দিলীপ ঘোষ-সুকান্ত মজুমদার।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে অন্য দল থেকে নেতা, কর্মী নিতে ‘যোগদান মেলা’ নামে কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। প্রতি দিন দলে দলে যোগদানের আয়োজন দেখা গিয়েছিল জেলা থেকে কলকাতার দফতরে। কখনও হোটেল ভাড়া করেও। দিলীপ ঘোষ জমানার সেই পথে না হাঁটলেও যোগদান কর্মসূচি নিচ্ছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই কর্মসূচিকে ‘যোগদান মেলা’ নাম দিতেও নারাজ তিনি। সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা এখন যাঁদের দলে নিচ্ছি তাঁদের ভাবমূর্তি দেখেই নিচ্ছি। গায়ে কোনও রকম কালির দাগ থাকতে পারে, এমন সম্ভাবনার কাউকেই নেওয়া হবে না।’’
প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরে শাসক-বিরোধী হাওয়া তৈরি হবে বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবির। এই সুযোগে দলের সংগঠনকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। জুলাই মাসে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যোগদান কর্মসূচিও নেয় বিজেপি। জলপাইগুড়ি জেলার মাল বিধানসভা এলাকার ক্রান্তি ব্লক থেকে ফালাকাটার জটেশ্বর পঞ্চায়েত এলাকায় অনেকে বিজেপিতে যোগদান করে বলে দাবি দলের। বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি থেকে সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বেও অনেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
তবে সেই যোগদান কোনও ভাবেই দিলীপ জমানার মতো নয়। সেই সময় রাজ্য দফতর ছাড়াও বিজেপির যোগদান মেলা চলত হেস্টিংসের কার্যালয়ে। দক্ষিণ কলকাতার একটি হোটেলেও যোগদান চলে। সেই সঙ্গে ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশ থেকে মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় ‘মেগা’ যোগদান পর্ব চলে। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সকলের জন্য দরজা হাট করে খোলা। কেউ কেউ দিল্লিতে গিয়ে বিজেপির সদর দফতর বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েও গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। নেতাদের ‘ওজন’ অনুসারে কার হাত থেকে পতাকা নেবেন এবং কোথায় নেবেন তা ঠিক করতেন রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। অনেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েই আবার কেউ কেউ যোগ দেওয়ার আগেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী হয়ে যান। তাঁদের মধ্যে যাঁরা পরাজিত হন তার বড় অংশ তো বটেই জয়ীদেরও অনেকেই তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। অনেকেই বিজেপির ভরাডুবি দেখে রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছেন।
সেই সময়ে দিলীপ নাকি এমনটা চাননি বলেই দাবি করেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। তাঁরা বলেন, দলের অন্দরে দিলীপ প্রতিবাদও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে হয়। কৈলাস, মুকুল রায়দের সঙ্গে প্রতিযোগিতাতেও নেমে যান দিলীপ। কিন্তু এখন যোগদান পর্ব নতুন করে শুরু করলেও কড়া ছাঁকনি রাখতে চান সুকান্ত। দলীয় বিধায়ক, সাংসদদের এই মর্মে তিনি নির্দেশও দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা যে আসতে চাইবে তাঁকেই দলে নেব না। প্রত্যক্ষ ভাবে যাঁরা তৃণমূল করেন তাঁদের প্রায় সকলেই বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। সেই কারণে আমরা তৃণমূল নেতা তো নয়ই কর্মীদেরও নিতে চাই না। তবে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির কেউ থাকলে সেটা আলাদা প্রশ্ন।’’ দলের আগের নীতি কি তবে ভুল ছিল? সুকান্ত বলেন, ‘‘পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তখনকার পরিস্থিতি আর এখনকার সময় এক নয়। অনেক সাধারণ মানুষ তৃণমূলের উপরে বিতশ্রদ্ধ হয়ে বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন। আমরা তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy