Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
school

বিতর্ক এড়াতে স্কুলেও বায়োমেট্রিক হাজিরার আর্জি 

স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরার বিষয়টি আর শুধু প্রশ্ন, বিতর্ক বা বাগ্‌বিতণ্ডাতেই আটকে নেই। তা গড়িয়েছে শিক্ষকদের হাতাহাতি পর্যন্ত!

হাজিরা নিয়ে বারবার স্কুলে বিতণ্ডার ছবি উঠে এসেছে।

হাজিরা নিয়ে বারবার স্কুলে বিতণ্ডার ছবি উঠে এসেছে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২২ ০৬:০৭
Share: Save:

স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরার বিষয়টি আর শুধু প্রশ্ন, বিতর্ক বা বাগ্‌বিতণ্ডাতেই আটকে নেই। তা গড়িয়েছে শিক্ষকদের হাতাহাতি পর্যন্ত! এই অবস্থায় হাজিরা-বিতণ্ডা এড়াতে এ বার স্কুলগুলিতেও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থা চালু করার আবেদন জানাল শিক্ষক সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘কিছু স্কুল নিজেদের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করেছে। কিন্তু আমরা চাই, শিক্ষা দফতরের বিধিবদ্ধ নির্দেশের মাধ্যমে সব স্কুলেই বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হোক। তা হলে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা নিয়ে মাধেমধ্যে যে-বিতর্ক তৈরি হয়, তা আর হবে না।’’

কয়েক দিন আগে বীরভূমের সিউড়ির একটি স্কুলে হাজিরা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে ভূগোলের এক শিক্ষকের হাতাহাতি হয় বলে অভিযোগ। হাতাহাতি থামাতে গিয়ে স্কুলের করণিককে নাকি ঘুষি খেতে হয়! অভিযোগ, ওই ভূগোলের শিক্ষক দেরি করে আসায় তাঁকে হাজিরা খাতায় সই করতে দেননি প্রধান শিক্ষক। তা নিয়েই প্রথমে বচসা এবং পরে হাতাহাতি। চন্দনবাবু বলেন, ‘‘শুধু বীরভূমের ওই স্কুল নয়, হাজিরা নিয়ে এমন অশান্তি অনেক স্কুলেই হচ্ছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরার বন্দোবস্ত করলে এই সব বিতর্কের অবসান ঘটবে।’’

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, শিক্ষকদের উপস্থিতি সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বলা আছে, স্কুলে প্রার্থনা হবে ১০টা ৪০ মিনিটে। সেখানে শিক্ষকদের উপস্থিতি থাকতে হবে। তবে দেরিতে ঢোকার অনুমতি মিলবে ১০টা ৫০ থেকে ১১টা পাঁচ মিনিট পর্যন্ত। ১১টা পাঁচের পরে কোনও শিক্ষক হাজিরা খাতায় সই করলে সেখানে লাল কালির দাগ পড়বে। এই ভাবে তিন দিন লাল কালির দাগ পড়লে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের একটা ক্যাজ়ুয়াল লিভ কাটা যাবে।

পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্রের বক্তব্য, শিক্ষকদের হাজিরা নিয়ে শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশ অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। এক দিকে ১০টা ৫০ মিনিটে স্কুলে এসে হাজিরা খাতায় সই করে প্রার্থনায় উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক বলে জানানো হচ্ছে। আবার বলা হচ্ছে, ১০টা ৫০ থেকে ১১টা পাঁচের মধ্যেও স্কুলের হাজিরা খাতায় সই করা যাবে। এই বিভ্রান্তির জন্যও অনেক সময় বিতর্ক ছড়ায়। কৃষ্ণাংশুবাবু বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে অনেক দিন আগে থেকেই বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থা চলছে। আরও বেশ কিছু স্কুলে বায়োমেট্রিক হাজিরার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সব স্কুলে বায়োমেট্রিক বাধ্যতামূলক নয়। বাধ্যতামূলক করতে গেলে শিক্ষা দফতরের নির্দেশের দরকার। স্কুলে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করতে গেলে যে-পরিকাঠামোর প্রয়োজন, সব স্কুলে তো তা-ও নেই।’’

বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুলেই বায়োমেট্রিক হাজিরার ব্যবস্থা চালু হয়েছে বলে জানান বেসরকারি স্কুলের এক অধ্যক্ষ। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুধু শহরাঞ্চেল স্কুলে নয়, সুন্দরবন এলাকার একটি প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলে গিয়ে দেখেছিলাম, সেখানে বায়োমেট্রিক হাজিরার ব্যবস্থা আছে। বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা তো ভালই।’’ তবে বহু শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনই স্কুলে বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থা চালু করার বিপক্ষে। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘স্কুলে তো হাজিরা নিয়ে নিজস্ব নিয়মই আছে। স্কুল তো কর্পোরেট সংস্থা নয় যে, বায়োমেট্রিক চালু করতে হবে। কোনও শিক্ষক দেরিতে এলে যা নিয়ম, তা-ই করতে হবে। তিন দিন দেরিতে এলে লাল কালির দাগ ও একটা ক্যাজ়ুয়াল লিভ যাবে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক যদি সেই সব নিয়মকানুন মেনে স্কুল চালাতে না-পারেন, তা হলে সেটা তাঁর অপদার্থতা। আমরা স্কুলে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করার পক্ষপাতী নই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

school attendance Biometric
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy