাজনীতিতে পা রাখব না!’’ মনে করা হচ্ছে, কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজের মাঠে সেই ‘খাতা’ নিয়েই যেতে চাইছেন শুভেন্দু। পাশাপাশিই, অভিষেক যে ভাবে তাঁর বাড়ির কাছে এসে হুঁশিয়ারি দিয়ে গিয়েছেন, তাতে তার জবাব দেওয়াটাও শুভেন্দুর রাজনৈতিক কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। সাধারণত এমন ক্ষেত্রে নেতানেত্রীরা পাল্টা সভা করে জবাব দেওয়ার রীতি অনুসরণ করেন। সেই রেওয়াজ অনুযায়ীই শুভেন্দু কাঁথিতে সভা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বলে বিজেপি সূত্রের বক্তব্য।
ঘটনাচক্রে, অভিষেকের কাঁথির সভার দিনেই তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সভা করেছিলেন শুভেন্দু। সেখান থেকেও তিনি অভিষেককে দুর্নীতি প্রসঙ্গে একের পর এর আক্রমণ করেন। ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে বলেন, ‘‘২০১৪ এবং ২০১৬ সালেও এখানে ভোট হত। তার পর ভাইপোবাহিনী ভোট করতে দেয়নি। এ বার খেলা হবে!’’ তবে দৃশ্যতই শুভেন্দুর সভায় অভিষেকের সভার চেয়ে লোকসমাগম কম হয়েছিল। যদিও বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, তাঁদের লোকজনকে সভাস্থলে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছিল। সে কারণেই বিজেপির সমর্থকেরা তাঁর সভায় আসতে পারেননি।
তবে এটাও ঠিক যে, ডায়মন্ড হারবার অভিষেকের ‘দুর্গ’। সেখানে বিরোধীরা সভা করতে গেলে ‘প্রতিরোধ’ আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কাঁথি শুভেন্দুর ‘খাসতালুক’। শুধু তাঁর নয়, অধিকারী পরিবারেরই ‘কর্মভূমি’ কাঁথি। সেখানে তথাকথিত ‘বহিরাগত’ অভিষেক এসে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে গেলে তার জবাব দিতে চাওয়া শুভেন্দুর পক্ষেও যৌক্তিক হবে। শেষ পর্যন্ত ২১ ডিসেম্বর সেই সভা হলে দুই শিবিরের দুই সেনাপতির যুদ্ধ নিঃসন্দেহে আরও উচ্চকিত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy