শুভেন্দু অধিকারী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
দেশ জুড়ে পেগোসাস বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ তুললেন তাঁর ফোনেও আড়ি পাতা হয়। রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ‘‘মাননীয়ার প্রশাসন আমার ফোন ট্যাপ করছে। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসটাইম ছাড়া আমার কথা বলার উপায় নেই।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বিজেপি-র ছোটখাটো নেতাদের ফোনও ট্যাপ করছে রাজ্য সরকার। অন্য দিকে, এই প্রসঙ্গেই মুকুল রায়ের ফোন-ট্যাপ প্রসঙ্গ টানেন দিলীপ ঘোষ।
ফি বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল। করোনার কারণে এ বার সেই কর্মসূচি ভার্চুয়াল মাধ্যমে পালিত হয়। একই দিনে দলের মৃত কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে কর্মসূচি নয় বিজেপি। দিল্লির রাজঘাটে দলের সাংসদদের নিয়ে ধর্নায় বসেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ। কলকাতাতেও ‘গণতন্ত্র বাঁচাও, পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও’ নামে কর্মসূচি পালন করে বিজেপি। হেস্টিংসে দলীয় দফতরে মৃত বিজেপি কর্মীদের পরিবারের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু। পরে বক্তৃতায় আক্রমণ করেন রাজ্য সরকারকে।
২১ জুলাই তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলের কর্মসূচিতেই বড় প্রসঙ্গ হয়ে ওঠে ফোনে আড়ি পাতা প্রসঙ্গ। মমতা বুধবার তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘গরিব মানুষকে টাকা দেওয়ার বদলে আড়ি পাতায় টাকা খরচ করা হচ্ছে।’’ মমতা এমনটাও বলেন যে, ‘‘কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। মন্ত্রী, আমলা, বিরোধীদের নেতা, বিচারপতিদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে।’’ নিজের ফোন দেখিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমি কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। কারণ, ফোন ট্যাপ হচ্ছে। আমি তো আমার ফোনের ক্যামেরায় স্টিকিং প্লাস্টার লাগিয়ে দিয়েছি।’’
গত সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে বিজেপি-র বিক্ষোভ সমাবেশে জেলার পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু বলেছিলেন,‘‘ভাইপোর অফিস থেকে যাঁরা ফোন করেন তাঁদের প্রত্যেকের কল রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে। তাই সতর্ক হন। আপনাদের কাছে যদি রাজ্য সরকার থাকে, তবে আমাদের হাতে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’ এর পরে পুলিশ ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ না করলেও মমতা বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে অনেক শিক্ষা পেয়েছি৷ মনে রাখবেন, অনেক গদ্দার আছে যারা মুখে বড় বড় কথা বলে আবার ফোন ট্যাপিংয়ের কথাও বলছে৷ এই গদ্দারদের মানুষ একদিন রাজনৈতিক ভাবে বিদায় দেবে৷ এটা আমার বিশ্বাস৷’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ওরা মানুষের মুখ বন্ধ করে রাজনীতি করতে চায়৷ এটা আমার পছন্দ নয়৷ বিজেপি পার্টিতে গদ্দারদেরই জন্ম হয়৷ ওরা সভ্যতা জানে না৷ সংস্কৃতি জানে না৷’’
এর পাল্টা শুভেন্দু তাঁর ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ তোলেন। পাশাপাশি আক্রমণ শানিয়েছেন দিলীপও। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, তাঁর ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। এক সময় তাঁর ডানহাত মুকুল রায় যিনি আমাদের দলে এসেছিলেন, তিনি অভিযোগ করেছিলেন তাঁর ফোন ট্যাপ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন তিনি। তিনি ভাল ভাবে জানেন, ফোট ট্যাপ করার সংস্কৃতি কাদের। এই সংস্কৃতি আমাদের নয়।’’ একই সঙ্গে দিলীপের দাবি, তৃণমূলের নেতারা হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলেন না, কারণ তাঁরা প্রত্যেকে জানেন তাঁদের ফোনেও আড়ি পাতা হয়। দিলীপ আরও বলেন, ‘‘মমতা নিজেই আড়ি পাতেন। পেগোসাস কোম্পানির সফটওয়্যার ব্যবহার করেন মমতা ও তাঁর সরকার। উনি ভাল ভাবে বলতে পারবেন কার কার ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে।’’ দিল্লিতে বিজেপি সদর দফতর থেকে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় দিলীপ দাবি করেন, ফোন আড়ি পাতা নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy