নৈহাটিতে তৃণমূল কর্মী সন্তোষ যাদবকে খুনের ঘটনায় অক্ষয় গন্ড নামে এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ওই খুনের ঘটনায় এটাই প্রথম গ্রেফতার। রাস্তায় ইট দিয়ে থেঁতলে খুনের ঘটনার পরে বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ‘আক্রান্ত’ হয়েছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরাও। তাঁদের সঙ্গে রবিবার দেখা করতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ব্যারাকপুরের নবনিযুক্ত নগরপাল অজয়কুমার ঠাকুরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘প্রতিক্রিয়া’র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ঘটনায় তরজা বেধেছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে।
খুনের পরেই স্থানীয় গৌরীপুরে বিজেপির দলীয় কার্যালয় এবং কয়েকটি বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সুকান্ত গৌরীপুর যাওয়ার আগে এ দিন গোটা এলাকা কালো পতাকায় মুড়ে ফেলেছিল শাসক দল। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রচুর পুলিশও মোতায়েন ছিল। সুকান্তের সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহ, বিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র-সহ অন্যেরা। জনরোষেই বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। সেই সূত্র ধরে সুকান্তের পাল্টা বক্তব্য, “জনরোষ নয়। প্রাক্তন সিপি (অলোক রাজোরিয়া) বলেছিলেন, এটা রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত আক্রোশে খুন। তৃণমূল নেতারা অজুহাত দিয়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি এবং পার্টি অফিস তছনছ করতে ইন্ধন দিয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিকেরা শাগরেদরা আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করেছে।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “সব কিছুরই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে! তৃণমূলের হয়ে যারা গুন্ডামি করছে, আমাদের সময় এলে তাদের কাউকে ছাড়ব না।”
খুনের ঘটনার পরে রাতারাতি বদলি করা হয়েছিল রাজোরিয়াকে। যদিও নবান্ন সূত্রে ব্যাখ্যা ছিল, এটা ‘রুটিন’ বদলি। রাজোরিয়ার জায়গায় দায়িত্ব নিয়েই শনিবার রাত থেকে নৈহাটিতে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত শুরু করেন অজয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ছিল, ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার সন্তোষ। নতুন পুলিশ কমিশনারের এ দিন বক্তব্য, “সব ঘটনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হবে।” একদা ব্যারাকপুরের নগরপাল অজয়কে ওই পদে ফেরানো নিয়ে সুকান্তের বক্তব্য, “যাঁকে ফের নগরপাল করে পাঠালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর ভূমিকায় প্রশ্ন আছে। আগে ওঁর আমলেই প্রাক্তন সাংসদ অর্জুনকে খুনের চেষ্টা হয়।”
ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ সুকান্তের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে বলেন, “তৃণমূল বদলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। সুকান্তবাবুরা হয়তো খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। এখনও বলছি, সন্তোষ-খুনের মূল নায়ক অর্জুন সিংহ। আমরা ব্যারাকপুরে খুনের রাজনীতি শেষ করবই।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)