Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Suvendu Adhikari

পার্থের বক্তব্যকে ‘দুর্বল চিত্রনাট্য’ বলে কটাক্ষ, সংলাপের স্থান-কাল নিয়েও বিস্ফোরক শুভেন্দু

দুপুরে আদালতে ঢোকার আগে শুভেন্দু অধিকারীর নাম বলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সন্ধ্যায় তার জবাব দিতে গিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা। সঙ্গে আক্রমণ তৃণমূলকেও।

BJP leader Suvendu Adhikari attacks TMC and Partha Chatterjee on recruitment scam issue

পার্থের সঙ্গে তৃণমূলকেও আক্রমণ শুভেন্দুর। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৩ ২০:৪০
Share: Save:

দুপুরে আদালতে ঢোকার মুখে শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিতে সাংবাদিক বৈঠক করলেন বিরোধী দলনেতা। সেখানে পার্থকে তো বটেই, সেই সঙ্গে তৃণমূল এবং দলের নেতা কুণাল ঘোষকেও আক্রমণ করেন শুভেন্দু। দাবি করেছেন, ‘‘খুব দুর্বল চিত্রনাট্য। এই ধরনের ড্রামা সুদীপ্ত সেনকে দিয়েও করা হয়েছিল।’’ পার্থ কী বলবেন, সেটা বুধবার আলিপুর জেলের সুপারের কেবিনে বসে ঠিক হয় বলেও দাবি শুভেন্দুর। তবে জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এই ধরনের কিছু আমার জানা নেই।’’ অন্য দিকে, সাজানো চিত্রনাট্য বলে আক্রমণের জবাবে কুণাল বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে অভিযোগ প্রমাণ করে দেখান উনি।’’

বৃহস্পতিবার আদালতে ঢোকার আগে পার্থ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপবাবু, শুভেন্দুবাবুরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা নিজের দিকে দেখুন। উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন? ২০০৯-১০-এর সিএজি রিপোর্ট পড়ুন। সমস্ত জায়গায় তদ্বির করেছেন, কারণ, আমি তাঁদেরকে বলেছি, করতে পারব না। আমি নিয়োগকর্তা নই। এ ব্যাপারে কোনও সাহায্য তো দূরের কথা আমি কোনও কাজ বেআইনি করতে পারব না। শুভেন্দু অধিকারীর ২০১১-১২ সালটা দেখুন না! দেখুন না, কী করেছিলেন তাঁরা।’’

এরই জবাব দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘খুব দুর্বল চিত্রনাট্য। এই ধরনের ড্রামা সুদীপ্ত সেনকে দিয়েও করা হয়েছিল। যেখানে সম্মানীয় বিমান বসুর সঙ্গে আমার নামও করা হয়েছিল।’’ শুভেন্দুর দাবি, ওই চিত্রনাট্য ১৮ মিনিটের ব্যবধানে যাঁরা টুইট করেছেন এবং বলেছেন তাঁরা দু’জনেই ‘জেলখাটা’। প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪২ মিনিটে কুণাল টুইট করেন, ‘‘শিক্ষায় নিয়োগ বিতর্ক: দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েক জন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি? তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি? তদন্ত হোক। কেন্দ্রীয় এজেন্সি একমুখী কাজ না করে নিরপেক্ষ কাজ করুক।’’ এর পরে দুপুর ১২টা নাগাদ আদালত চত্বরে মন্তব্য করেন পার্থ।

শুভেন্দুর দাবি, এটা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘এই প্লট তৈরি করা হয়েছে গতকাল। দেবাশিস চক্রবর্তী, যিনি প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার তাঁর দু’টি নম্বর দিচ্ছি। ৩০ মিনিট আগে যিনি টুইট করেছেন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। কারণ, বিষয়টি আদালতের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে। আর জেল সুপারকেও ধরা হোক। ওঁর দু’টি নম্বর নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসটাইম খতিয়ে দেখা হোক বিকেল ৪টে থেকে ৪টে ১৫ পর্যন্ত কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন।’’ শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘দেবাশিস চক্রবর্তীর কেবিনে এক জন মহিলা আইনজীবী ছিলেন। সেই কেবিনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও আনা হয়েছিল। বিকেল ৪টে থেকে সওয়া ৪টের মধ্যে প্রেসিডেন্সি জেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হোক।’’

এখানেই না থেমে চ্যালেঞ্জের সুরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বিধানসভার মধ্যেও বলেছিলাম। একটা ফাঁকা কাগজও যদি দেখাতে পারেন, তা হলে মেনে নেব। ২০১৬ সাল থেকে আমি বিধায়ক। তার আগে সাংসদ ছিলাম। এই সময় কালে তাঁর কাছ থেকে চক, ডাস্টার, ব্ল্যাকবোর্ড পর্যন্ত নিইনি। এই লোকটাকে আমি ঘৃণা করি। কারণ, তিনি দুশ্চরিত্র, লম্পট, দুর্নীতিপরায়ণ। আর এই সবের পিছনে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

তৃণমূলের চক্রান্ত প্রসঙ্গে শুভেন্দুকে পাল্টা আক্রমণ করে কুণাল বলেন, ‘‘সবেতেই তো চক্রান্ত দেখেন। ওঁর ক্ষমতা থাকলে চক্রান্ত প্রমাণ করে দেখান। আর বিজেপির নেতারাও তো আগে থেকে বলে দেন ইডি, সিবিআই কাকে ডাকবে। আর আমরা তো অনেক দিন ধরেই এঁদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে এসেছি। এখনও বলছি, তদন্ত ঠিকঠাক হলে সব সত্য সামনে আসবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE