সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
এক সময়ে সাপ্তাহিক থাকলেও তৃণমূলের দলীয় মুখপত্র এখন প্রভাতী দৈনিক। মাস কয়েক আগে শাসকদল ওই মুখপত্রের ডিজিটাল সান্ধ্য সংস্করণও চালু করেছে। ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই বামেদের মুখপত্র চালু হয়। দীর্ঘ দিন ধরেই প্রভাতী দৈনিক হিসাবে প্রকাশিত হয় সিপিএমের দৈনিক প্রভাতী মুখপত্র। প্রকাশিত হয় সিপিআইয়ের মুখপত্রও। কিন্তু রাজ্য বিজেপি বহু বার চেষ্টা করেও মাসিক মুখপত্র প্রকাশ নিয়মিত করতে পারেনি। দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে বার বার সে চেষ্টা করলেও তা থমকে গিয়েছে।
সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে থেকেই সেই চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু নানা কারণে তা থমকে যায়। এ বার তা নিয়মিত করতে চাইছেন তিনি। পর পর তিন মাস ছোট আকারে প্রকাশিত হওয়ার পরে অক্টোবর মাসের মুখপত্র দলের সদস্যদের কাছে পৌঁছতে শুরু করেছে। দলের সিদ্ধান্ত, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় মুখপত্রের চেহারায় বদলের পাশাপাশি তা কর্মীদের কাছে নিয়মিত পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই এর জন্য সব জেলার সভাপতি, সাংসদ, বিধায়কদের কাছে নির্দেশও গিয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
সম্প্রতি সিপিএমের মুখপত্রের সম্পাদক বদল হয়েছে। দেবাশিস চক্রবর্তীর পরিবর্তে সে দায়িত্ব শমীক লাহিড়ির হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। একই ভাবে বিজেপিও নতুন কলেবরে মুখপত্রের সম্পাদক করেছে দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি মুখপত্রের প্রকাশকও বটে। ঘটনাচক্রে, জগন্নাথ প্রাক্তন সাংবাদিকও। কার্যকরী সম্পাদক করা হয়েছে দলের বুদ্ধিজীবী শাখার সদস্য অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নতুন করে যে দলের মুখপত্র নিয়ে ভাবা হচ্ছে তা জানিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘নানা কারণে আমরা মুখপত্র নিয়মিত করতে পারিনি এত দিন। এখন সেটা নিয়মিত দলের সদস্যেরা যাতে পান, সে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে দলের অবস্থান কী হবে সেটা যেমন জানানো হবে, তেমনই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল, রাজ্যের দুর্নীতি সবই আমরা মুখপত্রের মাধ্যমে সদস্যদের নিয়মিত জানাতে চাই। তার জন্য একটা টিমও তৈরি করা হয়েছে।’’
বিজেপির মুখপত্র প্রকাশের চেষ্টার ইতিহাস অনেক লম্বা। একটা সময় পর্যন্ত বিজেপি নেতা অধুনাপ্রয়াত বিমল রায় নিয়মিত একটি চার পাতার ট্যাবলয়েড প্রকাশ করতেন। এর শুরুটা হয় তপন শিকদার রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে। তবে দল নয়, ব্যক্তিগত উদ্যোগেই সেই পত্রিকা প্রকাশিত হত। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ভাল ফল করার পরে দলের নিজস্ব মুখপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নেন দিলীপ। চাপ ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও। সর্বভারতীয় বিজেপির মুখপত্রের সঙ্গে মিলিয়েই তার নাম রাখা হয়েছিল। সম্পাদক হন দিলীপ নিজেই। প্রকাশক ছিলেন বর্তমান রাজ্য কার্যালয় সম্পাদক প্রণয় রায়। বিরতি নিয়ে নিয়ে কয়েক মাস সেই সংখ্যা প্রকাশিত হলেও তা নিয়মিত করতে পারেননি দিলীপ। একই নামে অন্য পত্রিকা থাকায় সরকারি রেজিস্ট্রেশনও সম্ভব হয়নি।
এ বার তাই দিলীপের আমলের মুখপত্রের নামটিই সামান্য বদলে মুখপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষামূলক ভাবে জুলাই এবং সেপ্টেম্বর মাসের সংখ্যা দু’টি রাজ্য নেতাদের জন্যই শুধু মুদ্রিত হয়েছিল। অক্টোবর সংখ্যা থেকে তা সব সদস্যের জন্য করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত হল, বার্ষিক চাঁদা দিয়ে যাঁরা বিজেপির সদস্য হন, তাঁরা সংখ্যাগুলি বিনামূল্যে পাবেন। রাজ্যের সর্বত্র দলীয় সদস্যেরা যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পত্রিকা হাতে পান, তা নিশ্চিত করাই এখন দলের এবং তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy