Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bangla Bandh on Wednesday

বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধ ডেকে দিল বিজেপি! অভিযোগ, নবান্ন অভিযানে ‘সন্ত্রাস চালিয়েছে পুলিশ’

ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানকে বাইরে থেকে সমর্থন জানানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। এ বার সরাসরি ‘ছাত্র সমাজ’-এর পাশে দাঁড়াল বঙ্গ বিজেপি।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৪৫
Share: Save:

ছাত্র সমাজের পাশে দাঁড়াতে বুধবার রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টা বন্‌ধের ডাক দিল বিজেপি। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বাংলা বন্‌‌ধের কথা ঘোষণা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জানালেন, বুধবার সকাল ছ’টা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত চলবে ‘সাধারণ ধর্মঘট’। প্রত্যাশিত ভাবেই এই বন্‌‌ধের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত। কোনও ফাঁদে পা দেবেন না। আগামিকাল পশ্চিমবঙ্গের বুকে কোনও বাংলা বন্‌‌ধ হবে না। জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে। বিজেপির ডাকা বাংলা বন্‌‌ধ ব্যর্থ করুন।’’

মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে আন্দোলনকারী ‘ছাত্র’দের বিক্ষোভে লাঠি চালায় পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস, জলকামান। এর পরেই সরাসরি ‘ছাত্র সমাজ’-এর পাশে দাঁড়িয়েছে বঙ্গ বিজেপি। ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ’ মিছিলে পুলিশের ‘দমনপীড়ন’-এর প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টা বন্‌ধ পালনের ডাক দিয়েছে তারা।

মঙ্গলবার দুপুরের সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত বলেন, ‘‘আগামী পরশু থেকে আমরা ধর্না শুরু করব। এ ছাড়াও ছাত্রসমাজকে সব রকম আইনি এবং মেডিক্যাল সাহায্য দেওয়ার জন্য আজ থেকে পুনরায় হেল্পলাইন নম্বর চালু করছি আমরা। এখানে ফোন করে আপনারা আইনি সহায়তা কিংবা পরামর্শ চাইতে পারেন। আসুন, আগামী ৩০ অগস্ট আমাদের মহিলা মোর্চার ডাকে সকল মহিলা, সকল মানুষ পথে নামুন। এই আন্দোলন বিজেপির নয়, এটা সমাজের আন্দোলন।’’

বুধবার সুকান্তের ঘোষণার পরেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘এটা ছাত্রদের আন্দোলন? না সমাজবিরোধীদের আন্দোলন? এরা ছাত্র? সবাই দেখেছে কারা ব্যারিকেড ভাঙতে গিয়েছে। উন্মত্ত জনতাকে আটকাতে যেটুকু করা দরকার সেটুকুই করেছে। পুলিশ কোনও দমনপীড়ন চালায়নি। আবার এর পর পরই বাংলা বন্‌‌ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি! ওদের মুখোশ খুলে গিয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরেও নবান্ন অভিযান নিয়ে মুখ খোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “বহু জায়গা থেকে অত্যাচারের খবর আসছে।” রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমনপীড়ন না চালানোর আর্জিও জানান তিনি। অন্যথায়, বুধবার ‘রাজ্য স্তব্ধ করে দেওয়ার’ হুঁশিয়ারিও দেন বিরোধী দলনেতা।

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। রাজ্য পুলিশের কাছে খবর ছিল, এই নবান্ন অভিযানে সামনে মহিলা এবং ছাত্রদের রেখে পিছন থেকে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হতে পারে। এমনকি, পুলিশকে প্ররোচিত করে বলপ্রয়োগে বাধ্য করা হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। এর পরেই শহর জুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই নবান্ন চত্বরে ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয় ঝালাই করা গার্ডরেল এবং কন্টেনার। কিন্তু বেলা বাড়তেই বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। সাঁতরাগাছি, হাওড়া সেতুতে ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। স্লোগান ওঠে, ‘‘দফা এক, দাবি এক, মমতার পদত্যাগ।’’ পরিস্থিতি সামাল দিতে জলকামান চালানো শুরু করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।

ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানকে বাইরে থেকে সমর্থন জানানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। সোমবার রাতে যখন নবান্ন অভিযানের আহ্বায়ক ছাত্র সমাজের চার নেতাকে গ্রেফতার করা হয়, তখনও শুভেন্দু আশ্বাস দিয়েছিলেন, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবেন তিনি। জানিয়েছিলেন, এ জন্য যা যা আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন এবং যত অর্থ খরচ হয়, সব বহন করবে তাঁর দল।


সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE