ভূপতিনগরে বিজেপির জনসভায় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি। —নিজস্ব চিত্র।
মণ্ডল ধরে ধরে রাজ্যে মোট এক হাজার সভা করার নির্দেশ এসেছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে। সে জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য আগামী বছরের লোকসভা ভোট। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, গোটা রাজ্যে তো বটেই, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্ধারিত সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ খোদ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরও।
বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩৫টি আসন জয়ের লক্ষ্যে নামছে তারা। সেই মতো জুন ও জুলাই মিলিয়ে রাজ্যে মোট এক হাজার সভা করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। সূত্রের দাবি, কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ করতে পেরেছে বঙ্গ বিজেপি। পরে এই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত করা হয়। তাতেও শেষ না হলে ফের তা বাড়ানো হয় ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু তাতেও রাজ্য বিজেপি লক্ষ্যমাত্রা থেকে ঢের পিছিয়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে সাকুল্যে সভা হয়েছে মোট ৩২৪টি। তার মধ্যে সব থেকে বেশি সভা হয়েছে উত্তরবঙ্গে, ৮৮টি। রাঢ়বঙ্গে সভা হয়েছে ৫৮টি। দলীয় সূত্রে খবর, এতে ক্ষুব্ধ দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা। বিষয়টি ইতিমধ্যে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কানেও উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির দু’টি সাংগঠনিক জেলা, কাঁথি এবং তমলুক। কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় ৩০টি আর তমলুকে ৩৫টি মণ্ডল রয়েছে। এ যাবৎ কাঁথিতে গোটা দশেক ও তমলুকে মাত্র দু’টি সভা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ মণ্ডল প্রতি একটি সভাও করা সম্ভব হয়নি।
কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পালের অবশ্য দাবি, ‘‘আমার কাছে যা তথ্য এসেছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। প্রথমে ১০০০ সভার কথা বলা হলেও পরে ৫০০ সভার সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমত, পুলিশ-প্রশাসনের অসহযোগিতা, অনুমতি না দেওয়া। দ্বিতীয়ত, প্রবল বৃষ্টিতে অনেকগুলি দিন নষ্ট হয়েছে। তৃতীয়ত, ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারে প্রথম সারির নেতারা থাকায় বক্তা পাঠানো যায়নি। তার পরেও যে সংখ্যায় সভা হয়েছে, তাতে আমি খুশি।’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি ও অসীম মিশ্রও বলেন, ‘‘বৃষ্টি কমলে সভা হবে।’’ দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক আনন্দময় অধিকারী জুড়ছেন, ‘‘হলদিয়া এবং নন্দীগ্রামের মতো বিধানসভাগুলিতে জনসভা বাকি রয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সেখানে সভা হবে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত ভোটে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে খানিক সাফল্য পেলেও জেলা পরিষদে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বিজেপি কাঁথি ও তমলুকে গড়ে প্রায় দেড় লাখ ভোটে পিছিয়ে আছে। বিজেপির অন্দরে চর্চা, ব্লকে ব্লকে আদি-নব্য দ্বন্দ্বেই সংগঠন মজবুত হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের একাংশও মনে করছেন, ব্লকে ব্লকে যে ভাবে দলীয় কোন্দল বেড়েছে, তার জেরেই মণ্ডল প্রতি সভার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির সংগঠন বলে কিছুই নেই। সিবিআই, ইডি, এনআইএ-কে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলকে হারাতে চাইছে এরা। কিন্তু তা পূর্ব মেদিনীপুর কেন, গোটা বাংলাতেই অসম্ভব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy