বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
দলের ২১শে জুলাইয়ের ‘ভার্চুয়াল’ সমাবেশ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক দিয়েছেন, ২০২১ সালে রাজ্যে তৃণমূলই ক্ষমতায় আসবে এবং তার পরে অনেক বড় আকারে ২১শে-র সমাবেশ হবে। বিজেপি পাল্টা দাবি করল, আগামী বছর তৃণমূল আর ক্ষমতায় ফিরবে না এবং ২১শে পথসভায় ২১ জন লোকও পাওয়া সন্দেহ!
মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘উনি আগামী বছর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এই ভাষণ দিতে পারবেন না। আগামী বছর আমরাই ওঁকে এই সভা করার অনুমতি দেব। আদালতে যেতে হবে না। তবে আগামী বছর ২১ জুলাই সভা শোনার জন্য উনি ২১ জন লোক পাবেন না! পথসভা করতে হবে।’’ বিজেপির জামানত জব্দ করার যে ডাক তৃণমূল নেত্রী দিয়েছেন, তাকে নস্যাৎ করে দিলীপবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘আমরা আমাদের স্লোগান অনুযায়ী ১৯-এ হাফ করে দিয়েছি। ২১-এ সাফ করে দেব!’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতির মতে, ‘‘দিদিমণির ভাষণে প্রমাণিত তিনি হতাশ এবং ভয় পেয়েছেন। ওঁর গোটা ভাষণ জুড়ে কেবল বিজেপি। আমরা যে কাজ করেছি এবং সফল হয়েছি, ওঁর ভাষণই তার প্রমাণ।’’
বস্তুত, অন্য দুই বিরোধী দল সিপিএম এবং কংগ্রেসও একই ভাবে বিঁধেছে তৃণমূলকে। বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নানের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দেওয়ালের লেখা হয়তো পড়তে পেরেছেন। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন ওঁকে সমর্থন করার জন্য। এ সেই বিপদে পড়া বাঘের আর্তনাদের মতো!’’ প্রশাসন ও টাকার জোরে এ রাজ্যে শাসক তৃণমূল কী ভাবে বিরোধী দল ভাঙিয়েছে এবং গণতন্ত্রের কী হাল করেছে, সেই কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মান্নান। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, ‘‘করোনা-কালে রেশনের চাল চুরি, আমপান-এর পরে ত্রাণের টাকা চুরি হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব, খাদ্যসচিবকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পরেও মিথ্যাচার করে এক দিকে বলছেন, মানুষের জন্য সরকার কাজ করেছে। আবার বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে এ রাজ্যে তাদের জমি দেওয়ার পরে পরে এখন তাদের ‘অবিশ্বাস্য পার্টি’ বলছেন! এই ধাপ্পাবাজি মানুষ ধরে ফেলেছেন!’’
আরও পড়ুন: ২১-এ ফের তৃণমূল, প্রত্যয়ী মমতা ॥ বিজেপিকে বললেন বহিরাগত
যাঁরা ‘ভুল করে’ বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসে গিয়েছেন, তাঁদের তৃণমূলের দিকে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা। প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি জমানায় দেশে গণতন্ত্র এবং অন্যান্য বিজেপি-শাসিত রাজ্যের অবস্থা নিয়েও। এ সবেরই পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দিলীপবাবুর কটাক্ষ, এখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে কারও যাওয়ার কথা দিবাস্বপ্ন! তাঁর কথায়, ‘‘মাথা খারাপ না হলে কেউ তৃণমূলে যাবে না।’’ পাশাপাশিই তাঁর অভিযোগ, যাঁরা পঞ্চায়েতে ৩৪% আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিলেন, এক ডজন মানুষকে খুন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন, তাঁরাই এখন রেশন, আমপান ক্ষতিপূরণের টাকা লুঠ করছেন। সারা জীবন বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এখন কেন দিতে হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন দিলীপবাবু।
আরও পড়ুন: বাংলা নিয়ে জরুরি বৈঠক সপ্তাহ জুড়ে, দিল্লি যাচ্ছে গোটা রাজ্য বিজেপি
‘বহিরাগত’ বিজেপিকে বাংলা ছাড়া করার ডাক দিয়ে তাদের গুজরাত শাসন করার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। সিপিএমও তাঁর সুরে বলেছে, বাংলার ভার বিজেপির হাতে যাবে না। আর দিলীপবাবুর মতে, ‘‘গুজরাত তো দিল্লি শাসন করছে! বাংলার লোকই যথেষ্ট বাংলাকে শাসন করার জন্য। আমরা গত বছর ২ কোটি ৩০ লক্ষ ভোট পেয়েছি, আর উনি ২ কোটি ৪৭ লক্ষ। তার পর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। উনি বুঝে গেছেন, মানুষ আর ভোট দেবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy