Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিজেপি নেতার

কী ভাবে এই দুর্ঘটনা হল, তা নিয়ে এখনও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, চালকের ঝিমুনি এসে যাওয়ায় তিনি সম্ভবত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারেন।

মর্মান্তিক: দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

মর্মান্তিক: দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শিলিগুড়ি ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:২৭
Share: Save:

শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ জেলা সভাপতি হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে দল। এর আধঘণ্টার মধ্যে এসইউভি-তে চেপে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ির দিকে রওনা দেন বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) অভিজিৎ রায়চৌধুরী। সঙ্গে চালক অজয় শাহ ছাড়াও ছিলেন দুই সঙ্গী, প্রসেনজিৎ দে (শঙ্কু) এবং রহিত ঘোষ। রাত তিনটে নাগাদ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর কৃষ্ণনগর এবং বহরমপুরের মাঝে ভাকুড়ি মোড় এলাকায় তাঁর গাড়ি গিয়ে একটি ট্রাককে প্রবল জোরে ধাক্কা মারে। সেই দুর্ঘটনায় চালকের পাশে বসা অভিজিৎ (৩৭) গুরুতরভাবে জখম হন। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে তাঁর মৃত্যু হয়। চালক এবং পিছনে বসা অন্য দুই সঙ্গীও দুর্ঘটনায় জখম হন। তবে তাঁদের চোট মারাত্মক নয় বলেই দলীয় সূত্রে খবর।

কী ভাবে এই দুর্ঘটনা হল, তা নিয়ে এখনও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, চালকের ঝিমুনি এসে যাওয়ায় তিনি সম্ভবত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারেন। যদিও চালক ঝিমুনির কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার। আচমকা সামনে একটি ট্রাক ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যায়। এই অবস্থায় আমি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি।’’ সঙ্গী শিলিগুড়ি শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে বলেন, ‘‘অভিজিৎ সামনে বসেছিলেন। আমরা পিছনের আসনে বসে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি, গাড়ির ভিতরে ধোঁয়া। অভিজিতের মাথা আটকে ছিল গাড়ির দরজায়।’’ পুলিশ অবশ্য এলাকায় গিয়ে কোনও ট্রাকের সন্ধান পায়নি।

দল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ন’টায় রওনা দেওয়ার পরে কৃষ্ণনগরে অভিজিৎরা খাওয়া সারেন। সেখান থেকে বহরমপুর ঢোকার পথে দুর্ঘটনা ঘটে। অভিজিৎ ‘সিটবেল্ট’ বেঁধেছিলেন কিনা, ধাক্কার অভিঘাতে এয়ারব্যাগ খুলেছিল কিনা, সে সব প্রশ্নও রয়ে গিয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎও গাড়ি দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছেন। সাধারণত দলের কাজে কলকাতায় আসার দরকার হলে অভিজিৎ বিমান বা ট্রেনেই আসতেন। এ বারে দলীয় কাজ রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার বিকেলে কয়েক জনকে নিয়ে তিনি শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা রওনা দেন। শুক্রবার তিনি প্রায় গোটা দিনটাই দলীয় কার্যালয়ে কাটিয়ে রাতে ফেরার পথ ধরেন।

অভিজিতের মৃত্যুর খবরে শুনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিজিতের স্ত্রী পারমিতা। তাঁদের চার বছরের একটি শিশু কন্যা রয়েছে। বাড়িতে অভিজিতের বাবা স্বপনবাবু, দাদু সুনীলবাবুরা ঘটনা শুনে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। খবর পেয়ে সকাল থেকেই রামকৃষ্ণ রোডে অভিজিতের বাড়িতে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আসেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, কংগ্রেস জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার, সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকাররা। রাতে দেখা করতে আসেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা ও বিজেপি নেতা মুকুল রায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy