শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল ছবি।
দলগত ভাবে বিজেপি বাংলা ভাগের পক্ষে নয়। এমনটাই জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি। বাংলা ভাগ নিয়ে বিজেপির রাজনৈতিক অবস্থান কী? জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। দলগত ভাবে অবস্থান জানিয়েও দিয়েছেন নন্দীগ্রাম বিধায়ক। ঘটনাচক্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বাংলা ভাগ নিয়ে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। বিজেপির মন্ত্রী-সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মমতা।
বাংলার বিভাজন নিয়ে বিজেপির অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টি পরিষ্কার স্ট্যান্ড। আমরা বঙ্গভঙ্গ, বাংলা ভাগ, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বা আলাদা রাজ্য এ সব চাই না। দলগত ভাবে আমি এটা বলতে পারি। আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট, হিন্দু পলায়ন রুখতে, অবিলম্বে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড় ধরে বের করতে হবে।’’ উত্তরবঙ্গের বালুরঘাট কেন্দ্র থেকে জিতে উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রকল্পগুলির অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। যা থেকেই বাংলা ভাগ সংক্রান্ত বিতর্কের সূত্রপাত। আবার গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বিহারের কাটিহার, আরারিয়া, কিষানগঞ্জের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলাকে নিয়ে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তুলে দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদ জেলার দুই বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ ও কাঞ্চন মৈত্র আবার মুর্শিদাবাদ নিয়ে নিশিকান্তের দাবির স্বপক্ষে সওয়াল করায় প্রশ্নের মুখে পড়েন শুভেন্দু।
বাংলার ভাগের কথা বাদ দিয়ে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে উত্তরবঙ্গের জন্য কী কী কাজ করবে তা-ও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার তৈরি হলে প্রথমেই উত্তরবঙ্গের বঞ্চনা এবং যুক্তিসঙ্গত দাবিগুলো আগে পূরণ করে উত্তরবঙ্গের মুখে হাসি ফোটাবে, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ-সহ নয়টি জেলায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ করবে। রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করার কাজ করে চুলের মুঠি ধরে তাদের বের করার কাজ বিজেপি করবে। প্রয়োজন হলে বিএসএফ, এনআইএ-র সঙ্গে সকলের সাহায্য নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য যৌথ ভাবে হিন্দুদের হোমল্যান্ড এই পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচানোর কাজ করবে।’’
বিধানসভায় বাংলা ভাগ নিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসুক বাংলা ভাগ করতে। দেখিয়ে দেব কী করে রুখতে হয়! ভোট চলে গেলেই ভাগাভাগি ইস্যু নিয়ে আসা হয়। এক জন বলছেন, মুর্শিদাবাদ-মালদহ ভেঙে দাও। কেউ বলছেন, অসমের তিনটি জেলাকে নিয়ে নতুন কিছু করো। কেউ আবার উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে বলছেন। চার মন্ত্রী বলেছেন উত্তরবঙ্গ ভাগের কথা। আমি ধিক্কার জানাই। আসুক বাংলা ভাগ করতে, কী করে রুখতে হয় দেখিয়ে দেব।’’
উত্তরঙ্গের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে বিরোধী দলনেতা মুখ্যমন্ত্রীকে বেশ কিছু দাবির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘৭২টি জায়গায় বিএসএফকে অবিলম্বে জমি দিতে হবে। উত্তরবঙ্গে এমস, আইআইটি গড়তে হবে। উত্তরবঙ্গের বঞ্চনা দূর করতে অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের গাজলডোবা থেকে শুরু করে, রাজাভাতখাওয়া থেকে শুরু করে, সেবক রোড থেকে শুরু করে, টাইগার হিল থেকে শুরু করে, শিলিগুড়ির উত্তরকন্যা পর্যন্ত প্রাসাদগুলো বানিয়েছেন। কিন্তু উত্তরবঙ্গের যে মহাকরণ উত্তরকন্যা সেখানে কোনও সচিব বসেন না। সেখানকার মানুষকে কলকাতায় আসতে হয়। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ এখনও পূর্ণতা পায়নি। উত্তরবঙ্গের মানুষ কলকাতা আসবেন না। সেখানেই তাদের পরিষেবা দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy