হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। — ফাইল চিত্র।
বিজেপি নেতৃত্ব ‘দয়া করে’ নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া আধার কার্ড ফের সক্রিয় করে দিয়েছেন এবং ভারতের নাগরিকত্ব পেতে বিজেপিকেই ভোট দিতে হবে বলে সমাজমাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। তাঁর লক্ষ্য যে মূলত মতুয়া তথা উদ্বাস্তু ভোট, তা-ও তিনি গোপন করেননি।
সম্প্রতি ফেসবুকে বিধায়কের নামাঙ্কিত অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট হওয়া একটি ভিডিয়োয় (আনন্দবাজার তার সত্যতা যাচাই করেনি) এই মর্মে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে মতুয়া অধ্যুষিত দক্ষিণ নদিয়ার বিজেপি বিধায়ক অসীমকে। কিছু দিন আগেই আধার কর্তৃপক্ষের তরফে বেশ কিছু জনকে চিঠিতে আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার কথা জানানো হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, চিঠির প্রাপকদের একটা বড় অংশ মতুয়া। পরে অবশ্য কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, কারও আধার নিষ্ক্রিয় করা হয়নি।
এই বিভ্রান্তির মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাঁরা পৃথক পোর্টাল খুলে ‘বিকল্প’ ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু নাগরিকত্বের বিষয়টি তাঁর এক্তিয়ারে পড়ে না জানিয়ে অসীমের দাবি, “কারা নাগরিক হবে আর কারা হবে না, এই আইন নিয়ন্ত্রণ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।” মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “আপনি পারেন না আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় থেকে সক্রিয় করে দিতে। নাগরিত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আপনার নেই। এটা একমাত্র বিজেপি পারে।”
আধার বাতিলের কথা তুলে বিধায়কের হুঁশিয়ারি, “আধার যদি ফিরিয়ে না দেওয়া হত, আপনাদের করার কিছু ছিল না। আন্দোলনে নামবেন? সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার হবেন! আপনি তো বিদেশি! ভারতবর্ষ কি হরি ঘোষের গোয়াল নাকি?” সেই সঙ্গেই তাঁর আবেদন, “একটা ভোটও যেন আর বিজেপি ছাড়া অন্য কোথাও দেবেন না। দয়াপরবশত আপনাদের আধার কার্ড খুলে দেওয়া হয়েছে।” এই ‘দয়া’র উদ্রেক করতে বনগাঁর সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর দিল্লিতে দরবার করেছেন বলেও দাবি করেছেন অসীম। যদিও শান্তনু ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে আধার বাতিলের চিঠি গিয়েছিল, তা সংশোধন করা হচ্ছে। যদিও মূলত মতুয়াদের কাছেই চিঠি গেল কেন, তার ব্যাখ্যা মেলেনি।
প্রত্যাশিত ভাবেই, বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল। অবিলম্বে অসীমের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তুলে তৃণমূলের রানাঘাট সংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “নাগরিকত্ব কারও দয়ার দান নয়। এই সব বলে ওঁরা ধর্মীয় মেরুকরণ করতে চাইছেন।” সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাসের মতে, “ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
এর আগেও একাধিক বার বিতর্কিত কথা বলে প্রচারে আসতে দেখা গিয়েছে অসীমকে। এ দিন ফোন ধরেননি। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, “বিধায়ক ঠিক কী বলেছেন তা শুনিনি। না জেনে মন্তব্য করব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy