Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

Biman Bose: তৃণমূলের সঙ্গে জোট! বিজেপি বিরোধী যে কোনও দলের সঙ্গে কাজ করতে রাজি, বললেন বিমান

সোমবার থেকে দিল্লি সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যেই পুরনো ‘শত্রু’ তৃণমূলের হাত ধরার ইঙ্গিত দিলেন বিমান।

লোকসভায় তৃণমূলের হাত ধরার বার্তা বিমানের।

লোকসভায় তৃণমূলের হাত ধরার বার্তা বিমানের। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২১ ১৩:০৩
Share: Save:

বিজেপি বাদে যে কোনও দলের সঙ্গেই কাজ করতে তৈরি বামফ্রন্ট। তাই ২০২৪-এ বিজেপি-কে ঠেকাতে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গেও হাত মেলাতে তাঁদের আপত্তি নেই বলে এ বার জানিয়ে দিলেন বাম ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ছাড়া অন্য যে কোনও দলের সঙ্গেই কাজ করতে প্রস্তুত আমরা।’’

রবিবার তমলুকে সিপিএম নেতা নির্মল জানার স্মরণসভা ছিল। সেখানে ২০২৪-এ বিজেপি-বিরোধী জোটের প্রসঙ্গ উঠে এলে বিমান বলেন, ‘‘একাধিক বার নয়, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এটা বহু বার ঘটেছে। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা হোক বা কচ্ছ থেকে কোহিমা, আন্দোলনের প্রশ্ন দেখা দিলে বিজেপি-বিরোধী সব শক্তির সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আমরা।’’

আসল ‘শত্রু’ চিনতে ভুল করেছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য পেয়ে, তা হয়তো কিছুটা বুঝতে পেরেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনে তার পুনরাবৃত্তি চান না সিপিএম নেতৃত্ব। যে কারণেই হয়তো এমন মন্তব্য বিমানের।

বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট করতে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২১ জুলাই ‘শহিদ’ স্মরণ সভা থেকে প্রকাশ্যে বিজেপি-কে উৎখাত করার ডাক দেন তিনি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলগুলিকে একজোট গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে বলেন।

কিন্তু মমতা যে মঞ্চ থেকে এই বার্তা দেন, তা বাম- বিরোধী মঞ্চ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সে ক্ষেত্রে কি তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাবেন বামেরা? প্রশ্নের উত্তরে বিমান বলেন, ‘‘আমি তো বলছি, বিজেপি ছাড়া যে কোনও দলের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আমরা। এর পর আর কোনও কথা আছে কি?’’

উল্লেখ্য, নীল বাড়ির লড়াইয়ে তৃণমূলের নিশানায় মূলত বিজেপি থাকলেও, বাম নেতৃত্ব তৃণমূল এবং বিজেপি-কে এক সারিতে বসিয়ে প্রচার চালিয়ে যান। তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই বোঝাতে ‘বিজেমূল’ স্লোগানও তোলেন তাঁরা। তা নিয়ে পরে আক্ষেপ করেন সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ‘বিজেমূল’ স্লোগান তোলা ভুল হয়েছিল বলে স্বীকার করেন তিনি। বস্তুত, বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলে এসেছিলেন, বাংলাতেও বামেদের বিজেপিকেই ‘পয়লা নম্বর প্রতিপক্ষ’ চিহ্নিত করে লড়াই করা উচিত এবং তৃণমূল ও বিজেপি-কে একাসনে বসানো সমীচীন নয়। ভোটের পর যা অনুধাবন করেন সিপিএম নেতৃত্ব।

অন্য দিকে, ভোট পরবর্তী পর্যায়ে অতীত সরিয়ে রেখে সিপিএম-এর উদ্দেশে ‘বন্ধুতা’র বার্তা দিতে দেখা যায় তৃণমূলকেও। শূন্য পাওয়া সিপিএম বিধানসভায় থাকলে ভাল হতো বলে মন্তব্য করেন খোদ মমতা। শুধু তাই নয়, বিধান পরিষদ গড়ার সপক্ষে সওয়াল করতে গিয়েও সিপিএম-এর কথা উঠে আসে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে। তাঁর যুক্তি ছিল, নির্বাচনে শূন্য আসন পেলেও, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য বিধান পরিষদে সিপিএম-এর থাকা প্রয়োজন।

তার পরই খোদ বিমান তৃণমূলের সঙ্গে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে জোট গড়ার ‘বার্তা’ দিলেন। যে সময় বিমান এই বার্তা দিলেন, সেটিও যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ সোমবারই দিল্লি সফরে যাচ্ছেন মমতা। সেখান থেকেই বিজেপি-বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে, যাতে কেন্দ্রীয় বাম নেতৃত্বও শামিল হতে পারেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE