পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছেন লকেট। —নিজস্ব চিত্র।
কোনও দিন নুন-ভাত, কোনও দিন ফ্যান-ভাতের সঙ্গে আলুসেদ্ধ। প্রায় এক মাস ধরে হুগলির জেলাসদরের চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দির স্কুলের এটাই মিড-ডে মিলের মেনু! অন্য স্কুলের পড়ুয়ারা যখন মিড-ডে মিলে ভাত-ডাল, আনাজের তরকারি এবং ডিম বা সয়াবিনের তরকারি খাচ্ছে, তখন বালিকা বাণীমন্দিরের পড়ুয়াদের পাত কার্যত খালি!
সোমবার দুপুরে ওই স্কুলের ছাত্রীরা যখন নুনমাখা ফ্যান-ভাত খেতে বসেছে, তখন আচমকা সেখানে দলের জেলা সভাপতি সুবীর নাগকে সঙ্গী করে হাজির হন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্ট্যোপাধ্যায়। মেনু দেখে তিনি চটে যান। শিক্ষিকাদের থেকে মিড-ডে মিলের রেজিস্টার চেয়ে তা খতিয়ে দেখেন। তার পরেই স্কুলের পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মিড-ডে মিলের ডিম কেনার জন্য দেওয়া ২৫ হাজার টাকা এবং ২৫৭ বস্তা চালের হিসেব নেই। ছাত্রীদের মুখের খাবার যারা কেড়ে নিয়েছে, তাদের রেয়াত করা হবে না। স্কুল পরিচালন সমিতির যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’’ ঘটনার জেরে এক শিক্ষিকা এবং বদলি হয়ে যাওয়া স্কুলের টিচার ইনচার্জকে সাসপেন্ড করে জেলা প্রশাসন।
দীর্ঘদিন ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা নেই। যিনি টিচার-ইনচার্জ ছিলেন, তিনি ২২ জুলাই অন্যত্র বদলি হয়ে যান। পদে কেউ আসেননি। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়ই ওই স্কুলের সভাপতি। মিড-ডে মিলের অব্যবস্থা নিয়ে তাঁর অভিযোগ, ‘‘কয়েকজন শিক্ষিকার জন্যই সমস্যা। নতুন টিচার ইনচার্জ হিসেবে যাঁকে ঠিক করা হয়, তাঁকে ওই শিক্ষিকারা মানতে চাইছেন না। ফলে, ব্যাঙ্কে মিড-ডে মিলের টাকা থাকলেও সই করে তোলার লোক নেই। এটা এক ধরনের অন্তর্ঘাত।’’ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগের চেষ্টা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সভাপতি। তবে, সাংসদের তোলা দুর্নীতির অভিযোগ তিনি মানেননি। গৌরীকান্তর দাবি, ‘‘মিড-ডে মিল নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত।’’ শিক্ষিকাদের দাবি, মিড-ডে মিলে অচলাবস্থা এবং স্কুলের নানা প্রশাসনিক কাজে সমস্যার কথা পরিচালন সমিতি এবং জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরকে আগেই জানানো হয়। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মিড-ডে মিল নিয়ে অসন্তোষ জানান অভিভাবকরাও। জেলা স্কুল পরিদর্শক সুব্রত সেন জানিয়েছেন, সমস্যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মিড-ডে মিলের অব্যবস্থার কথা তাঁকে জানানো হয়নি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy